Coromandel Express Accident : সিগন্য়ালিংয়ে ছিল বড়সড় এই গলদ, ৩ মাস আগেই জানিয়েছিলেন অপারেটিং ম্য়ানেজার
Coromandel Express Accident : রবিবারও দুর্ঘটনাস্থলে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। সেখানেই তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ জানা গিয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ `একটি ইলেকট্রনিক ইন্টালকিংয়ে রদবদল`। বৈষ্ণো বলেন, রেল সেফটি কমিশনার বিষয়টির তদন্ত করেছেন। সেই রিপোর্ট আসবে
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ কী? স্বজন হারানোদের হাহাকার যত কমছে দুর্ঘটনার কারণ জানতে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে ততই। রবিবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো জানিয়েছেন, ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেমে রদবদলের করণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে জানা যাচ্ছে আরও চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ইন্টারলকিং সিস্টেম-সহ সিগন্যালিংয়ে যে বড়সড় সমস্যা রয়েছে তা ৩ মাস আগেই সতর্ক করেছিলেন, রেলের দক্ষিণ পশ্চিম জোনের চিফ অপারেটিং ম্য়ানেজার।
আরও পড়ুন-লাশ সনাক্ত করাই কঠিন, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ জানালেন রেলমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেছেন, অ্য়ান্টি কলিসন ডিভিসাই থাকলে এতবড় দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। তবে রেলমন্ত্রী আজ বলেছেন, সমস্যা ওখানে নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন তা ঠিক নয়। গত ফেব্রুারি মাসে ইন্টারলকিং সিস্টেমের কথা তুলে ধরেছিলেন সেফটি ম্যানেজার। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, গত ৯ ফেব্রুারি ওই সেফটি চিফ সিগন্যাল ফেলের কথা জানান। লোকো পাইলটের তত্পারতায় দুর্ঘটনা এড়িয়ে যায় এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
রেল সফটির ওই কর্তা চিঠি লিখে জানান, গত ৮ ফেব্রুয়ারি পৌনে ছটা নাগাদ এক অদ্ভূত ঘটনা ঘটে। আপ সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস যখন ১ নম্বর লাইনে ছিল সেইসময় সিগন্যালিংয়ে কিছু সমস্যা হয়। লোকো পাইলটের তত্পরতায় দুর্ঘটনা এড়ায় ট্রেনটি। গোলমাল দেখে পয়েন্ট নম্বর ৬৫-র কাছে ট্রেন থামিয়ে দেন চালক। ট্রেনটির মেইন লাইনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পয়েন্ট দেওয়া ছিল অন্য লাইনে।
উল্লেখ্য, গতকালই রেল তার প্রাথমিক তদন্তে জানায়, শালিমার থেকে আসা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য যে সিগন্য়াল ছিল তা ছিল একেবারে সোজা। অর্থাত্ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সোজা যাওয়ার কথা। সেইভাবেই লাইন সেট থাকার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে লাইনের পয়েন্ট সেট করা ছিল পাশের লাইনের দিকে। অর্থাত্ সিগন্যাল ছিল সোজ আর পয়েন্ট সেট ছিল পাশের লাইনের দিকে। এগিয়ে গ্রিন সিগন্যাল দেখে করমণ্ডল তার গতিতে সোজাই যাচ্ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত লাইনের পয়েন্ট পাশের দিকে করা থাকায় সে বাঁদিকের মালগাড়ির লাইনে ঢুকে পড়ে। প্রবল গতিবেগে করমণ্ডল এক্সপ্রেস সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়িতে। সঙ্গে সঙ্গেই করমণ্ডলের কয়েকটি কামরা মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। তাতেই এমন ভয়ংকর ঘটনা।
সিগন্যাল এক আর লাইনের পয়েন্ট সেটিং অন্য এই দুয়ের ফাঁদে পড়ে প্রাণ গেল ওই ২৬১ জনের। এমনই কারণ আপাতত উঠে আসছে। মালগাড়িকে ধাক্কা মারার ফলেই করমণ্ডলের বগিগুলি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ছড়ি ছিটিয়ে পড়ে লাইনের উপরে। অর্থাত্ যা হয়েছে তা হিউম্যান এরর। মানুষের ভুলেই এমন ঘটনা। দুর্ঘটনার পরই এই প্রশ্নটা উঠছিল করমণ্ডল মালগাড়ির লাইে ঢুকলো কী করে? কেবিন থেকে পয়েন্ট সেটিং করার ক্ষেত্রেই এমন কাণ্ড। ট্রেনটি ব্রেক কষারও সময় পায়নি। ইঞ্জিন সহ ট্রেনের দুটি কামরা মালগাড়ির উপরে উঠে যায়।
এদিকে, রবিবারও দুর্ঘটনাস্থলে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। সেখানেই তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ জানা গিয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ 'একটি ইলেকট্রনিক ইন্টালকিংয়ে রদবদল'। বৈষ্ণো বলেন, রেল সেফটি কমিশনার বিষয়টির তদন্ত করেছেন। সেই রিপোর্ট আসবে। তবে দুর্ঘটনার কারণ জানা গিয়েছে। কারা এর জন্য দায়ী তাদেরও চিহ্নিত করা গিয়েছে। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ে রদবদল করার জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আপাতত আমাদের সব ফোকাস রেল পরিষেবা শুরু উপরেই রয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই বিরোধী শিবিরের তরফে দাবি করা হয়, অ্যান্টি কলিসন ডিভিইস যাকে 'কবচ' বলা হচ্ছে তা থাকলে এমন দুর্ঘটনা ঘটত না। গতকালই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, এমন এক গুরুত্বপূর্ণ রুটে অ্যান্টি কলিসন ডিভাইস ছিল না। রবিবার রেলমন্ত্রী সংবাদসংস্থা এএনআইকে বলেন, কবচের সঙ্গে এই দুর্ঘটনা কোনও সম্পর্ক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল যা বলেছেন তা ঠিক নয়। ইলেকট্রনিক ইন্টালকিংয়ে বদল করার জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।