জ্যোতির্ময় কর্মকার: গোরুপাচার মামলায় জেলে গিয়েছেন অনুব্রতকন্যা সুকন্যা মণ্ডল। তাঁর তিহাড় যাওয়ার দিনে জেলে তাঁকে জামা কাপড় দিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন সুকন্যার বন্ধু সুতপা পাল। এবার ইডির নজরে সুকন্য়ার সেই বন্ধু। তাঁর সম্পত্তি নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ইডি সূত্রে খবর, বোলপুরের বাদগড় মৌজায় সুতপার নামে ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০২০ সালে সুতপার নামে ৯৯১ বর্গফুটের ওই ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করা হয়। লকডাউনের আগেই সেই রেজিস্ট্রি শেষ হয়।      


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-কালো টাকা সাদা করতে ভুয়ো লোন কারসাজি অনুব্রতর, ইডির চার্জশিটে চাঞ্চল্যকর তথ্য


সোমবার গোরুপাচার মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানি চলাকালীন ও মামলায় যারা জড়িত অর্থাত্ যারা জেলে রয়েছে, এমনকি যারা জামিনে বাইরে রয়েছেন তাদের সবাইরে কোর্টে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। যারা আসতে পারবেন না তাদের ভিডিয়ো কন্ফারেন্স উপস্থিত থাকতে হয়। শুনানির সময় বিচারক ইডির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, এই মামলায় আরও তদন্ত কি বাকী রয়েছে? আরও কাউকে কি হেফাজতে নেওয়া হতে পারে? কাউকে কি গ্রেফতার করা হতে পারে? ওই কথা শুনে ইডির আইনজীবী বলেন, তদন্ত এখনই শেষ নয়। 


গ্রেফতারের আগে সুকন্যা যখনই দিল্লিতে ইডির দফতরে এসেছেন তখনই তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন সুতপা পাল। সুকন্যার গ্রেফতারির পর কান্নায় ভেঙেও পড়েন সুতপা। এবার তাঁকেই তলব করছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার  আইনজীবীর বক্তব্য স্পষ্ট, এবার তদন্ত শুধু সুকন্যা মণ্ডল নয়, তাঁর বন্ধু সুতপা পাল ও আরও অনেকের বিরুদ্ধে হতে পারে। 


গত ২৬ এপ্রিল গ্রেফতারের পর সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুতপা। সুকন্যার গ্রেফতারি নিয়ে তিনি বলেন, ওর মা মারা গিয়েছে। বাবা জেলে। ওর পাশে দাঁড়ানোর জন্য আর কেউ রইল না। কিছু তো করতেই পারব না। চিকিত্সাই  করাতে পারব না। জানা যাচ্ছে ক্যানসার আক্রান্ত সুতপা। তার খরচও দিতেন সুকন্যা।


উল্লেখ্য, জেলের যাওয়ার পর গত ৬ মে বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারেন সুকন্যা মণ্ডল। মেয়ের সঙ্গে দেখা করার আবেদন করেছিলেন অনুব্রত। অনুমতি মিলেওছিল। কিন্তু বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সময়। শনিবার বাবা-মেয়ের সেই সাক্ষাত হল। সূত্রের খবর, বহুদিন পর শেষপর্যন্ত জেলে সাক্ষাত হওয়ার পর বাবা-মেয়ে দুজনেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। কথা হয় মিনিট পনের। অনুব্রত বারবার মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন তিনি ইডির হাজিরা দিতে দিল্লি এলেন? 


এদিকে, অনুব্রতর বিরুদ্ধে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্যা গিয়ে ইডি। এবার উঠে এল কীভাবে লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে কারসাজি করে কালো টাকা সাদা করেছেন অনুব্রত। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দাবি, ভুয়ো লোন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা কালো থেকে সাদা করা হয়েছে।  এর জন্য অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রির সাহায্য নিয়েছিলেন অনুব্রত। এমনটাই দাবি ইডির। সেই অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রির অপারেটার ছিলেন মনোজ মেহনত।


অনুব্রতর বিরুদ্ধে ২০৪ পাতার চার্ডশিট দিয়েছে ইডি। সেখানে দাবি করা হচ্ছে গোরু পাচার থেকে বিপুল টাকা পেয়েছেন অনুব্রত। সেই টাকা থেকে ১০ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন এই অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রির সাহায্যে। তদন্তকারী অফিসাররা বলছেন, যদি কোনও ব্যক্তির কাছে কালো টাকা থাকে তাহলে সেই টাকা যদি সাদা করতে চান তার অনেক পন্থার মধ্যে রয়েছে এই অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রি। অনেকে একে হাওয়ালাও বলে থাকেন। এক্ষেত্রে যেটা হয় তা হল যে ব্যক্তি কালো টাকা সাদা করতে চাইছেন তিনি কাউকে নগদে টাকা দিয়ে দেন। সেই টাকা পেয়ে কোনও ব্যক্তি বা কোম্পানি তাদের অ্যাকাউন্টে তা ব্যবসায়িক লেনদেন হিসেবে দেখিয়ে দেন। পরবর্তীতে সেই টাকাটাই ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে দেখানো হয়। অনুব্রতর ক্ষেত্রে সেই অ্যাকোমোডেশন এন্ট্রি অপারেট হিসেবে কাজ করেছিলেন মনোজ মেহনত নামে এক ব্যক্তি। মনোজের বিরুদ্ধেও চার্জশিট দিয়েছে ইডি।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)