নয়া দিল্লি: বিবিসি-এর বিতর্কিত তথ্যচিত্র ইন্ডিয়াস ডটারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখল দিল্লি হাইকোর্ট।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দিল্লি হাই কোর্টেও এই তথ্যচিত্রটির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আবেদন করে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। বুধবার হাই কোর্টের মুখ্য বিচারপতি এই মামলার শুনানির নির্দেশ দিয়েছিলেন।


''আপত্তিজনক বিষয়বস্তু'' থাকার অভিযোগে ভারতের এনডিটিভি ও বিবিসি-এর জন্য নির্মিত এই তথ্যচিত্রটির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে একটি নিম্ন আদালত।


এই তথ্যচিত্রটিতে ২০১২ সালে রাজধানীতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির সাক্ষাৎকার রয়েছে।


নির্ভয়ার অন্যতম ধর্ষক ও খুনি মুকেশ সিং সাক্ষাৎকারে নির্ভয়ার উপর পাশবিক যৌন নির্যাতনের জন্য সরাসরি প্যারামেডিক্যাল ওই ছাত্রীকেই দায়ি করেছে।


মুকেশ সেই সাক্ষাৎকারে বলে '''রাত ৯টার পর যে মেয়েরা বাড়ির বাইরে বেরোয় তাদের উদ্দেশ্যই থাকে পুরুষদের আকর্ষিত করা।'' প্রসঙ্গত, যে বাসটিতে নির্ভয়ার উপর নৃশংস যৌন অত্যাচার হয়েছিল সেই বাসটির চালক ছিল এই মুকেশ।


সে জানিয়েছে ''ধর্ষিত হওয়ার সময় বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করাই উচিৎ হয়নি মেয়েটি। চুপ করে থেকে ধর্ষণ হতে দিলে আমরা ওকে মারতাম না। ধর্ষণের পর আমরা মেয়েটিকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছিলাম। ওর সঙ্গি ছেলেটিকে খানিক মারধর করি আমরা।''


মুকেশ আরও বলেছে ''কোনও ভদ্র মেয়ে রাত ৯টার পর রাস্তায় বেরয় না। ধর্ষণের জন্য ছেলেদের থেকে মেয়েরা অনেক বেশি দায়ি। ছেলে আর মেয়েরা কখনই সমান হতে পারে না। বাড়িতে থেকে গৃহস্থালীর কাজকর্ম করাটাই মেয়েদের সাজে। রাত ৯টার পর 'অশালীন' পোশাক পরে রাস্তায় বেরনো মেয়েদের কাজ নয়। মাত্র ২০% মেয়েরাই ভাল হয়।''


মুকেশের দাবি তাদের ফাঁসি হলে আখেরে খতিটা মেয়েদেরই হবে। তার মতে এরপর ধর্ষণ করে কেউ আর ধর্ষিতাকে তাদের মত বাঁচিয়ে রাখবে না।


নির্ভয়ার অন্যতম মুকেশ জানিয়েছে তারা আসলে মেয়েটি ও তাঁর সঙ্গিকে 'শিক্ষা' দিতে চাই ছিল, বোঝাতে চাইছিল রাতের বেলা তাদের মোটেও বাড়ির বাইরে বেরনো ঠিক নয়।


বাক স্বাধীনতার অধিকারের দাবিতে তিন আইনের ছাত্র দিল্লি হাইকোর্টে এই তথ্যচিত্রের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে পিটিশন দায়ের করেছিল।


নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অস্বীকার করে বৃহস্পতিবার আদালত জানিয়েছে ''বিচারকরা পৃথিবীর বাইরের মানুষ নন, এই ধরণের মিডিয়া ট্রায়াল তাঁদের মনেও অবচেতনে প্রভাব ফেলতে পারে।''


এই তথ্যচিত্রটির সমালোকদের দাবি মুকেশের মত এক ধর্ষককে নিজের বক্তব্য জানানোর এই ধরণের প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার অর্থ একই ধরণের অপরাধ প্রবণতাকে ইন্ধন জোগানো।


কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল এই তথ্যচিত্র জনসমক্ষে এলে ''এমন জনরোষ তৈরি হবে যার ফলে ব্যহত হবে আইন-শৃঙ্খলা।


তথ্যচিত্রটির নির্মাতা লেসলি উডউইন জানিয়েছেন মুকেশের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও তিহার জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েছিলেন।