নিজস্ব প্রতিবেদন: স্বামী মুসলিম হওয়ায় হিন্দুমতে স্ত্রীর শেষকৃত্যের অনুমতি দিল না মন্দির। দিল্লির মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, মুসলিম পাত্রকে বিয়ের পর আর হিন্দু নন ওই মহিলা। ফলে তাঁর শেষকৃত্য মন্দিরে করা যাবে না। মন্দির সোসাইটির সভাপতির দাবি, ওই ব্যক্তি নিজের পরিচয় লুকিয়েছিলেন। অনুমতি পাওয়ার পর নিজের পরিজনদের নিয়ে মন্দিরে নমাজ পড়লে তার দায় কে নেবে?        


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০ বছর আগে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টে কলকাতার নিবেদিতা ঘটককে বিয়ে করেছিলেন ইমতিয়াজুর রহমান। স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টে ভিনধর্মে দম্পতিরা নিজেদের ধর্ম অপরিবর্তিত রেখে বিয়ে করতে পারেন। শরীরের একাধিক অঙ্গ বিকল হওয়ার জেরে সম্প্রতি মৃত্যু হয় নিবেদিতার। হিন্দু রীতিতে দিল্লির নিগম বোধ ঘাটে তাঁর শেষকৃত্য করেন পরিজনরা। তবে শ্রাদ্ধ করতে পারেননি তাঁরা।   


রাজ্যের বাণিজ্যিক কর দফতরের সহকারী কমিশনার ইমতিয়াজুর রহমান বলেন, ''দিল্লির বাঙালি এলাকা চিত্তরঞ্জন পার্কের কালী মন্দির সোসাইটিতে স্ত্রীর শ্রাদ্ধের জন্য ১২ অগস্টের নির্ধারিত সময় নিয়েছিলাম। ৬ অগস্ট কর্তৃপক্ষকে অগ্রিম ১৩০০ টাকাও দিয়েছি। পরে বুকিং বাতিলের কথা জানায় মন্দির কর্তৃপক্ষ''।   


মন্দির সোসাইটির সভাপতি অশিতাভ ভৌমিক বলেন, ''একাধিক কারণে রহমানের অনুরোধ রাখা সম্ভব হয়নি। নিজের পরিচয় গোপন রেখে মেয়ে ইহিনি আম্বরিনের নামে স্লট বুক করেছিলেন রহমান। ওই নামটি মুসলিম বা আরবিক বলে মনে হয়নি। ওনার ধর্মীয় পরিচয় আমরা পরে জানতে পারি। যখন পূজারির সন্দেহ হওয়ায় উনি গোত্র জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু কোনও উত্তর দিতে পারেননি রহমান। কারণ মুসলিম সমাজে কোনও গোত্র হয় না।'' এরইসঙ্গে ভৌমিকবাবু বলেন, ''মুসলিমকে বিয়ে করার পর ওই মহিলা আর হিন্দু নন। তাঁকে স্বামীর পদবি নিতে হয়েছে''। হিন্দু রীতি ও ঐতিহ্যের সম্মান রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে স্পষ্ট করেছেন ভৌমিকবাবু। 


হিন্দু মতে তাঁর শেষকৃত্য যাতে করা হয়, সেটাই ছিল নিবেদিতার শেষ ইচ্ছা। তাঁর শেষ ইচ্ছা রাখবেন না? ভৌমিকবাবুর জবাব, ''কে জানে! ওই ব্যক্তির হয়তো অন্য কোনও পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁর পরিজনদের নিয়ে এসে মন্দিরে নমাজও পড়তে পারেন তিনি। তখন আমরা কী করব?''


কলকাতায় নিজের বাড়িতেই স্ত্রীর শেষকৃত্য করতে পারেন রহমানবাবু, তাঁকে তো কেউ বাধা দেয়নি। দিল্লির মন্দিরেই কেন শেষকৃত্য করতে চাইছেন তিনি? প্রশ্ন ভৌমিকবাবুর। কেন স্ত্রীর শ্রাদ্ধ বাড়িতে করছেন না? ইমতিয়াজুর রহমানের কথায়, ''ধর্ম আমাদের সম্পর্কে কোনও বাধা হয়নি। আমার স্ত্রী হিন্দু ছিলেন। আমি হিন্দু রীতি মেনে শ্রাদ্ধ করতে চেয়েছিলাম, তবে আমায় অনুমতি দেওয়া হল না''।


আরও পড়ুন- সংসদের রেকর্ড থেকে মুছে গেল প্রধানমন্ত্রীর মুখের 'আপত্তিকর শব্দ'