পিডিপি ভাঙতে গেলে বিচ্ছিন্নতাবাদীর জন্ম হবে, `দিল্লি`কে হুঙ্কার মেহবুবার
মেহবুবা এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দিল্লি যদি পিডিপি ভাঙার খেলায় হাত দেয়, তাহলে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর আস্থা হারাবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্ষমতা হারিয়ে এবার নাম না করে মোদী সরকার ও বিজেপি-র উদ্দেশে হুঙ্কার ছাড়লেন জম্মু-কাশ্মীরের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। সাংবাদিকদের সামনে এদিন মেহবুবা সতর্ক করে দেওয়ার সুরে বলেন, "পিডিপি-কে ভাঙার ক্ষেত্রে দিল্লির প্রচেষ্টার ফলে ইয়াসিন মালিক, সৈয়দ সালাউদ্দিনের মতো বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জন্ম নেবে"।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই জম্মু-কাশ্মীরে মেহবুবার পিডিপি-র হাত ছেড়ে সরকার থেকে বেরিয়ে আসে বিজেপি। সংখ্যা গরিষ্ঠতা না থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি থেকে পদত্যাগ করেন মেহবুবা মুফতি। এরপরই জল্পনা শুরু হয়, বিক্ষুব্ধ পিডিপি বিধায়কদের দল ভাঙিয়ে সরকার গড়তে পারে বিজেপি। এমন আবহেই সুর চড়ান মেহবুবা। তিনি এদিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, দিল্লি যদি পিডিপি ভাঙার খেলায় হাত দেয়, তাহলে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর আস্থা হারাবে।
এদিকে, পিডিপি বিধায়কদের দল ভাঙিয়ে নিয়ে এসে সরকার গড়ার সম্ভবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এবং জম্মু-কাশ্মীরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাম মাধব। তিনি জানান, বিজেপি রাজ্যপালের শাসনের পক্ষে এবং তারা চায় রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসুক। উল্লেখ্য, প্রায় ৩ বছর উপত্যকায় জোট বেঁধে সরকার চালিয়েছে বিজেপি ও পিডিপি। কিন্তু, বিচ্ছিন্নতাবাদী ও পাথর নিক্ষেপকারীদের বিষয়ে পিডিপি-র 'নরম অবস্থানের' অভিযোগে সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে বিজেপি। রমজান উপলক্ষে উপত্যকায় সংঘর্ষ বিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, রমজান মিটতেই ফের নিরাপত্তা বাহিনীকে পথে নামানোর সিদ্ধান্তও নেয় মোদী সরকার। বিজেপির অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের বিরোধী ছিলেন মেহবুবা। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পথে হাঁটার কথা বলেন। কিন্তু, 'দেশের অখণ্ডতা' রক্ষায় তাঁরা 'দায়বদ্ধ' বলে সরকার ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত জানায় পদ্ম শিবির।
সরকার পতনের পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরে রাজ্যপালের শাসন জারি রয়েছে। আর এর মধ্যেই পিডিপি-র অন্দরে জেহাদের সুর সামনে এসেছে। বেশ কয়েকজন নেতা বিধায়ক মেহবুবার নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, ৬ থেকে ৭ জন বিধায়ক দল ছাড়তে পারেন। ফলে, সে রাজ্যে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে। মেহবুবা মনে করছেন, এই বিদ্রহের পিছনে রয়েছে বিজেপি-র উস্কানি। সে জন্যই এদিন তিনি 'বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে' বলে সতর্কতা দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।