ওয়েব ডেস্ক : ৮ নভেম্বর দেশজুড়ে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিবর্তে আসবে নতুন নোট। সঙ্গে নিজের অ্যাকাউন্টেও টাকা জমা দেওয়ার অপশন দেওয়া হয়। সরকারের ঘোষণা কালোটাকা আটকাতেই নাকি এই পদক্ষেপ। ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। অনেকেই, বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে যারা প্রত্যক্ষ পা পরোক্ষ ভাবে সমর্থন করেন, তারাই এই সিদ্ধান্তকে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ বলে দাবি করা শুরু করে দেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কিন্তু, পরদিন সকাল হতেই দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় হাহাকার। কোথায় টাকা রাখা হবে। কীভাবে বদল করা হবে পুরনো নোট। উত্তর এসেও সঠিকভাবে নেই। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে, সরকারি তরফে জানানো হল, 'সবে তো ঘোষণা করা হল। কয়েকটা দিন সময় দিন ঠিক হবে পরিস্থিতি।' নগদ টাকায় লেনদেনের থেকে জোর দেওয়া শুরু হল প্লাস্টিক মানির ওপর। এদিকে, দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। পর্যাপ্ত নতুন নোটের অভাবে সিদ্ধান্তে বদল সরকার ও RBI-এর। টাকা বদল ও টাকা তোলার ওপর রাতারাতি রাশ টানা হল। এরপরই সাধারণ মানুষের ভোগান্তিকে ইস্যু করে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমে পড়়ে বিরোধীরা। নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই আন্দোলনে যোগ দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মায়াবতিরা। নৈতিক সমর্থন জানিয়ে, আলাদাভাবে আন্দোলনে নামে কংগ্রেস থেকে বাম।


আরও পড়ুন- কংগ্রেসকে ফের আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর


এদিকে, তাদের এই আন্দলনের চাপে অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফের সামনে আসেন। বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া শুরু করবে। দেশবাসীর কাছ থেকে মাত্র ৫০ দিন সময় চেয়ে নেন তিনি। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে তিনি সব দায় নিজের মাথায় নেবেন। শাস্তি ভোগ করতেও প্রস্তুত। কিন্তু, আন্দোলনে রাশ টানতে নারাজ বিরোধীরা। প্রতিবাদের ঝড়ের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকে। ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণের সংখ্যাও বাড়তে থাকে সেই সঙ্গে।


এবার পালা ক্লাইম্যাক্সের। মোদীর '৫০ দিনের টাইমলাইন' শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর। তারপর? তারপর প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুসারে কী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে? বাজারে নতুন নোটের যোগান কী বাড়বে? প্রশ্নগুলির উত্তর নিয়ে ভাবতে ভাবতেই এল নতুন তথ্য।


কী সেই তথ্য?


নগদ সমস্যা নতুন বছরেও চলবে বলে খবর। অর্থমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, বাজার থেকে পুরানো নোট তুলে নেওয়ার পর এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন নোট আনা সম্ভব হয়নি। তাই ব্যাঙ্ক ও এটিএম থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আপাতত বহালই থাকবে। সেই সঙ্গে এখনই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার বেধে দেওয়া সর্বোচ্চ সীমা তুলে নেওয়া সম্ভব নয়।


আরও পড়ুন- রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আয়কর দফতরের


RBI-র নতুন তথ্য অনুসারে, ১১.৮ লক্ষ কোটি টাকার পুরানো নোট ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়েছে। সিস্টেমে যোগান দেওয়া হয়েছে ৪ লক্ষ কোটি টাকার নতুন নোট। কিন্তু এরপরও নোটের স্বল্প জোগানের কারণে নিয়ন্ত্রন থাকছেই। সরকার অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, নতুন নোটে আগের পরিমাণে অর্থ বাজারে ফিরছে না। অন্যদিকে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারপার্সন অরুন্ধুতী ভট্টাচা‌র্য জানিয়েছেন ফেব্রুয়ারির আগে পরিস্থিতি কোনও ভাবেই স্বাভাবিক হবে না।