নিজস্ব প্রতিবেদন: ঋণখেলাপি ও পলাতাক 'লিকার ব্যারন' বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে জারি হওয়া 'লুক আউট' নোটিসকে লঘু করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর বিরুদ্ধে। এসবিআই-সহ একাধিক ব্যাঙ্কের থেকে নেওয়া ৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ শোধ না করা মালিয়া দেশে ছাড়ার আগে তার বিরুদ্ধে জারি 'লুক আউট' নোটিস 'উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে' হালকা করে দিয়েছে মোদী সরকার, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের। এমনকী, 'লুক আউট' নোটিস থাকা সত্বেও তাকে কেন দেশ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হল, উঠতে শুরু করেছে সেই প্রশ্নও।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বুধবার লন্ডনের আদালতে ভারতের জেল মালিয়ার জন্য 'উপযুক্ত' কি না তা নিয়ে শুনানি চলছিল। এরই ফাঁকে মালিয়া দাবি করেন, তিনি দেশ ছাড়ার আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠকে বসে ঋণ পরিশোধের বিষয়ে মিমাংসা চেয়েছিলেন। ঋণখেলাপি 'লিকার ব্যারন'-এর এই দাবিতে ভারত জুড়ে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধীদের আক্রমণের মুখে বিবৃতি দিতে একপ্রকার বাধ্য হয়েছেন জেটলি। কিন্তু, মালিয়ার সঙ্গে এমন কোনও আলোচনাই হয়নি, অর্থমন্ত্রীর এই দাবিতে দমছে না বিরোধী দলগুলি। আর এমন পরিস্থিতিতেই সামনে আসছে 'লুক আউট' নোটিস লঘু করে দেওয়ার অভিযোগ। তবে সিবিআই-এর দাবি, মালিয়া যে পালিয়ে যেতে পারে ('ফ্লাইট রিস্ক'), সে কথা তারা ভাবতেই পারেনি। কারণ, সে সময় মালিয়া বারবার ভারত-লন্ডন যাতায়াত করছিলেন।


সিবিআই জানিয়েছে, বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম লোটিস জারি হয় ১৬ অক্টোবর'২০১৫। এর কয়েক সপ্তাহ পর ২৪ নভেম্বর সেই নোটিস 'রিপোর্ট অন অ্যারাইভাল' (অর্থাত্, সে দেশে ফিরলেই রিপোর্ট করার নির্দেশ)-এ পর্যবসিত হয়। কারণ, মালিয়া দেশ থেকে পালাতে পারে এমন ভাবনার কথা মাথায় আসার মতো কোনও পরিস্থিতিই সে সময় ছিল না বলে দাবি। কিন্তু, এখন সিবিআই মনে করছে, প্রথম জারি হওয়া নোটিসেই 'গলদ' ছিল। কারণ, মুম্বই অভিবাসন বিভাগ ফর্মটি পূরণ সময় আটক করার জায়গাটি সঠিক ভাবে বিবেচনা করেনি। আরও পড়ুন- মালিয়াকে ভারতে প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্ত ১০ ডিসেম্বর, জানাল ব্রিটেনের আদালত


সিবিআই সূত্রে খবর, ২৯ জুলাই'২০১৫ মালিয়ার বিরুদ্ধে মামলা শুরুর পর নোটিস জারি করা হয় এবং এ সময় পর্যন্ত কোনও ব্যাঙ্কের কাছে থেকেই কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরে অক্টোবর মাসে যখন 'লুক আউট' নোটিস জারি হয়, তখন মালিয়া লন্ডনে। এরপর যেদিন নোটিশটি 'লঘু' হয়ে যায়, ঠিক সেদিনই সে দেশে ফেরে এবং ১ ডিসেম্বর আবারও লন্ডনের উদ্দেশে পাড়ি দেয়। সিবিআই আরও জানাচ্ছে, ২৩ নভেম্বর মালিয়া দেশে ফেরার আগের দিন অভিবাসন দফতর থেকে টেলিফোন করা হয় তাদের। 'লিকার ব্যারন'কে গ্রেফতার করা হবে কি না, সেকথা জানতে চাওয়া হয়। আর তখনই 'সংশোধিত' লুক আউট নোটিস জারি করা হয়। এরপর বেশ কয়েকবার লন্ডন-ভারত যাতায়ত করে বিজয় মালিয়া। ৯, ১০ এবং ১১ ডিসেম্বর তাকে জেরা করে সিবিআই। কিন্তু, এই ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী যে পালাতে পারে, সে কথা মাথাতেই আসেনি তদন্তকারীদের। লুক আউট নোটিশ 'লঘু' করার অভিযোগের সম্মুখে এবাবেই রক্ষণ গড়তে চেষ্টা করেছে সিবিআই। কিন্তু, কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধিরা বলছে, সিবিআই-এর এই 'আত্মপক্ষ সমর্থনে'র চেষ্টা থেকেই স্পষ্ট যে মোদী সরকার তাকে দেশবাসীর টাকা লুঠ করে দেশ ছাড়তে মদত যুগিয়েছে।