নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনভাইরাসে মৃত চিকিৎসকের দেহ কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময়ে অ্যাম্বুলেন্সের উপর হামলা চালাল স্থানীয়রা। পুলিশের সামনেই ঘটল এমন ঘটনা। এরপর বাধ্য হয়ে নিজেই সহকর্মীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন অপর এক চিকিৎসক। কোদাল দিয়ে চাপা দিলেন প্রায় ৮-১০ ফুট গভীর কবর। রবিবার এমন ঘটনা ঘটলো তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ড: সাইমন হারকিউলিস নামে বছর ৫৫-র ওই চিকিৎসক তাঁর রোগীদের থেকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হন। রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর সুরক্ষামূলক পোশাক পরে তাঁর দেহ সমাধিস্ত করতে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রওনা দেন দুই চালক। সেই সময়ই মাঝরাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। ইট-পাথর বৃষ্টি হতে থাকে অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে। ভেঙে যায় অ্যাম্বুলেন্সের উইন্ডস্ক্রিন। এমনকি যে বিশেষ সুরক্ষামূলক বাক্সে রাখা হয়েছিল তাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাথরের আঘাতে গুরুতর আহত হন দুই চালক। স্থানীয়রা দাবি করেন, অ্যাম্বুলেন্সে দেহ নিয়ে যাওয়ার ফলে ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস।


পরিস্থিতি সামাল দিতে সমাধি প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশকর্মীরা জনতাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। উল্টে তাঁদের ওপর হামলা চালায় ক্ষিপ্ত স্থানীয়রা। গুরুতর আহত হন ৩ স্বাস্থ্যকর্মী। কাছাকাছি দুটি কবরস্থানের কোনোটিতেই তাঁদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। 


গোটা ঘটনার পর তাঁর সহকর্মীর দেহ নিজেই সমাধিস্থ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন সেই হাসপাতালের‌ই অপর চিকিৎসক ড: কে প্রদীপ কুমার। সুরক্ষামূলক পোশাক পরে তিনি নিজেই বসেন ভাঙা অ্যাম্বুলেন্সের চালকের আসনে। সঙ্গে নেন হাসপাতালের ২ ওয়ার্ড বয়কে। মাঝরাতে অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে দেহ নিয়ে পৌঁছে যান এক কবরস্থানে। সেখানে দেহ নিয়ম মেনে ৮-১০ ফুট নিচে সমাধিস্থ করার পর নিজেই কোদাল দিয়ে মাটি চাপা দেন। এক ওয়ার্ড বয় ও তিনি মিলে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে রাত দেড়টা পর্যন্ত মাটি চাপা দেন। শেষের দিকে হাত লাগান দুই পুলিসকর্মীও। 


ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে চেন্নাই পুলিস। কিন্তু, করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তির সমাধি প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত পুলিসি নিরাপত্তা কতটা থাকে, তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তামিলনাড়ু সরকারকে এই মর্মে নোটিস পাঠিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। 


ঘটনায় সরকারি নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলেছেন সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন‌ও। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, "যে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিনিয়ত করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তাঁদের‌ সঙ্গেই এমন ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকারের এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ। "

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভবনেও করোনাভাইরাস! আইসোলেশনে পাঠানো হল ১২৫টি পরিবারকে