Dr Subash Chandra Exclusive: খুব শীঘ্রই সব ঋণ মিটে যাবে, কোম্পানির ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানালেন এসেল গ্রুপের চেয়ারম্যান
Dr Subash Chandra Exclusivজি এন্টারটেইমেন্ট এসেল গ্রুপই শুরু করেছিল। তাই অনেক এমন ভাবেন। ভবিষ্যতেও মানুষজন সেটাই ভাববেন। তবে জি এন্টারটেইনমেন্টরকে আমি আমার মন থেকে সরিয়ে দিয়েছি। আমাদের স্বদিচ্ছা খুবই স্পষ্ট। আমরা সব ঋণ শোধ করে দিতে চাই।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: টানা ৯৭ বছর ধরে সম্মানের সঙ্গে টিকে রয়েছে এসেল গ্রুপ। কিন্তু বর্তমানে কোম্পানির আর্থিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। এর পেছনে রয়েছে এসেলের ঋণ। এনিয়ে এক সাক্ষাতকারে বিস্তারিত জানালেন এসেল গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. সুভাষ চন্দ্র। কবে কোম্পানি সম্পূর্ণ ঋণমুক্ত হবে, কোম্পনির ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়েও জানালেন সুভাষ চন্দ্র।
## কোম্পানির ঋণ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে
ড. সুভাষ চন্দ্র বলেন, এ ব্যাপারে বরাবরই আমি স্বচ্ছ। গত বছর এক খোলা চিঠিতে লিখেছিলাম কোম্পানির ৯২ শতাংশ ঋণ শোধ হয়ে গিয়েছে। গত এক বছরে আরও ঋণ মেটানো হয়েছে। যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন বরাবরই তার মুখোমুখি হওয়ার চেষ্টা করছি। ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছি তা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
## কবে এই ঋণ পুরোপুরি শোধ হয়ে যাবে
ড. সুভাষ চন্দ্র: রোজই নতুন করে শুরু করতে হয়। আমি বর্তমানের মধ্যে থাকতে ভালোবাসি। টার্গেট ছিল ২০২৩ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সব ঋণ শোধ করে দেব। কিন্তু কিছু পরিস্থিতির জন্য তা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু সম্পত্তি বিক্রির প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। তা হলেই আমরা ঋণমুক্ত হয়ে যাব।
## অনেক পাওনাদারই সমস্য়ার সৃষ্টি করছেন, অনেকে আদালতেও গিয়েছেন
ড. সুভাষ চন্দ্র: বহু পাওনাদার আমাকে অনেকে সাহায্য করেছেন। অনেকে ক্ষতিও স্বীকার করেছে। তারা জানেন সম্পত্তি বিক্রি করে এসেল গ্রুপ ঋণ শোধ করে দেবে। এখনও পর্যন্ত আমরা ৪০,০০০ কোটি টাকা শোধ করেছি। শুধুমাত্র সুদ দিয়েছে ৫০,০০০ কোটি টাকা। গত ১৯৬৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এসেল গ্রুপ কখনও ঋণগ্রস্ত হয়নি।
## সম্পত্তি বিক্রি করতে গিয়েও সমস্যা হচ্ছে
ড. সুভাষ চন্দ্র: কোম্পানিক সবচেয়ে মূল্যবান সম্পত্তিগুলি বিক্রি করতে কোনও সমস্যা হয়নি। তবে ২-৩ সম্পত্তি বিক্রি করতে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের প্রতিজ্ঞাই হল সবার ঋণ শোধ করে দেওয়া।
## অনেকে মাঝে মধ্যে জানতে চান সুভাষ চন্দ্র দেশে আছেন কিনা কিন্তু আপনি তা আছেন এবং ঋণ শোধ করছেন
ড. সুভাষ চন্দ্র: এরকম সমস্যা অনেকের জীবনেই আসে। এরকম সমস্যার মুখোমুখি হতে সাহসের দরকার হয়। শক্তিশালী মানুষ সমস্য়া থেকে পালান না। তার মোকাবিলা করেন।
## জি-সোনি সংযুক্তিকরণের কী অবস্থা
ড. সুভাষ চন্দ্র: জি এন্টারটেইনমেন্ট ও সোনির সংযুক্তিকরণে আমার খুব একটা ভূমিকা নেই। এনিয়ে আমার কিছু বলাটা ঠিক হবে না। এ ব্যাপারে কোম্পানির সিইও-ই ভালো বলতে পারবেন। সেটাই উচিত। যতদূর আমি জানি ওই সংযুক্তিরণ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে।
## এখনও মানুষ ভাবে জি এন্টারটেইমেন্ট এসেল গ্রুপেরই অংশ
ড. সুভাষ চন্দ্র: জি এন্টারটেইমেন্ট এসেল গ্রুপই শুরু করেছিল। তাই অনেক এমন ভাবেন। ভবিষ্যতেও মানুষজন সেটাই ভাববেন। তবে জি এন্টারটেইনমেন্টরকে আমি আমার মন থেকে সরিয়ে দিয়েছি।
## প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা মেটানোর পর এখন আপনার সম্পত্তির পরিমাণ কত
ড. সুভাষ চন্দ্র: আমার নিজস্ব সম্পত্তি নিতান্তই নগন্য। আমি আমার বাড়ি বন্ধক রেখেও ঋণ শোধ করেছি।
## প্রমোটাররা পার্সোন্যাল গ্যারান্টি দিতে ভয় পান, আপনি দেন কী করে
ড. সুভাষ চন্দ্র: ২০১৯ সালে জানুয়ারির আগে কোনও পার্সোন্যাল গ্যারান্টি দিইনি। পরে পুরোন ঋণের ক্ষেত্রে তা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পার্সোন্যাল গ্যারান্টির আর কিছু বকেয়া পড়ে নেই।
## কোনও কোনও পাওনাদার যুক্তি শুনতে চাইছেন না
ড. সুভাষ চন্দ্র: আমাদের স্বদিচ্ছা খুবই স্পষ্ট। আমরা সব ঋণ শোধ করে দিতে চাই।
## ডিশ টিভি তো লাভজনক কোম্পানি। তার পরেও কেন সমস্যা
ড. সুভাষ চন্দ্র: ডিশ টিভি আমাদের গ্রুপের কোনও কোম্পানি নয়। এটি আমার ভাই জওহর গোয়েলের কোম্পানি। বর্তমানে কোম্পানিটির কোনও ঋণ নেই। ডিশ টিভির সঙ্গে ইয়েস ব্যাঙ্কের কিছু সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন। দেখুন মানুষ এসেল গ্রুপের প্রতিটি কোম্পানিতে টাকা ঢেলে লাভ করেছে।
## সুভাষ চন্দ্র সম্পর্কে বলা হয়, তিনি ভেঙে পড়তে পারেন, কিন্তু ভেঙে পড়ে দাঁড়ানোর আর্টও তিনি জানেন, এরপর কী?
ডা. সুভাষ চন্দ্র: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা আগেও বলেছি। এই সময়ে আমি প্রযুক্তি ও অন্যান্য ক্ষেত্রে স্টার্টআপদের পরামর্শ দিচ্ছি। এতে পুঁজি বিনিয়োগ ছাড়াই কিছু শেয়ার আসবে। জনসেবার জন্য একটি ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে, আমি তার কাজ করে যাব।
## পুরো ঋণ সমস্যা থেকে আপনার ব্যক্তিগত এবং পেশাগত শিক্ষা কি হয়েছে?
ডা. সুভাষ চন্দ্র: খারাপ সময় সব শিক্ষা দেয়। মানুষ খারাপ সময়েই বেশি শেখে। সাফল্যের সময় মানুষ ঘোড়ায় চড়ে। আমার খারাপ সময়েও অনেক কিছু শিখতে ও বুঝতে পেরেছি। এই সময় কয়েকজন সঙ্গে ছিলেন। আমার বেশিরভাগ অভিজ্ঞতা ভাল ছিল।