ঋণে জেরবার অনিল অম্বানিকে রাফাল বরাত পাইয়ে দিয়েছিলেন মোদী? প্রাক্তন ফরাসী প্রেসিডেন্টের বোমা
রাফাল নিয়ে বড়সড় তথ্য ফাঁস করলেন প্রাক্তন ফরাসী প্রেসিডেন্ট।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাফাল নিয়ে বোমা ফাটালেন ফ্রাসোয়াঁ ওল্যাঁদ। প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্টকে উদ্ধৃত করে মিডিয়াপার্ট নামে একটি ফরাসি জার্নাল লিখেছে, রাফাল রফায় অনিল অম্বানির সংস্থা রিল্যায়্যান্সকে বেছে দিয়েছিল ভারত। সাউথ ব্লক এতদিন দাবি করে এসেছে, রাফাল রক্ষণাবেক্ষণে আম্বানির সংস্থার পাওয়া বহু কোটি টাকার বরাতে সরকারের হাত নেই। কিন্তু ঠিক উলটো কথা বললেন প্রাক্তন ফরাসী প্রেসিডেন্ট।
ওল্যাঁদের এই বক্তব্য প্রকাশের পরই নরেন্দ্র মোদীকে কড়া আক্রমণ করেছেন রাহুল গান্ধী। মোদী দেশকে ঠকিয়েছেন বলে টুইট করেন কংগ্রেস সভাপতি। তবে, প্রতিরক্ষামন্ত্রক ফের দাবি করেছে, রাফালের বাণিজ্যিক চুক্তিতে দু'দেশের সরকারেরই কোনও হাত নেই।
রাফাল চুক্তিতে রিলায়্যান্সকে অংশীদার হিসেবে কেন বেছে নেওয়া হল? ফ্রাসোয়াঁ ওল্যাঁদের জবাব, ডসল্ট ও রিলায়্যান্সের নাম প্রস্তাব করেছিল ভারত সরকার। ফলে তাদের অংশীদার করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।
মিডিয়াপার্ট নামে ওই সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওল্যাদঁ বলেছেন, ''অংশীদার বাছার ক্ষেত্রে ফ্রান্সের কোনও হাত ছিল না। পরিষেবা সংস্থা হিসেবে রিলায়্যান্সের নাম প্রস্তাব করেছিল ভারত সরকার। অম্বানির সঙ্গে রফা করে ডসল্ট''।
বিরোধীরা অভিযোগ করে আসছিলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালকে বাদ দিয়ে নিজের বিশ্বস্ত শিল্পপতি অনিল অম্বানির পরিষেবা সংস্থাকে রাফাল চুক্তিতে ঢুকিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই অভিযোগ খারিজ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারা জানিয়েছিল, চুক্তিতে রিলায়্যান্সকে বাছার ক্ষেত্রে তাদের কোনও ভূমিকা ছিল না। প্রেসবিবৃতি দিয়ে সে কথা জানায় রিলায়্যান্সও। কিন্তু ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের দাবির পর কেন্দ্রের আর মুখ লুকোনোর জায়গা নেই। এনিয়ে মোদী সরকারকে তীক্ষ্ণ শব্দবাণে বিঁধেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। তাঁর কথায়, ''বন্ধঘরে রাফাল চুক্তি রফা করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। ফ্রান্সোয়াঁ ওল্যাদেঁকে ধন্যবাদ। আমরা জানতে পারলাম, কয়েক কোটি টাকার চুক্তি দেনাগ্রস্ত অনিল অম্বানিকে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগের রক্তের অসম্মান করেছেন''।
সম্প্রতি রিলায়্যান্স জানিয়েছিল, রাফালের বরাত ফরাসী সংস্থা ডসল্টের কাছ থেকে পেয়েছে তারা। অনভিজ্ঞতার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যালকে বরাত দেওয়া হয়নি। চুক্তিপত্রে রফতানি সংক্রান্ত যে শর্ত রয়েছে, তা পূরণ করতে রিলায়্যান্সকে বেছে নিয়েছে ডসাল্ট। এর পিছনে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের কোনও ভূমিকা নেই।
রিলায়্যান্স ডিফেন্স লিমিটেডের সিইও রাজেশ ঢিংরা বলেছিলেন, চুক্তি মোতাবেক ৩৬টি যুদ্ধবিমান রফতানি করবে ফরাসী সংস্থা ডসাল্ট। ভারতের বিমানটি নির্মাণ করা যাবে না। তাই হ্যাল বা অন্য কোনও সংস্থা নির্মাণকারী হতে পারবে না।
আরও পড়ুন- সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিবস নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য ফের সংঘাত