নিজস্ব প্রতিবেদন: গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক তথা সে রাজ্যের স্পিকার প্রমোদ সাওয়ান্ত। জানা যাচ্ছে, আজই শপথ নিতে পারেন তিনি। পাশাপাশি, শরিকদের অভিমান ভাঙাতে জোড়া উপমুখ্যমন্ত্রী করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির সুধীন দাভালিকর এবং গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির বিজয় সারদেশাই হচ্ছেন উপমুখ্যমন্ত্রী।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর পদে দৌড়ে ছিলেন সুধীন দাভালিকর এবং বিজয় সারদেশাই। নিতিন গড়কড়ির নেতৃত্বাধীন বৈঠকে শরিকদের অভিমান ভাঙিয়ে শেষমেশ নিজদের দলের বিধায়ককে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে সক্ষম হয় বিজেপি। রবিবার সন্ধ্যায় প্রয়াত হন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। বছর ৬৩-র ওই বিজেপি নেতা বছরখানেক ধরে অগ্নাশ্যয়ের ক্যানসারে ভুগছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০১৭ সালে গোয়ায় সরকার গঠনের চাবিকাঠি ছিলেন পর্রীকর। তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলে তবেই সমর্থন দেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন শরিকরা। সেই পরিস্থিতিতে গোয়ার সরকার গড়তে পর্রীকর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে গোয়া ফিরে যান। ফলে সরকার বাঁচাতে ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।


ফলে তাঁর প্রয়াণে স্বাভাবিকভাবেই গোয়ায় রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়। পর্রীকরের বদলি কে হবেন, সেটা নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা। সেই আলোচনায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়িও। গোয়ায় বিজেপির বিধায়ক মাইকেল লোবো জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির বিধায়ক সুদিন দাভালিকর মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবি জানিয়েছেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে নারাজ বিজেপি। ফলে বিজেপি ও শরিক দলের মধ্যে আলোচনা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি। লোবোর দাবি, রবিবার রাতভর সমস্যার সমাধান হয়নি বটে। তবে সোমবারের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে যে কে হবেন গোয়ার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী।


আরও পড়ুন- উত্তরপ্রদেশ, বাংলার পর বিহারে ধাক্কা মহাজোটে, কংগ্রেসের আবদারে 'না' আরজেডি-র


মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির বিধায়ক সুদিন দাভালিকর অবশ্য জানিয়েছেন, রবিবার নিতিন গড়কড়ি প্রত্যেক বিধায়কের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছেন। কিছু বিষয় প্রত্যেক বিধায়কের কাছ থেকে আলাদা আলাদা ভাবে জানতে চেয়েছেন। কিন্তু কী নিয়ে সেই আলোচনা, তা অবশ্য জানাতে চাননি দাভালিকর।


এদিকে গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির নেতা বিজয় সারদেশাই জানান, পর্রীকরের অনুপস্থিতিতে কীভাবে সরকার চলবে, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। শরিক দলের আশঙ্কাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলেই তাঁর মত। সারদেশাইয়ের সঙ্গে পাঁচজন বিধায়ক রয়েছেন। তার মধ্যে দু'জন তাঁর দলের। আর বাকি তিনজন নির্দল। সারদেশাইয়ের বক্তব্য, বিজেপির জন্য তাঁদের দরজা এখনও বন্ধ হয়নি। ফলে তিনিও নিজেকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক মহলের মত।


আরও পড়ুন- পানাজির মিরামর সৈকতে পর্রীকরে শেষকৃত্য সম্পন্ন পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়


প্রসঙ্গত, গোয়া বিধানসভার আসন সংখ্যা ৪০। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৪টি আসনে জিতেছিল। মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির তিনজন, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির তিনজন ও তিনজন নির্দল বিধায়ক নিয়ে সরকার গড়েছিল বিজেপি। গোয়া বিধানসভায় সরকার গড়ার ম্যাজিক ফিগার ২১। বিজেপির সরকার হয়েছিল তার থেকে দু'জন বিধায়ক (২৩) নিয়ে। ফলে একক বৃহত্তম দল হিসেবে ১৬টি আসন পেয়েও বিরোধী আসনে বসতে হয়েছে কংগ্রেসকে।


কিন্তু সম্প্রতি দু'জন কংগ্রেস বিধায়ক পদত্যাগ করেন। গত মাসে একজন বিজেপি বিধায়ক ফ্রান্সিস ডি'সুজা। ফলে এখন গোয়া বিধানসভার বিধায়ক সংখ্যা ৩৬ জন। তাই এখন ১৯ হল গোয়ার ম্যাজিক ফিগার। আর বিজেপি সরকার এখন ২১ জন বিধায়কের। কিন্তু জোট শরিকদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছানো না গেলে লোকসভা ভোটের মুখে গোয়ায় ধাক্কা খেতে পারে বিজেপি।