পরিযায়ী মৃত্যু-তথ্যে বিতর্ক ঢাকতে শ্রমিকদের রোজগারের `ললিপপ` কেন্দ্রের
লকডাউন-পর্বে নানা ভাবে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছিল। স্বভাবতই বিরোধীরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ঠিক কতজন পরিযায়ী শ্রমিক মারা গিয়েছেন, তা জানে না কেন্দ্র! বিরোধীরা সংখ্যাটা জানানোর জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করলে পরে বলা হয়েছিল, এই ধরনের সংখ্যা জানানোর কোনও যথাযথ পদ্ধতি সরকারের হাতে নেই। সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিতর্ক আজ যেন কিছু ঠান্ডা হল।
লকডাউন-পর্বে নানা ভাবে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছিল। স্বভাবতই বিরোধীরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সোমবার বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য সাধারণত পুরসভা বা পঞ্চায়েত স্তরেই থাকে। তা-ও সেটা বহু দশকের চেষ্টায় একটু-একটু করে জোগাড় করে রাখা থাকে। ফলে রাতারাতি কারও জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য পুরসভা বা পঞ্চায়েতের পক্ষেও দেওয়া সম্ভব নয়।
দেশজোড়া মৃত্যুর ছবি দেখেও সরকারের এ হেন 'উদাসীনতায়' বেশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে গোটা দেশের একাংশ। শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল বিভিন্ন মহল। সরকারকে 'ক্যালাস' বলেও উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ। সব চেয়ে বেশি আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি পরিষ্কার বলেছেন, মোদী সরকার জানে না লকডাউন-পর্বে কত জন পরিযায়ী শ্রমিক মারা গিয়েছেন বা তাঁদের কতজন কাজ হারিয়েছেন। কিন্তু সংখ্যাটা কেউ জানে না বলে, মৃত্যুটা তো আর মিথ্যা হয়ে যায় না! সরকারের ওপর এই শ্রমিকমৃত্যুর কোনও প্রভাবও পড়েনি বলেও জানানো হচ্ছে। কিন্তু সারা পৃথিবী দেখেছে এই কাণ্ড। অথচ মোদী সরকারই কিছু জানে না!
এই বিতর্কের সূত্রেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল আসলে 'ফেক নিউজে'র খপ্পরে পড়েই শ্রমিকদের এই হাল হয়েছিল। কেননা ওই ধরনের বিভিন্ন খবরে কতদিন লকডাউন চলবে তা নিয়ে নানা রকম ভুল খবর লাগাতার প্রচার করা হচ্ছিল। আর সে সব দেখেই শ্রমিকদের একাংশ বিপথে চালিত হয়েছিলেন।
তবে আজ কেন্দ্রীয় সরকার এ সংক্রান্ত সব ধরনের বিতর্ক সরিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামল। কোভিড-১৯ সময়পর্বে যে সব শ্রমিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শ্রম মন্ত্রকের তরফে তাদের ঘিরে একটা কল্যাণমূলক ভাবনাচিন্তার রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে বলে জানাল কেন্দ্র। সরকার যে এই সব শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিয়েও ভাবছে তা-ও পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা হিসাবও তাদের তরফে দাখিল করা হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থনৈতিক সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী পরিযায়ী শ্রমিকদের মোট যে সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোটামুটি ১ কোটি শ্রমিক লকডাউন-পর্বে ঘরে ফিরতে পেরেছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের বরাত পেল টাটা গোষ্ঠী, খরচ হবে ৮৬১.৯০ কোটি