নির্ণয় ভট্টাচার্য্য


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গতকাল অর্থাত্ ১৮ই মে থেকে জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে বসেছে বিভিন্ন দ্রব্যের উপর কী হারে পণ্য ও পরিষেবা কর লাগু হবে তা নির্ধারণ করার জন্য চূড়ান্ত বৈঠক। বৈঠক শেষ হবে আজ। কিন্তু আসমুদ্র হিমাচল ভারতবর্ষে এত জায়গা থাকতে এমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের জন্য কেন বেছে নেওয়া হল উত্তাল উপত্যকাকে, উঠছে প্রশ্ন।


কূটনৈতিক মহল ও দেশের রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছে, উপত্যকা উত্তাল বলেই শ্রীনগরকে বৈঠক স্থল হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাদের মতে, জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকা বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির প্রভাবে যতই উত্তাল হোক, তা যে ভীষণভাবে সার্বভৌম ভারতভূমির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং সেই অঙ্গকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে ভারত সরকার সে বার্তা দিতেই শ্রীনগরকে বেছে নেওয়া।



উল্লেখ্য, হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির হত্যার পর গত প্রায় এক বছর ধরে নতুন মাত্রায় আগুন জ্বলেছে উপত্যকায়। সেই আগুন এখনও অস্তমিত বলা যায় না একেবারেই। এদিকে বারংবার পাকিস্তান আন্তর্জাতীক মঞ্চে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে যে ভারত সরকার ছররা বন্দুকে আক্রান্ত উপত্যকার প্রতি সদা বিমাতৃ সুলভ আচরণ করে থাকে। সেই অভিযোগ খণ্ডন করতেই এই 'ভ্যেনু রাজনীতি' আসলে মোদী সরকারের মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করা হচ্ছে।


 


প্রসঙ্গত, নয়ের দশকের গোড়ায় ভারতীয় অর্থনীতির উদারীকরণের পর জিএসটিকেই সর্ববৃহত্ অর্থনৈতিক সংস্কার হিসাবে দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল। ভারতীয় কর ব্যবস্থার খোল নলচে বদলে দেবে পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা, এমনটাই দাবি সরকারের পক্ষে। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, প্রতিটি রাজ্যের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলির প্রতিনিধিসহ মোট প্রায় ১৫০ ভিভিআইপিকে নিয়ে এই যে বৈঠক তার 'ভ্যেনু' হিসাবে 'শের-এ-কাশ্মীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার'কে বেছে নিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের আম জনতাকেও যে মোদী সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে সে বার্তাও দেওয়া হল।



এছাড়াও বর্তমানে, জম্মু-কাশ্মীরে যেহেতু বিজেপি-পিডিপির জোট সরকার ক্ষমতায়, তাই দল হিসাবে বিজেপিরও উপত্যকায় শান্তি ফেরানোর বিশেষ রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সারা ভারতে সংবিধানের ২৪৭ ধারা অনুসারে কর ব্যবস্থা বলবত্ থাকলেও জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে সেধারায় কর আদায় হয় না। সেরাজ্যে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ সংবিধানের ৫ ধারা অনুযায়ী কর ব্যবস্থা প্রচলিত। ফলে, জিএসটি চালু হলে মেহবুবা মুফতির রাজ্যে কর ব্যবস্থার বেশ কিছু অদল বদল ঘটাতে হবে যা বাকি দেশের সঙ্গে এক হবে না। তাই সেই সংক্রান্ত আলাপ আলোচনা এবং সংস্কার প্রক্রিয়ার জন্যও এই 'ভ্যেনু' গুরুত্বপূর্ণ বলে মত আমলা মহলের একাংশের। কিন্তু, বর্তমানে অত্যাধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির আমলে আমলাতন্ত্রের এই যুক্তি কতটা ধোপে টেকে উঠছে সেপ্রশ্নও। ফলে, সব কিছু বাদ দিয়ে জিএসটি বৈঠকের ভ্যেনু নির্বাচন আদ্যন্ত কূটনৈতিক পদক্ষেপ এব্যাপারে একমত পর্যবেক্ষকরা।


আরও পড়ুন- স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে লাগু হবে না GST, ছাড় মেট্রো এবং লোকাল ট্রেনেও