কমলিকা সেনগুপ্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

যে 'গুজরাট মডেল'-কে তুলে ধরে গোটা ভারতে অচ্ছে দিনের স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন সেখানেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে নরেন্দ্র মোদী। বিধানসভা নির্বাচনের আগে জিএসটি ও নোট বাতিলের মতো পদক্ষেপে অখুশি ব্যবসায়ীরা। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো কৃষকদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হচ্ছে বিজেপি সরকারকে। গুজরাটের কৃষকদের অভি‌যোগ, ‘গুজরাট মডেল’ আসলে নগরকেন্দ্রিক। গ্রামের মানুষের কোনও লাভ হয়নি তাতে। 


শনিবার গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ ও দক্ষিণ গুজরাটে ৮৯টি আসনে ভোটগ্রহণ। ২০১২ সালে সৌরাষ্ট্রের অধিকাংশ আসনই ছিল বিজেপির ঝুলিতে। নোট বাতিল ও জিএসটি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তো ক্ষোভ রয়েইছে। ফুঁসছেন কৃষকরাও। তুলো আর বাদাম উত্‍পাদনে দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য গুজরাট। রাজ্যে কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। তাঁদের অভিযোগ, দু’দশক ধরে গুজরাটের ক্ষমতায় থাকলেও সেচের তেমন উন্নতি করতে পারেনি বিজেপি সরকার। গতবছরই আমরেলিতে খরার জেরে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন তুলো চাষিরা। তাদের বক্তব্য, বৃষ্টির জমানো জলের উপরেই নির্ভর করতে হয় এখনো। এবারও অক্ষির দাপটে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। দিনকয়েকের মধ্যেই ফসল ঘরে তোলার কথা তুলোচাষিদের। তার আগে মেঘলা আবহাওয়া ও বিক্ষিপ্ত বর্ষণে মাথায় হাত চাষিদের। অভিযোগ, চাষিদের কাছ থেকে সস্তায় জমি হাতিয়ে নিচ্ছে কর্পোরেটরা। গত ৫ বছরে গুজরাটে আত্মঘাতী হয়েছেন প্রায় ১০০ জন কৃষক। 


আরও পড়ুন- ''ইন্দিরার পর মমতা,'' ২৪ ঘণ্টাকে বললেন হার্দিক পটেল


তুলো চাষিরা জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতি মতো ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দিতে পারেনি বিজেপি সরকার। লোকসানে তুলো বেচতে হচ্ছে তাঁদের। তিন বছর আগে ২০ কেজি তুলোর বাজার দর ছিল ১,২০০ টাকা। সার, বীজের দাম ও শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুণ হয়েছে, অথচ তুলোর দর পড়ে গিয়েছে ৮০০ টাকায়। এভাবে চললে অনাহারে মরতে হবে আশঙ্কা তুলো চাষিদের। তুলো চাষিরা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, গুজরাটের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচারে বলেছিলেন, কেন মনমোহন সিংয়ের সরকার তুলোর সহায়ক মূল্য বাড়িয়ে ১,৫০০ টাকা করছে না। সেই তিনিই ক্ষমতায় আসার পর কিছুই করেননি। বাদাম চাষিদের অবস্থাও তথৈবচ। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তাঁদেরও। লোকসানের মুখে পড়েছেন তাঁরাও। এক্ষেত্রেও ক্ষমতায় আসার পর সহায়ক মূল্য বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি রাখেননি নরেন্দ্র মোদী। 


পটেল সম্প্রদায়ের পাশাপাশি কৃষকদের দুর্দশা নিয়েও সরব হয়েছেন হার্দিক পটেল, তা মনে ধরেছে চাষিদের। এতদিন বিজেপিকে ভোট দিলেও এবার পরিবর্তন চাইছে গুজরাটের চাষিরা। উল্লেখ্য, এর আগে গ্রামকে অবহেলা করার মূল্য চোকাতে হয়েছিল অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকে। এবারও কি সেই ভবিতব্যই অপেক্ষা করছে মোদী-শাহ-রূপানিদের জন্য? উত্তর দেবে গুজরাটি জনতা।