`লাভ ইউ মোদীজি`! তরুণ্যের ভালবাসার বিজ্ঞাপনে জোর প্রচার বিজেপির
গুজরাট সেজেছে লেজার আলোয়। লাইট অ্যান্ড শ্যাডো-তে চলছে হাইটেক প্রচার। কলকাতার দূর্গা পুজো হোক বা চন্দনগরের জগত্ধাত্রী, আলোর রোশানাইয়ের সেসবকেও টেক্কা দিচ্ছে ভোটের গুজরাট।
নিজস্ব প্রতিবেদন: "মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে"... চা থেকে সি-প্লেন, বিজ্ঞাপন আর বিপণনে দেশ-বিদেশের তাবড়দের বলে বলে গোল দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির মাথা থেকে পা পর্যন্ত, ছোট-বড়-মাঝারি সব নেতাও জানেন কোন জিনিস কীভাবে বেচতে হয়। আর সবার থেকে ভাল জানেন বোধ হয় খোদ 'নরেন্দ্রভাই মোদী'ই। দেশের প্রকল্প হোক কিংবা ভোটের প্রচার, এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদীর জুড়ি মেলা ভার। গুজরাট ভোটেও উপচে পড়েছে 'ব্র্যান্ড নমো'র সেই ঝলক।
আরও পড়ুন- রাহুল কি কংগ্রেসের 'বাহাদুর শাহ'!
বাণিজ্যের জন্য খ্যাত গুজরাটের শহর-নগর এখন একটা ছবিতেই ঢাকা পড়েছে। রাস্তার ধারে ৫০ ফুটের কাটআউট। আকাশ ছুঁয়ে যাচ্ছে নমো। কোথাও তিনি হাত তুলে দাঁড়িয়ে, কোথাও বা আবার নমস্কারের ভঙ্গিতে স্বাগত জানাচ্ছেন। এখানেই শেষ নয়, গুজরাট সেজেছে লেজার আলোয়। লাইট অ্যান্ড শ্যাডো-তে চলছে হাইটেক প্রচার। কলকাতার দূর্গা পুজো হোক বা চন্দনগরের জগত্ধাত্রী, আলোর রোশানাইয়ের সেসবকেও টেক্কা দিচ্ছে ভোটের গুজরাট।
আরও পড়ুন- 'বিকাশ রাজ্যে' খাবার জোটে না 'গোমাতা'র!
"বিশ্বে ভারতকে সবার প্রথম স্থানে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। বুলেট ট্রেনের প্ল্যানও তাঁর। এখন প্রত্যেক ভারতবাসী ভারতীয় হওয়ার গর্ব অনুভব করেন। যার নেপথ্য নায়ক নরেন্দ্র মোদী। এই কারণেই আমি মোদীজিকে ভালবাসি", 'ব্র্যান্ড মোদী'র প্রচারে এই কথাগুলোই বলছে গুজরাটের 'বিজ্ঞপনী তরুণী'। 'আই লাভ মোদীজি' বলছে গুজরাটি যৌবন। আর এই হাইটেক প্রচারেই বিরোধীদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। বিকাশ যদি হয়েই থাকে তাহলে ঢাক পিটিয়ে বলার কী আছে? মানুষ তো চোখেই দেখতে পাবেন!
যদিও বিজেপির দাবি নরেন্দ্র মোদী মানে এখন-
- মেক ইন ইন্ডিয়া
- ডিজিটাল ইন্ডিয়া
- সার্জিক্যাল স্ট্রাইক
- নোটবন্দি
- জিএসটি
বিরোধীরা আরও একধাপ এগিয়ে কটাক্ষের সুরে বলছে, "মোদী মানে ২০০২-এর গুজরাট, গোধরাকাণ্ড"। তবে নমোর উত্থান প্রসঙ্গে শাসক বা বিরোধী, সবার কিন্তু একই মত, 'মোদী বেচতে জানেন।" উল্লেখ্য, বামেরা অতীতে অনেকবারই মোদীকে 'সেলসম্যান' বলেও কটাক্ষ করেছে।
শুরুটা হয়েছিল চা থেকেই। এরপর গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি। সেখান থেকে উল্কা গতিতে দেশের মসনদে বসেছেন তিনি। আর যেভাবে মোদী-অমিত শাহ জুটির অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটছে তাতে ভারত জয়ের আশায় বুক বেঁধেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু 'মোদী গড়ে'ই যে বেগ পেতে হতে পারে, তা কল্পনাই করেনি বিজেপি। পতিদার আন্দোলন, ঠাকুরদের দাবিদাওয়া এবং অনগ্রসর সংখ্যালঘুদের এককাট্টা করে বিরোধী কংগ্রেস চিন্তায় ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে। বিকাশ প্রশ্নেও দ্বিধা বিভিক্ত গুজরাট। ভোটের প্রচারে রাহুল গান্ধীও আদা জল খেয়ে নেমেছেন। এমন অবস্থায় 'বিকাশ রাজ্যে' প্রত্যাবর্তনে মরিয়া মোদী এবং অমিত শাহ। সেই মতই আলোকশয্যায় সেজে উঠেছে গুজরাট। 'আই লাভ মোদীজি' স্লোগানে জয়ের আশা দেখছে বিকাশ পুরুষও। তবে অনেকেই আবার বলছেন, আলোর নীচেই তো জমাট অন্ধকারের বাস। সেই আঁধারে পথ হারাতে হবে না তো!