কোটিপতি-অভিযুক্ত-মাধ্যমিক পাশ, গুজরাট মন্ত্রিসভায় সবাই হাজির!
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয়বারও বিজয় রূপানির ক্ষমতার কুর্সিতে বসার পিছনে সব থেকে বড় কারণ হিসাবে উঠে এসেছিল তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। অথচ সেই মন্ত্রীসভার এমন চেহারা দেখে এখন অনেকেই অবাক। সব মিলিয়ে হাই ভোল্টেজ নির্বাচন উত্তর গুজরাটে এখন চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে এই রিপোর্ট।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার মোদী-অমিত শাহের উপস্থিতিতে শপথ নিলেন বিজয় রূপানি-সহ ২০ মন্ত্রী। আর সেই মন্ত্রিসভা গঠনের মুহূর্ত থেকেই বিতর্কের মুখে পড়তে হল রূপানি সরকারকে। একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক রিফর্মস' (এডিআর)-এর প্রকাশিত একটি রিপোর্ট জানাচ্ছে, রূপানি মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা। এছাড়া অধিকাংশ মন্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। এই বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ হতেই বিজেপিকে কোণঠাসা করতে আদা-জল খেয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে কংগ্রেস।
আরও পড়ুন- নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই বাতিল হয়ে যাবে এই ব্যাঙ্কগুলির চেক বই
এডিআর-এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, রূপানি মন্ত্রিসভার সম্পত্তির গড় মূল্য ১৩.৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেশ কয়েক জন রয়েছেন কোটিপতির তালিকায়। বোতাদ বিধানসভা কেন্দ্রের সৌরভ যশবন্তভাই দালাল প্যাটেল হলেন রূপানির ক্যাবিনেটের সবচেয়ে ধনী মন্ত্রী। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২৩.৭৮ কোটি টাকা। ওই তালিকায় রয়েছেন ভাবনগর গ্রামীণ কেন্দ্রের পুরুষোত্তমভাই ওধাভজিভাই সোলাঙ্কি (৪৫.৯ কোটি), জেটপুর কেন্দ্রের রাদাদিয়া জয়েশভাই ভিত্তলভাই (২৮.৫ কোটি)-এর মতো বিধায়করা। তুলনায় সবচেয়ে কম সম্পত্তি রয়েছে দেবগধবারিয়া কেন্দ্রের খাবাদ বাচুভাই মগনভাই। তাঁর মোট সম্পত্তি হল ৩৫.৪৫ লক্ষ টাকার।
সম্পত্তির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছেন যে সব মন্ত্রী তারও তালিকা প্রকাশ করেছে এডিআর। ঋণ গ্রহণকারী মোট ১৩ মন্ত্রীর তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন ভিত্তলভাই। ১৬.০৪ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে এই বিজেপি মন্ত্রীর নামে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ১১ জন মন্ত্রীর স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। বাকি মন্ত্রীদের মধ্যে অনেকেই আবার উচ্চ মাধ্যমিক পাশও নন।
আরও পড়ুন- দায় নিল না সরকার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমারকে বরখাস্তের দাবিতে তোলপাড় সংসদ
এসবের পাশাপাশি রূপানির মন্ত্রিসভায় একজন মাত্র মহিলা, মন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁর নাম বিভাবরি দেব। নতুন মন্ত্রিসভার আর একটি পরিসংখ্যানও নজর কেড়েছে রাজনীতিবিদদের। নব গঠিত গুজরাট ক্যাবিনেটের গড় বয়স দেখা যাচ্ছে ৫৮ বছরের কাছাকাছি। প্রবীণতম সদস্য হিসাবে এই মন্ত্রীসভায় রয়েছেন ৬৯ বছর বয়সী প্রভাতভাই প্যাটেল। তিনি বেশ কয়েকটি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। অন্যদিকে জয়েশ রাদাদিয়া নামের মন্ত্রীর বয়সই কেবল ৪০-র নীচে।
আরও পড়ুন- ক্ষমা না চেয়েও মনমোহনের প্রতি 'মাথা নত' বিজেপির
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয়বারও বিজয় রূপানির ক্ষমতার কুর্সিতে বসার পিছনে সব থেকে বড় কারণ হিসাবে উঠে এসেছিল তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। অথচ সেই মন্ত্রীসভার এমন চেহারা দেখে এখন অনেকেই অবাক। সব মিলিয়ে হাই ভোল্টেজ নির্বাচন উত্তর গুজরাটে এখন চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে এই রিপোর্ট। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ মনে করছে, বিভিন্ন অংশের আশা আকাঙ্খাকে মান্যতা দিতে গিয়ে 'কোটা ব্যবস্থায়' ভরসা রাখার ফলেই মন্ত্রীসভার এমন ছবি উঠে এসেছে জনসমক্ষে। এখন দেখার, এই রিপোর্ট আগামী দিনের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ বা সম্ভাবনার জন্ম দিতে পারে কিনা।