"ভবিষ্যতের গর্ব মোরা,
অবহেলার যোগ্য নয়।
ছোট্ট দু'পায়েই ইচ্ছে হলে,
করতে পারি বিশ্বজয়।" 

- অমৃতা দে (গুপ্ত)


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


আগামীর বিশ্বজয়ের নাবিক যারা, তাঁদের জন্য যে দুর্জয় দুর্ভেদ্যকে জয় করতে হবে আমাদের- 



 


নিরাপত্তা 


 


শেষ দশ বছরে ভারতে শিশুর বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হবার প্রবণতা বেড়েছে ৫০০ গুণ। ২০০৫ সালে শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা সরাকরি ভাবে নথিভুক্ত হয়েছিল ১৪,৯৭৫। দশ বছরের মধ্যেই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪,১৭২। আগামী দিনে এই সংখ্যাটা কত হবে, তা ভাবলেই শিউড়ে উঠছে শরীর, বাড়ছে আশঙ্কা। শিশু মমনেও তৈরি হচ্ছে ভয়। নিজের দেশেই নিরাপত্তার অভাব অনুভব করছে শিশুরা। এমন একটা সমাজ সবার সমান দায়িত্বে গড়ে তোলা প্রয়োজন যেখানে শিশুর শৈশব চুরি যাবে না, জীবনশঙ্কায় ভুগতে হবে না কোনও শিশুকেই।


 



নিজের পায়ে দাঁড়ানো 


 


পৃথিবীতে যে দেশগুলোয় শিশু নিপীড়নের সংখ্যা সবথেকে বেশি হচ্ছে, সেইসব দেশের একটা তালিকা তৈরি করলে দেখা যাবে লজ্জার পরিসংখ্যান সঙ্গী করে ভারত অনেক দেশের থেকেই এগিয়ে রয়েছে। এই দেশে এখনও ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয় কিশোরীর। এই দেশে এখনও কন্যাভ্রুণ হত্যার মত অমানবিক 'সংস্কৃতি' মানুষের মধ্যে রয়েছে। 


 


২০০১ সাল পর্যন্ত ভারতে ১৪ বছরের আগে কিশোরীর বিয়ে হয়ে যাওয়ার ঘটনা সরকারি ভাবে নথিভুক্ত হয়েছে ৬৬,৬৪৯। এক দশকের মধ্যেই সংখ্যাটা আকাশ ছুঁয়েছে। ২০১১ সালের মধ্যে ভারতে ১৪ বছরেরও কম বয়সী নাবালিকার বিয়ের ঘটনা ঘটেছে ২৯,১৮,৭৭৪। এদের মধ্যে ৪,৫৭,০০৫ নাবালিকা মা'ও হয়েছে। সমাজ বিজ্ঞানীরা মনে করেন এর পিছনে রয়েছে অশিক্ষা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়োজন আবশ্যিক। গবেষকরা মনে করেন শিশুর সম্পূর্ণ শিক্ষা না হওয়া পর্যন্ত কখনই তাঁদের বিয়ের বন্ধনে বেঁধে ফেলা উচিত নয়। 


 



সকলের জন্য শিক্ষা, এই অধিকার পাক সবাই, এই দাবিই করছে ভারতের সমস্ত শিশু। 


 



শৈশব যেন চুরি না যায় 


 


এই তথ্য শুনলে গোটা ভারতবাসী লজ্জিত হবে। বর্তমান সময়ে ভারতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ১০ মিলিয়ন (১ কোটি)। যদিও ২০০১ সালে ভারতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা যা ছিল একদশকে, সেখান থেকে ২.২% শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কমেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সের প্রতি চার জন শিশুর মধ্যে একজন শ্রমিক। ১০ লাখের ওপর শিশু যারা এখনও তাঁদের নাম লিখতে পারে না (বয়স ৭ থেকে ১৪)। 


 



খাদ্য সুরক্ষা 


 


ভারত বিশ্বের সেই দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি যে দেশের অধিকাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। ভারতে রক্তাল্পতার শিকার ৭০ শতাংশ শিশু, যাদের বয়স পাঁচ বছরের থেকেও কম। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী শিশুদের অপুষ্টির মূল কারণই হলে মায়ের অপুষ্টি। ভারতে মা'য়েদের খালি পেট, অপুষ্টি আসলে ভারতকে ধীরে ধীরে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, এই ধ্রুবসত্যকে মেনে নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যার সমাধানে সবাইয়ের একত্রে ঝাঁপিয়ে পড়া একান্ত আবশ্যক। মা সুস্থ হলেই সুস্থ সন্তান প্রজনন সম্ভব, এই সরল সূত্র পৌঁছে দিতে হবে ঘরে ঘরে। শুধু তাই নয়, শিশু জন্মের পর যেন কোনও খাদ্য সঙ্কটে না ভোগে তার দায়ভার নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। 


 



সুস্বাস্থ্যের অধিকার সুরক্ষিত হোক 


 



শহর থেকে নগর, গ্রাম থেকে বন্দর সুচিকিৎসা থেকে যেন কোনও শিশু বঞ্চিত না হয়। ডাক্তার পৌঁছে দিতে হবে দ্বারে দ্বারে। এ দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। 


 


শিক্ষার অধিকারকে সুরক্ষিত করতে হবে


 


সকলের জন্য শিক্ষার অধিকার সুরক্ষিত করা। ভারতে প্রতি ১০০ শিশুর মধ্যে মাত্রে ৭২ জনই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হয়। সেখান থেকে গড়ে মাত্র ৪৮ জন শিশু মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারে। উচ্চ মাধ্যমিকে সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ৩৩ কিংবা তার কম। উচ্চ শিক্ষায় চেহারাটা আরও সংকীর্ণ। শিক্ষার ধাপ যত বাড়ে বেঞ্চগুলো থেকে কমতে থাকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এই অবস্থার বদল আনতে হবে, দরকার শিক্ষায় সাম্য। যার টাকা আছে সেই কেবল পড়াশুনা করবে, যার নেই সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে, তা চলবে না। শিক্ষা হবে সবার।   
 


             


বেটি বাঁচাও


 


২০১১ সালের আদমসুমারি পর্যন্ত, এদেশে ছেলে ও মেয়ে শিশুদের অনুপাত ১০০০:৯১৪। কন্যাভ্রুণ হত্যা ভারতে একটা সামাজিক ব্যাধি। এই সংক্রামক ব্যাধি দূর করতেই হবে। অর্ধেক নয়, গোটা আকাশের সমান অধিকার থাকবে নারী ও পুরুষেরই। সংরক্ষণের আড়ালে যেন না থাকে বঞ্চনা।
  


 


"Children are like buds in the garden & should be carefully & lovingly natured as the are the future of nation & citizens of tomorrow"- Jawaharlal Nehru


 



সৌজন্যে CRY