জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অগ্নিগর্ভ মণিপুর (Manipur)। নগ্ন করিয়ে দুই মহিলাকে হাঁটানোর পরে ফের খবরের শিরোনামে মণিপুর। কুকি সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির কাটা মুণ্ড রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেল। এর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। মণিপুর ক্রমশই দেশের মাথা হেঁট করে দিচ্ছে। মহিলাদের নগ্ন করিয়ে হাঁটানোর ঘটনায় প্রবল সমালোচনা দেশের সর্বত্র। এর পর মুণ্ডু কাটার ঘটনায় আরও একবার মুখ পুড়ল গোটা দেশের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: ভারতের কোন দু'টি শহর বিশ্বসেরা হল? কেনই-বা হল?


কুকি সম্প্রদায়-ভুক্ত যে-ব্যক্তির কাটা মুণ্ড পাওয়া গিয়েছে, তাঁকে শনাক্তও করা গিয়েছে। তাঁর নাম ডেভিড থিক। বিষ্ণুপুর জেলার এক লোকালয়ে একটি বাড়ির বাঁশের বেড়ার মাথায় তাঁর মুণ্ড টাঙানো থাকতে দেখা যায়। যা নিয়ে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়। জানা যায়, ২ জুলাইয়ের একটি সংঘর্ষের সময়ে তিনি নিহত হন।


কিছুদিন আগে দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মণিপুরে। হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়োও তোলা হয়। ভিডিয়োটি ৪ মে তোলা। সেই মহিলাদের গণধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। অভিযোগের আঙুল  মণিপুরের মেইতেই সম্প্রদায়ের দিকে। মণিপুর পুলিসের সুপার কে. মেগাচন্দ্র সিংয়ের তরফে একটি বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। ট্যুইট করে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ গোটা দেশের বিজেপিবিরোধী দলগুলি। 


সংশ্লিষ্ট ভিডিয়ো থেকে জানা যায়, দুই নির্যাতিতা কুকি সম্প্রদায়ভুক্ত। রাজ্যের জনজাতি সংগঠন আইটিএলএফ-এর তরফে বলা হয়েছে, কুকি-জো সম্প্রদায়ের দুই মহিলার উপরে অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে মেইতেইরা। গত ৪ মে কাংপোকপি জেলায় এই ঘটনা ঘটে। ওই দুই মহিলা কেঁদে কেঁদে কার্যত প্রাণভিক্ষা করেন। এর পরেও তাঁদের কথায় কান দেওয়া হয়নি। বরং দুই মহিলার উপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়। 


বিজেপিশাসিত মণিপুরের অশান্তি নিয়ে তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছে বেশ কয়েকটি বিরোধীদল। মণিপুর-পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের সঙ্গে বৈঠক হয় অমিত শাহের। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। বিরোধীদের একের পর এক আক্রমণের মুখে পড়ে অমিত শাহ সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতেও বাধ্য হয়েছেন। মণিপুরে যান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কিন্তু কোনও কিছুর ফলেই শান্তি ফেরেনি অশান্ত এই রাজ্যে।


আরও পড়ুন: দেশের দরিদ্রতম বিধায়ক বাংলার, অ্যাকাউন্টে ২০০০! ধনীতম ১৪০০ কোটির মালিক


বহুদিন ধরে গোষ্ঠীহিংসায় জর্জরিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্য। এর মধ্যে চূড়াচাঁদপুরের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। দু'মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। হিংসা থামার কোনও লক্ষণই নেই। মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়াই মেইতেই সম্প্রদায়ের দাবি। মেইতেইরা মণিপুরের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৫৩ শতাংশ। এঁরা মূলত ইম্ফল উপত্যকাতেই থাকেন। নাগা আর কুকি'রা মণিপুরের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ শতাংশ। এঁরাও মণিপুরের পাহাড়ি উপত্যকা অঞ্চলে থাকেন। মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তর তালিকায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে কিছুদিন আগে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল মণিপুর হাইকোর্ট। এর পরেই নতুন করে উত্তপ্ত হয় এই রাজ্য। হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিবাদে চূড়াচাঁদপুর জেলার তোরবাঙে 'অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর' (এটিএসইউএম) 'আদিবাসী সংহতি পদযাত্রা'র ডাক দিয়েছিল। সেখান থেকেই হিংসার সূত্রপাত হয়। সেই সূত্রপাত-মুহূর্ত থেকেই মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন এই হিংসার বলি হয়েছেন।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)