জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তিন দিন আগেই এই ঘটনার সাক্ষী ছিল বাংলা। এবার সেই একই ঘটনা ঘটল মধ্যপ্রদেশে। হাসপাতাল থেকে মেলেনি অ্য়াম্বুল্যান্স। মৃত মেয়েকে শেষপর্যন্ত বাইকে চাপিয়ে বাড়ি আনতে বাধ্য হলেন অভাবী বাবা। ঘটনা মধ্যপ্রদেশের শাহজদোলে। গত রবিবার শিলিগুড়ি থেকে বাসে মৃত সন্তানকে বাসে চাড়িয়ে নিয়ে যান কালিয়াগঞ্জের এক যুবক। তিনি তাঁর পাঁচ মাসের সন্তানকে ব্যাগে ভরেই বাসে উঠেছিলেন। তবে শাহদোলের ক্ষেত্রে ঘটনা একটু অন্যরকম।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়ার টাকা নেই, মৃত সন্তানকে ব্যাগে ভরে বাসে কালিয়াগঞ্জ ফিরলেন বাবা


শাহদোলের কোটা গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্ণণ গৌড় তাঁর ১৩ বছরের মেয়ে মাধুরীকে চিকিত্সার জন্য এনেছিলেন  জেলা হাসপাতালে। সিকল সেল নামে এক রোগে ভুগছিল মাধুরী। গত ১২ মে থেকে টানা ২ দিন হাসপাতালে তার চিকিত্সা হয়। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি। মাধুরী মৃত্য়ুর পর বাড়ি লোকজন অ্যাম্বুল্য়ান্সের খোঁজ করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তা পাওয়া যায়নি বলে লক্ষ্ণণের অভিযোগ। শেষপর্যন্ত উপায় না দেখে আত্মীয়ের বাইকেই মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য যাত্রা করেন।



সংবাদমাধ্যমে লক্ষ্ণণ বলেন, 'হাসপাতালে আমরা একটা অ্য়াম্বুল্য়ান্স চেয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বলা হয় অ্যাম্বুল্য়ান্স দেওয়া যেতে পারে ১৫ কিলোমিটারের জন্য। আমার বাড়ি ৭০ কিলোমিটার দূরে। ওরা আমাকে অন্য ব্যবস্থা করতে বলেন। টাকার অভাবের কারণে বাইকেই মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিই।'


এদিকে, বাইকে চাপিয়ে মৃতদেহ নিয়ে আসা হচ্ছে এই খবর পৌঁছে যায় জেলাশাসক বন্দনা বৈদ্যের কাছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই লক্ষ্মণকে আটাকান। তার জন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন। পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থাও করে দেন তিনি।


এরকমই ঘটনা রবিবার ঘটেছিল কালিয়াগঞ্জে।  টাকার অভাবে অ্য়াম্বুল্যান্স না পেয়ে মৃত শিশুকে ব্যাগে করে শিলিগুড়ি থেকে কালিয়াগঞ্জের বাড়ীতে ফিরলেন মৃত শিশুর অসহায় বাবা। ঘটনা জানাজানি হতেই জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই শিশুকে নিয়ে গিয়েছিলেন শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই ওই ৫ মাসের শিশুর মৃত্যু হয়। তার পরই শুরু হয় সমস্যা।


কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মুস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মার স্ত্রী যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। পাঁচ মাস পর দুই শিশু সন্তানের অসুস্থ হয়ে পড়ে। গত রবিবার তাদের দুইজনকেই কালিয়াগঞ্জ ষ্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের উত্তরবঙ্গ  মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।


চিকিৎসা চলাকালীন শনিবার রাতে মৃত্যু হয় অপর শিশুটির। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক অসীম দেবশর্মা অর্থের অভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কোন অ্যাম্বুলেন্স জোগার করতে পারেননি। শেষপর্যন্ত রবিবার ভোরে মৃত ছেলের মৃতদেহ একটি ব্যাগে ভরে বেসরকারি বাসে করে রায়গঞ্জ পৌছান। পরবর্তী সময়ে অপর একটি বাসে চেপে কালিয়াগঞ্জে ফেরেন। অসীম দেবশর্মা জানিয়েছেন, মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ৮ হাজার টাকা দাবী করে। এমনিতেই চিকিৎসা বাবদ ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। তাই বাসে করেই ছেলেকে নিয়ে বাড়ী ফিরেছেন।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)