নিজস্ব প্রতিবেদন: নিজামের শহরে নজিরবিহীন ঘটনা। বর্ষশেষের আগের রাতে মাত্র দু’মাসের মেয়ে খুঁজে পেল এক অন্য মা-কে। না তিনি গর্ভে ধারণ করেছেন, না লালন-পালন করেছেন। তবুও ওই শিশুর ‘এক রাতের মা’ তিনি-ই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রবিবার রাতের ঘটনা। হায়দরাবাদের ওসমানিয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে ওই কন্যা সন্তানকে আকষ্মিকভাবে পেয়ে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির হাতে শিশুটিকে ধরিয়ে তার মা বলে যান, ‘এক্ষুনি আসছি।’ কিন্তু কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও শিশুটিকে নিতে আসেনি ওই মহিলা। এ দিকে খিদেতে কান্না শুরু করে দেয় শিশুটি। শীতের রাতে এভাবে একা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে একটা সময় ভয় পেয়ে যান জনৈক ব্যক্তি। শিশুটির মায়ের অপেক্ষা না করে তিনি সোজা বাড়ি চলে আসেন। এর পর ফিডিং বোতলে দুধ খাওয়ানোর চেষ্টাও করেন। আত্মীয়-স্বজনকে ডাকেন। কিন্তু কোনওভাবেই শিশুটির কান্না থামানো যায়নি। শেষমেশ বন্ধুদের পরামর্শে আফজলগঞ্জ থানার দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি।


মহিলা কনস্টেবল। ছবি- এএনআই

থানায় কর্মরত কনস্টেবল এম রবিন্দর বিষয়টি বুঝেই সোজা ফোন লাগান তাঁর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে। তিনিও কনস্টেবল। পোস্টিং অন্য জায়গায়। তবে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে বাড়িতে রয়েছেন। ফোন পেয়েই ওত রাতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তাঁর স্ত্রী। এর পর শিশুটিকে কোলে নিয়ে নিজের বুকের দুধ খাওয়ান প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, “আমারও বাড়িতে ছোট্ট সন্তান রয়েছে। বুঝতে পারি, ওর ভীষণ খিদে পেয়েছিল। তাই কোনও কিছু না ভেবে এত রাতে চলে আসি।” শীতের রাতে উষ্ণ কোল আর বুকের দুধ পেয়ে ততক্ষণে কান্না থেমে গিয়েছে শিশুটির। এর পর ওই শিশুকে ভর্তি করা হয় পেটলাবুর্জের সরকারি প্রসূতি হাসপাতালে।  


এ বার নিশ্চিয়ই ভাবছেন কোথায় গেল  শিশুটির আসল মা?


ওই ব্যক্তির বয়ান অনুযায়ী শহরের আনাচে-কানাচে খোঁজ চালায় পুলিস। চঞ্চলগুড়া এলাকায় এক মহিলাকে কাঁদতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। শেষমেশ নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই মহিলাই শিশুটির মা। কিন্তু কেন শিশুটিকে নিতে এলেন না তিনি? মহিলার কথায়, ওই ব্যক্তিকে যে জায়গায় তাঁর সন্তানকে দিয়ে গিয়েছিলেন, পরে সেই জায়গাটিকে চিহ্নিত করতে পারেননি তিনি। পাগলের মতো খুঁজেছেন। তবে, পুলিসের দাবি, ওই মহিলা মদ্যপ ছিলেন। সোমবার ওই মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হয় শিশুটিকে।


কনস্টেবল দম্পতির এমন মানবিকতার পরিচয় দেওয়ার জন্য, তাঁদের পুরস্কৃত করার কথা ঘোষণা করেছে হায়দরাবাদ সিটি পুলিস। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর ভাইরাল হওয়ার পর, অনেকেই বলছেন ওই মহিলা ইতিমধ্যেই পুরস্কৃত হয়ে গিয়েছেন ‘এক রাতের মা’ হয়ে।