শুভ্রাংশু চট্টোপাধ্যায়: সেই কবে রাজগৃহ থেকে গঙ্গা পেরিয়ে বৈশালী এসেছিলেন বিম্বিসার। তখন যুবক বয়স। আম্রপালির তখন জগত্‍ জোড়া খ্যাতি। সেই সময় পেরিয়ে গেছে বহুদিন। বিম্বিসার বয়সভারে ধূসর। আম্রপালীও প্রব্রজ্যা নিয়েছেন।  সব থেকেও যেন কিছু নেই  জনগণপ্রজাতন্ত্র বৈশালীতে। আর্যাবর্তের ষোলো মহাজনপদে গণতন্ত্রের ধব্জাধারী লিচ্ছবীদের রাজধানী বৈশালী। সেই বৈশালী যেন আজও অম্লান। বিম্বিসার, অশোকের ধূসর জগত্‍ যেন আজও বাস্তব। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তবে ইতিহাসের সেই বৈশালী আজ হাজিপুরময়। গঙ্গার ওপারে রাজ্যবিস্তার করতে রাজগৃহ থেকে রাজধানী সরিয়ে পাটলিপুত্রে নিয়ে এসেছিলেন অজাতশত্রু। পাটলিপুত্র আজকের পাটনা। পাটনা থেকে লিচ্ছবী গণপ্রজাতন্ত্র দখল নেয় অজাতশত্রু। ইতিহাস রয়ে গেছে, বদল হয়নি ভূগোলের। সেই হাজিপুর, সেই মগধ, সেই পাটনা, ইতিহাস যেন আজও জীবিত। 


আরও পড়ুন: বিহারে ফের ক্ষমতায় নীতীশ,পেছনে কাজ করেছে এই ৫ ফ্যাক্টর!


বদলে গেছে চরিত্রগুলো। সেই যুদ্ধ আজ বদলেছে ভোট রাজনীতিতে। বদল হয়নি কূটনীতির-রাজনীতির। প্রাচীন বৈশালীর সদর দফতর হাজিপুর। হাজিপুরের চিরাগ পাসোয়ান বৃদ্ধ নীতীশ কুমারের রথের চাকা মাটিতে বসিয়ে দিয়েছে। নীতীশ কুমার আজ অশক্ত। যে বিম্বিসারের সুশাসনের কথা মহাজনপদে মুখে মুখে ঘুরত। সেই বিম্বিসারকে আমৃত্যু কাটাতে হয় কারাগারে। তরুণ অজাতশত্রু উদ্ধত রাজনীতিতে পরাস্ত করেছিল বিম্বিসারের ধ্রুপদীকে। 


চিরাগ পাসোয়ান সরাসরি রণভেরী বাজিয়েছেন নীতীশকে লক্ষ্য করে। অথচ রামনামের মতো মুখে জপেছেন মোদী নাম। নীতীশের দলের প্রার্থীদের দাঁড়ানো সমস্ত আসনে লড়াই করেছেন চিরাগ অর্থাত্‍ ১২২টি আসনে লড়েছে চিরাগের দল। ভোট গণনায় দেখা গেছে  নীতীশের পরাজিত ৩৮টি সিটে মার্জিন ভোটের থেকে বেশি পেয়েছে চিরাগের দল। দলভিত্তিক নিরিখে তিন নম্বরে চলে এসেছে নীতীশের দল জনতা দল ইউনাইটেড। 


সেই প্রবল প্রতাপান্বিত নীতীশ কুমারের আজ আর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় নেই। যদিও তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী করার কথা বলছেন  বিজেপির তাবড় শীর্ষ নেতারা। কিন্তু তবুও একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, যদি নীতীশকে  মুখ্যমন্ত্রী করার ভাবনায়  কোনও অস্বচ্ছতা ছিল না, তবে কেন চিরাগের বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে প্রচারে নামেনি বিজেপি? এখানেও সেই ধূসর  বিম্বিসারের অষ্পষ্ট ছায়া, বিম্বিসারের বন্ধু কোশল রাজ প্রসেনজিত অজাতশত্রুর সঙ্গে সখ্য করেছিলেন। চিরাগ পাসোয়নই কি শুধু ইতিহাসের ছায়া বইছে? সেই ইতিহাসের সঙ্গীতে তেজস্বী যাদবও। 


বৈশালী থেকে দ্বিতীয় ইউপিএ আমলে জয়ী হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী হয়েছিলেন রঘুবংশ প্রসাদ সিং। কর্পুরি ঠাকুরের আমলের সময় থেকে লালু প্রসাদের সঙ্গী রঘুবংশ। লালুপুত্র তেজস্বীর জন্য দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই তেজস্বীর আর জে ডি এবার বিহার নির্বাচনে সর্ব বৃহত্তম দল। আরও সঙ্কুচিত হয়েছে কংগ্রেস। ষোলটি সিটে জিতে আশার আলো দেখছে বামেরা। কোশী, গঙ্গা, গণ্ডক, বাগমতী সব নদী তীরেই গোবলয় রাজনীতির অন্য সুর। যেখানে যাদব রাজনীতি, জাতপাত রাজনীতির নৌপথে ভেসেছে ভল্গার নৌকাও। বর্তমানের বিহার