সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর রাজ্যের মর্যাদা জম্মু-কাশ্মীরকে, বিরোধীদের আশ্বাস PM Modi-র
জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) ৮টি রাজনৈতিক দলের ১৫ জন নেতা প্রধানমন্ত্রীর (PM Narendra Modi) ডাকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন এ দিনের বৈঠকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: জম্মু-কাশ্মীরকে (Jammu and Kashmir) রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। শুক্রবার ঘণ্টা তিনেক ধরে জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এই আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। বৈঠকে তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতে পারে। তবে দিল্লি থেকে দূরত্ব ও দিল কি দূরত্ব ঘোচানো দরকার। পরে টুইটারে প্রধানমন্ত্রী জানান, জম্মু-কাশ্মীরের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করাই অগ্রাধিকার। ভোটগ্রহণের জন্য দ্রুত সারতে হবে সীমানা পুনর্বিন্যাস।
জম্মু-কাশ্মীরের ৮টি রাজনৈতিক দলের ১৫ জন নেতা প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন এ দিনের বৈঠকে। এর মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের ৪ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও। সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) প্রতিশ্রুতি দেন, উপযুক্ত সময়ে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। নির্বাচনের জন্য সীমানা পুনর্বিন্যাসে সকলের অংশগ্রহণ চান মোদী। সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনও পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি টুইটারে লেখেন, 'জম্মু-কাশ্মীরের গণতন্ত্রকে তৃণমূলস্তর পর্যন্ত শক্তিশালী করাই আমাদের অগ্রাধিকার। সীমানা পুনর্বিন্যাস যত শীঘ্র সম্ভব হওয়া দরকার। যাতে উন্নয়ন তরান্বিত করতে নির্বাচিত সরকার পায় জম্মু-কাশ্মীর।' মতের আদানপ্রদান গণতন্ত্রের সর্বোত্তম শক্তি বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) লেখেন, জম্মু-কাশ্মীরের সর্বাত্মক উন্নয়নে আমরা দায়বদ্ধ। জম্মু-কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদে দেওয়া রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় সীমানা পুনর্বিন্যাস ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে এ দিন নিজেদের অসন্তোষের কথা বৈঠতে তুলে ধরেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরা। ওমর আবদুল্লার (Omar Abdullah) কথায়,'২০১৯-র ৫ অগাস্ট যা হয়েছে তা আমরা সমর্থন করি না বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আইন হাতে তুলে নেব না। আদালতেই লড়াই করব। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিশ্বাসভঙ্গ হয়েছে। তা ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রের।
আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি (Mehbuba Mufti) বলেন, '২০১৯-র ৫ অগাস্টের পর জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষদের সমস্যা বেড়েছে। তাঁরা ক্ষুব্ধ, হতাশ এবং আবেগতাড়িতভাবে ছিন্নভিন্ন। যেভাবে অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহার করা হয়েছে তা অসাংবিধানিক, অনৈতিক ও বেআইনি। এটাই প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি।'
কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad) বলেন,'৫টি দাবি আমরা বৈঠকে রেখেছি। রাজ্যের মর্যাদা, গণতন্ত্র ফেরাতে বিধানসভা ভোট, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বাসন, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও বাসস্থান আইনে বদল।'
সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে সকলের কথা মন দিয়ে শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী (PM Modi)। তাঁরা যেভাবে সততার সঙ্গে নিজেদের মতামত তুলে ধরছেন তা নিয়ে সন্তোষপ্রকাশ করেছেন তিনি। বলে রাখি, ২০১৯ সালে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের পর জম্মু-কাশ্মীরকে (Jammu and Kashmir) দু'ভাগে ভাগ করে কেন্দ্রীয় সরকার। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ পরিণত হয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানায় কেন্দ্র। সেই ভাবনাই বাস্তবায়নের পথে বলে মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন- BJP-র আর্জি খারিজ স্পিকারের, পিএসি কমিটিতে 'মুকুলিত' কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক