জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আজ বিজয় দিবস। আজ থেকে ঠিক ২৪ বছর আগে, ১৯৯৯ সালে কার্গিলে পাকিস্তানকে পরাস্ত করেছিল ভারতের বীর সেনানীরা। ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে হঠাৎই পড়েছিল পাক সেনা। কার্গিল এলাকায় বিভিন্ন 'কি' পয়েন্ট দখল করে নেয় তারা। যা কিনা অবশ্যম্ভাবী যুদ্ধকে ডেকে আনে। প্রায় ৩ মাস ধরে চলেছিল যুদ্ধ। শেষে ভারতের কাছে নতিস্বীকার করে পাকিস্তান। ভারত বিজয়ী হয়। আজ বিজয় দিবসে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কার্গিল যুদ্ধের কিছু অজানা তথ্য:


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

১) কার্গিল যুদ্ধ কেন হয়েছিল?
লাদাখের (তৎকালীন জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ) কার্গিল জেলায় ৮ মে, ১৯৯৯ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯৮ সালে শীতকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। অনুপ্রবেশকারীরা কার্গিলে দ্রাসের পাশাপাশি লাদাখের বাটালিক সেক্টরেও ঢুকে পড়েছিল। কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ ও আক্রমণ করাই ছিল অনুপ্রবেশকারীদের মূল লক্ষ্য।


২) অপারেশন বিজয়
অপারেশন বিজয় ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্যবহার করা কোড নেম। আক্রমণকারীদের বিতাড়িত করা এবং কার্গিলে পাক সেনা অধিকৃত ভারতীয় অঞ্চল পুনরুদ্ধারের অভিযানের কোড নাম।


৩) কার্গিল যুদ্ধের কৌশল
কার্গিল যুদ্ধ তিনটি পর্বে সংঘটিত হয়েছিল। প্রথম, পাকিস্তান কর্তৃক দখলকৃত কৌশলগত অবস্থানগুলি চিহ্নিত করা এবং সেই গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলি পুনরুদ্ধার করা। এর মধ্যে NH1-A মুক্ত করাও ছিল, যাতে ওই রুটে সামরিক যান চলাচল করতে পারে। দ্বিতীয় দখলকৃত এলাকা থেকে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া। তিন পুনরুদ্ধার করা অঞ্চলে সামরিক দখল বজায় রাখা, যাতে অনুপ্রবেশকারীরা আবার দখল করার চেষ্টা না করে।


৪) দুর্গম চড়াই-উতরাই
প্রবল ঠান্ডায় লাদাখের কঠিন পরিবেশে হয়েছিল কার্গিল যুদ্ধ। তাই ভিনদেশি শত্রুর পাশাপাশি ভারতীয় সেনাকে লড়তে হয়েছিল দুর্গম ও কঠিন প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গেও। যে কারণে এই যুদ্ধ ভীষণভাবেই চ্যালেঞ্জিং ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে। কিছু পোস্ট যেমন ১৮ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত ছিল।


৫) হতাহত
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে প্রায় ৫০০ ভারতীয় সৈন্য কার্গিল যুদ্ধে শহিদ হন। নিহত হন কমপক্ষে হাজার পাকিস্তানি সেনা। 


৬) কার্গিল যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র
কার্গিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রথমে বোফর্স FH-77B হাউইটজার ব্যবহার করে পাহাড়ের চূড়ায় শত্রুদের অবস্থানগুলিকে চিহ্নিত করে। রিপোর্ট অনুযায়ী, যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনী ৩০০টি বন্দুক এবং মর্টার থেকে প্রায় ৫ হাজার আর্টিলারি শেল, রকেট এবং বোমা নিক্ষেপ করে। এছাড়াও, প্রায় আড়াই লাখ শেল এবং রকেটও নিক্ষেপ করা হয়েছিল। যুদ্ধের সময় ইজরায়েল ভারতকে তাদের স্বয়ংক্রিয় এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি) সরবরাহ করেছিল।


৭) IAF-এর ভূমিকা
ভারতীয় বিমানবাহিনী (IAF) যুদ্ধে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আইএএফ প্রথমে প্রধান শত্রু অবস্থানে বোমাবর্ষণ করে, পাশাপাশি স্থলবাহিনীকে বিমান সহায়তা প্রদান করে। ভারতীয় বায়ুসেনাও লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলার মাধ্যমে শত্রুদের দখলে থাকা কৌশলগত অবস্থানগুলি ধ্বংস করেছিল।


৮) টিভিতে লাইভ
কার্গিল যুদ্ধ ছিল ভারতে টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত প্রথম যুদ্ধ। লাইভ কভারেজ নাগরিকদের গ্রাউন্ড জিরো থেকে লাইভ আপডেট প্রদান করেছিল।


৯) ভারত কর্তৃক পুনরুদ্ধার করা এলাকা
ভারতীয় সেনাবাহিনী সফল সামরিক অভিযানে টাইগার হিল, পয়েন্ট ৪৮৭৫ এবং টোলোলিং সহ কৌশলগত এলাকাগুলি পুনরুদ্ধার করে। 


১০) সামরিক সম্মানে ভূষিত
কারগিল যুদ্ধের বীর সেনাদের ভারত সরকার বীরত্বের পুরস্কারে ভূষিত ও সম্মানিত করে। আইএএফ-এর ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রা যিনি জাতির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁকে মরণোত্তর পরমবীর চক্র - ভারতের সর্বোচ্চ বীরত্ব পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।  মরণোত্তর পরমবীর চক্র পান লেফটেন্যান্ট মনোজ কুমার পান্ডেও। এছাড়া রাইফেলম্যান সঞ্জয় কুমার এবং গ্রেনেডিয়ার যোগেন্দ্র সিং যাদবকেও পরমবীর চক্রে সম্মানিত করা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল ১১টি মহাবীর চক্রও।


আরও পড়ুন, Manipur Violence: অশান্ত মণিপুর! কিন্তু কেন? জেনে নিন...



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)