নিজস্ব প্রতিবেদন: জম্মু-কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতি অজানা নয় দেশের। সীমান্ত থেকে সন্ত্রাস সমস্যা, রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে একাধিকবার। সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মুকাশ্মীরকে ভারতীয় সংবিধানের আওতামুক্ত রাখা হয়েছিল। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই জম্মু ও কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয় ২০১৯ সালে। আর এরপর ভূস্বর্গের বেশ কিছু এলাকায় বদলের চিত্র চোখে পড়ে। যার মধ্যে রয়েছে সোপিয়ান।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই অঞ্চলটি 'কুখ্যাত' ছিল 'স্টোন পেল্টিং জোন' (ইট ও পাথর মারা) হিসেবে। ২০১৯ সালে পর ২০২১ সালে সেই ছবিতে বেশ বদল। কুখ্যাত এলাকাটি আজ শান্তির সাক্ষী বহন করছে। একসময় যারা হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িত ছিলেন সেই স্থানীয় যুবকরা আজ সমাজের মূল স্রোতে ফিরছে। যে জেলা বেশ কয়েক বছর ধরে পাথর ছোঁড়ার জন্য কুখ্যাত ছিল, এখন সেখানে পরিবর্তনের হাওয়া। 


কাশ্মীরবাসীর মতে আইন বদলে তাঁদের জীবনে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। জীবন যাত্রায় বদল এসেছে। ইতিহাস জানায়, ১৯৮৯ সালে সোপিয়ানকে সন্ত্রাসবাদের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে বিবেচনা করা হত। দিনে ৫০ থেকে ৬০টি হ্যান্ড গ্রেনেডের আওয়াজে উত্তপ্ত থাকত গোটা এলাকা। অথচ এই জেলাই বিখ্যাত ছিল আপেল বাগানের জন্য। সেই সৌন্দর্যকে হাতিয়ার করেই চলত সন্ত্রাসী কাজ। সুরক্ষা বাহিনী থেকে বাঁচতে এই বাগানগুলিকে নিরাপদ আস্তানা হিসেবে তৈরি করেছিল জঙ্গিগোষ্ঠীরা। 


আরও পড়ুন, 'সরকারের জেদের জন্য সংসদে আলোচনা হচ্ছে না', Pegasus ইস্য়ুতে তোপ Adhir-এর


কেন সন্ত্রাসী এলাকা হয়ে উঠেছিল সোপিয়ান? এখানের বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী। সুযোগের অভাবে এবং স্থানীয় রাজনীতির কারণে একাধিক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন সোপিয়ানবাসীরা। একসময় দু'হাত তুলে দেখলেন কিছু অবশিষ্ট নেই। পিঠ ঠেকেছে দেওয়ালে। সেই ভাবনাকেই ব্যবহার করলেন সন্ত্রাসীরা। এলাকাবাসীর অশান্তি, অসন্তুষ্টি এবং ক্ষোভকে ব্যবহার করা হল দেশের বিরুদ্ধেই। ক্ষোভের বারুদে দেওয়া হল সন্ত্রাসী আগুন। 


এই জেলার ভৌগলিক অবস্থান এর ফলে পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারীরাও সহজেই প্রবেশ করতে পারত। সীমান্ত এই এলাকা থেকে ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটারের দূরত্বে। যুবকদের মধ্যে এত বিদ্বেষ ছিল যে তারা সেনাবাহিনী দেখলেই পাথর ছুঁড়ে তাদের ক্ষোভ প্রদর্শন করত। কিন্তু পরিস্থিতি বদলাল ৩৭০ ধারা বাতিলে। সরকারি নানা উদ্যোগে সামিল করা হল যুবকদের। স্টার্ট-আপ এবং অন্যান্য কর্মসংস্থানের মধ্যে নিয়ে আসা হল তাঁদের। 


উপত্যকার একাধিক পরিবার সরকারী প্রকল্পগুলির সুবিধা গ্রহণ করতে শুরু করেছে। পাথর ছুড়ে জীবন কাটানোর বদলে অর্থনৈতিক কর্মসংস্থানের পথ বেছে নিয়েছে তাঁরা। বদলের হাওয়াই এখন প্রাণ ভরে অনুভব করতে চাইছেন সোপিয়ানবাসী।