নিজস্ব প্রতিবেদন: নিজের সিংহাসন পোক্ত করে এ বার গোটা দেশের বিরোধী শক্তিকে চাঙ্গা করতে বেরোলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। সপ্তাহভরের সফর। যার জন্য বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করেছে তাঁর দল তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি। লক্ষ্য ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হঠানো।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পর পালে হাওয়া পেয়েছে বিরোধী শক্তি। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিসগড়ে জয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী রাহুল গান্ধী। এরই মধ্যে তেলেঙ্গানায় একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেছেন কেসিআর। প্রথম থেকেই অবিজেপি - অকংগ্রেসি দলগুলি নিয়ে মমতার ফেডারাল ফ্রন্টের অন্যতম শরিক ছিলেন চন্দ্রশেখর রাও। ফলে ২০১৯-এর নির্বাচনের পর তাঁর কী ভূমিকা হতে চলেছে, সেবিষয়ে কৌতুহল রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।


আরও পড়ুন- ঘন কুয়াশায় হাইওয়েতে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা; নিহত ৮, তালগোল পাকিয়ে গেল ৫০ গাড়ি


রবিবার ভুবেনেশ্বরে পৌঁছে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে দেখা করেছেন কেসিআর। বৈঠকের পর পট্টনায়েকের যদিও দাবি, রাজনীতি বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। এমনকি ফেডেরাল ফ্রন্ট নিয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। বলে রাখি, ২০০৯-র একদা এনডিএ শরিক বিজু জনতা দলের (বিজেডি) সুপ্রিমো নবীন পট্টনায়েক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএকে যেমন সমর্থন জানিয়েছিলেন, আবার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে দূরে থেকেছেন তিনি। অন্য দিকে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটা ফোনেই এনডিএ-কে সমর্থন করেন নবীন পট্টনায়েক। অর্থাত্ বিজেপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে সমান দূরত্ব নিয়ে এগিয়ে চলছেন প্রায় দু’দশক ধরে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা পট্টনায়েক। তাই নবীন কোন দিকে ঝুঁকবেন এই মুহূর্তে বলা মুশকিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।



পুরী দর্শন সেরে আজই সোজা নবান্নে পৌঁছছেন কেসিআর। সোমবারই ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন তিনি। এর আগে কেসিআরকে সঙ্গে নিয়ে ফেডেরাল ফ্রন্টের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল, বিজেপিকে রুখতে যে রাজ্যে যারা শক্তিশালী, তারাই এককভাবে লড়ুক। পাশাপাশি রাহুলের নেতৃত্বে মহাজোটে সে ভাবে সাড়া দিতে দেখা যায়নি মমতাকে। এমনকি ছত্তিসগড়, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নিজে উপস্থিত না থেকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে ক্ষান্ত থেকেছেন তিনি। তেলঙ্গানায় জয়ে কেসিআর-কে তৃণমূল নেত্রী শুভেচ্ছা বার্তা পাঠালে রাহুলকে উপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে।


আরও পড়ুন- ক্ষমতার 'অক্সিজেন' ছাড়া অনেক নেতাই বাঁচতে পারেন না, বিরোধীদের তোপ মোদীর


রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, রাহুলের নেতৃত্বকে মমতা মেনে নেবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, রাহুল গান্ধীকে যখন ডিএমকে সুপ্রিমো স্টালিন প্রধানমন্ত্রীর মুখ ঘোষণা করে, মমতার স্পষ্ট বার্তা দেন, নির্বাচনের পরই আসন নিরিখেই প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। নির্বাচনের পরে ৪২ টার মধ্যে ক’টি আসন নিয়ে তিনিও প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে থাকেন, সেটা দেখে নিতে চান তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই, ফেডেরাল ফ্রন্ট নিয়ে আজকের মমতা-কেসিআরের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে জাতীয় রাজনীতিতে।



মমতার সঙ্গে বৈঠকের পরই কেসিআর সোজা যোগীর রাজ্যে রওনা দেবেন মায়াবাতী-অখিলেশের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশে। এই মুহূর্তে মায়াবতীর ‘মায়াজালে’ সন্দিহান অবিজেপি দলগুলি। বিজেপিকে সমর্থন করবে না সে বিষয়ে স্পষ্ট করলেও, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব মেনে নেওয়া নিয়ে অবস্থান খোলসা করেননি তিনি। মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে যেমন কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়েছেন, আবার বিরোধী দলের বৈঠকে বিরত থেকে ধোঁয়াশায় রেখেছেন তাঁর অবস্থান। উত্তর প্রদেশে অখিলেশের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়তে দেখা গেলেও, সদ্য পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনে একাই লড়েছেন মায়াবতী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে রাখছেন মায়াবতী। তাই বহনজি ফেডেরাল ফ্রন্টে কতখানি সাড়া দেবেন , সে বিষয়ে যথেষ্ট ধন্দে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্য দিকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ধরাশায়ী করতে মায়াবতীর সঙ্গেই হাঁটতে চাইছেন অখিলেশ। তিনিও বিরোধী দলের বৈঠকে উপস্থিত না থেকে সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছে ওয়াকিফহাল মহল। এখন দেখার, কেসিআর-র এই রাজ্য ভ্রমণ কতখানি সদর্থক বার্তা দিতে পারে ফেডেরাল ফ্রন্টে।