কোহিনুর কাহিনী
কোহিনুর কী ফিরবে ভারতে? এই মহামূল্যবান হিরে যা আসলে ভারতের, যা এখন ইংল্যাণ্ডে সে কী ফিরবে না কোনও দিন? আপাতত এই নিয়েই তেতে রয়েছে দেশের রাজধানী। সম্প্রতি এই বিষয়ে আরেকটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে।
ওয়েব ডেস্ক: কোহিনুর কী ফিরবে ভারতে? এই মহামূল্যবান হিরে যা আসলে ভারতের, যা এখন ইংল্যাণ্ডে সে কী ফিরবে না কোনও দিন? আপাতত এই নিয়েই তেতে রয়েছে দেশের রাজধানী। সম্প্রতি এই বিষয়ে আরেকটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে।
আসল দ্বন্দ্বটা হল একটা প্রশ্নকে ঘিরেই। সেই প্রশ্নটা হল, কোহিনুর কী ইংল্যাণ্ডের রাণীকে উপহার হিসাবে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল নাকি ইংল্যাণ্ড এই মূবল্যবান রত্নটি ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল?
কিছুদিন আগেই, দিল্লির একটি এনজিও সুপ্রিমকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে যেখানে আবেদন করা হয় যে ভারতের এই মহামূল্যবান কোহিনুর ইংল্যাণ্ডের ফেরত দেওয়া উচিত আর তা ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারের এই বিষয়ে কার্জকারী পদক্ষেপ নিয়ে বিষয়টিকে জাতীপুঞ্জ বা ঐজাতীয় আন্তর্জাতীক স্তরে উথ্থাপন করতে হবে। সুপ্রিমকোর্ট তখন এই বিষয়ে কেন্দ্রের মতামত জানতে চায়।
কেন্দ্রের তরফ থেকে সলিসিটর জেনারেল জানায় যে, কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রক মনে করছে, কোহিনুর ফেরত আনার চেষ্টা করা ঠিক নয়। কারণ, ওই হিরে চুরি করে ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া হয়নি। কেউ তা জোর করে ছিনিয়েও নেয়নি। ব্রিটিশদের এ’টি উপহার দেওয়া হয়েছিল। সলিসিটর জেনারেলের এই কথা শুনে তাজ্জব বনে যান প্রধান বিচারপতি টি.এস.ঠাকুর। ঠাকুর বলেন, ‘‘যা বলছেন, তার অর্থ বুঝতে পারছেন তো! ভবিষ্যতে কোহিনুর হিরে নিয়ে আইনিপথে দাবি জানাতে কিন্তু সমস্যা হবে এতে! ওরাই (ব্রিটেন) বলবে, আপনাদের দেশের আদালতই তো কোহিনুর ফেরানোর আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।’’
সংস্কৃতি মন্ত্রকের যুক্তি, পঞ্জাবের মহারাজা রঞ্জিত সিংহ আফগান শাসকের থেকে কোহিনুর হিরে পেয়েছিলেন। তিনি তা উইল করে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে দিয়ে যান। কিন্তু তাঁর উত্তরসূরি দলীপ সিংহ ১৮৫০-এ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে এ’টি তুলে দেন।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ১৮৫০-এ দলীপ সিংহ ছিলেন নাবালক। দ্বিতীয় ব্রিটিশ-শিখ যুদ্ধের পর শিখদের হারিয়ে ব্রিটিশরা শিখ সাম্রাজ্য দখল করে। তার জন্য লর্ড ডালহৌসি লাহৌরের শেষ চুক্তি তৈরি করেন। সেই চুক্তিতেই কোহিনুর-সহ মহারাজার যাবতীয় সম্পত্তি ইংল্যান্ডের মহারানি ভিক্টোরিয়াকে সমর্পণের কথা বলা হয়েছিল।
এবিষয়ে বিচারপতি ঠাকুর জানিয়েছেন যে দীর্ঘ সুনানির দরকার। আর তাতেই খুব উচ্ছসিত দেখিয়েছে সুখেন্দু শেখর রায়কে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁরা ১৮৪৬ ও ১৮৪৯, দু’টি চুক্তির খসড়াই জোগাড় করেছেন ও তা আদালতে জমা দিয়েছেন। তাঁর মতে দ্বিতীয় চুক্তিটিই (তখন, দলীপ সিংহের বয়স ১১ বছর) অধিক গুরুত্বপূর্ণ যেখানে বলা আছে মহারাজা যাবতীয় সম্পদ মহারাণীর কাছে সমর্পণ করবেন এবং মহারাজার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। পেশায় আইনজিবী সুখেন্দু শেখরের মতে ‘সমর্পণ’ এবং ‘বাজেয়াপ্ত’ শব্দগুলি কখনই উপহার অর্থে ব্যবহার করা হয় না।
নিউজ টেলিভিশন অ্যাওয়ার্ডস ২০১৬ : 'বেস্ট নিউজ চ্যানেল ওয়েবসাইট' Zeenews.com
এখন দেখার ভারতের জনসাধারণের আবেগ ও গর্বের কহিনুর আদৌ দেশে ফেরে কিনা আর ফিরলেও তা কতদিনে?