নিজস্ব প্রতিবেদন: সাড়ে ছয় দশকের বন্ধুত্বে ছেদ। এই মুহূর্তে তাই কাথা বলার মতো অবস্থায় নেই সাথীহারা লালকৃষ্ণ আডবাণী। শুক্রবার বিকাল থেকেই অব্যক্ত যন্ত্রণা মনকে বারবার টেনে নিয়ে গিয়েছে অতল স্মৃতির গহ্বরে...থেকে থেকেই চোখের কোণ ভিজে গিয়েছে লৌহমানবের। ৬ কৃষ্ণ মেনন মার্গে অটল বিহারী বাজপেয়ীর বাসভবনে বসার ঘরে ততক্ষণে চলে এসেছেন একদা জোটসঙ্গী, অধুনা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভেঙে পড়া আডবাণী অনুজ মমতাকে বললেন, "চলো, দর্শণ করে আসি"। তবে মমতাও বিলক্ষণ জানেন, বাজপেয়ী-আডবাণীর বন্ধুত্বের গাঢ়ত্ব। ফলে সহজেই অনুমেয়, ঠিক কতটা যন্ত্রণা পেয়েছেন জুটি ভেঙে যাওয়া বন্ধু লালকৃষ্ণ। তাই হয়ত মমতা বললেন, "আপনি আগে যান, আমি পরে যাচ্ছি"।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সঙ্ঘ প্রচারক হিসাবে কাজ করার সময় থেকে বাজপেয়ী-আডবাণী বন্ধুত্ব। একদা এই দুই তরুণের মধ্যেই ভবিষ্যতের নেতাকে দেখেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মী হিসাবে অন্তরালে কাটানো দিন থেকে রাজনীতির রাজপথ, দীর্ঘকালের সফর সঙ্গীকে হারিয়ে এ দিন লালকৃষ্ণ আডবাণী স্মৃতি মেদুর। প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারীর সহকারী হিসাবে সরকার চালানোর দুর্লভ অভিজ্ঞতার অধিকারী বলছেন, "আমার কোনও প্রস্তাবে কখনও না বলতেন না। আর না বলতেন না বলেই আমার উপর চাপ বেড়ে গিয়েছিল। কিছু বলার আগে বারবার ভাবতাম,  আমার এটা বলা ঠিক হচ্ছে তো!" আরও পড়ুন- বান্ধবীর মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন ‘সিঙ্গল ফাদার’ বাজপেয়ী


আডবাণী মনে করেন, বাজপেয়ী এমন এক নেতা ছিলেন, যাঁকে দলের কর্মীরা ভয় পেতেন না, বরং ভালোবাসতেন। বিজেপি-র অন্দরে এবং বাইরে তাঁর সমান গ্রহণযোগ্যতা ছিল। তবে বাগ্মীতার বিষয়ে তিনি যে মোটেই বাজপেয়ীর সমতুল্য ছিলেন না, সে কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন এল.কে. আডবাণী। আডবাণী মনে করেন, বক্তৃতা ও শব্দ চয়নের মাধ্যমে বিরোধীদেরও নিজের পক্ষে টেনে নিয়ে আসার বিরল ক্ষমতা ছিল বাজপেয়ীর। আরও পড়ুন- বাজপেয়ীর শেষকৃত্যে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে পাকিস্তান


স্মৃতির গভীরে ডুব দিয়ে আডবাণী মনে করতে পারছেন এক অতি তাত্পর্যপূর্ণ ঘটনা। ভোটে পর্যুদস্ত হয়েছে জনসঙ্ঘ। দলের এমন হতাশাজনক ফলাফলের পর পাহাড়গঞ্জ এলাকায় হাঁটছিলেন বাজপেয়ী ও আডবাণী। হঠাত্ তাঁরা দেখেন, স্থানীয় একটা সিনামা হলে রাজ কাপুরের 'ফির সুবহ হোগি' নামের একটি ছবি চলছে। ছবির নাম দেখেই উত্সাহিত হন বাজপেয়ী। এরপর দু'জনে সিনেমাটি দেখেন এবং বেশ অনুপ্রাণিত হন। এরপর বিজেপি-র রাজনৈতিক সাফল্য তো ইতিহাস।