নিজস্ব প্রতিবেদন : পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের নির্বাচন ছিল ২০১৯-এর প্রথমভাগে। সারা বিশ্বের নজর ছিল সেদিকে। কী হবে? দিল্লির মসনদে কি কোনও পালাবদল ঘটবে? নাকি ফের জয় হাসিল করবে মোদি ম্যাজিক? শেষমেশ ২৩ মে ভোটের ফল বেরতে দেখা যায়, একাই ৩০০ হাঁকিয়েছে বিজেপি। দিল্লিতে গঠন হয় মোদী ২.০ ক্যাবিনেট। বিপুল ভোটে জয়লাভের জন্য বিশ্ব রাজনৈতিক নেতৃত্বের বাহবা, প্রশংসা কুড়োন নরেন্দ্র মোদী। এর ঠিক ২ মাস পরই মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণায় ভারতের মুকুটে যুক্ত হয় নতুন পালক। আর তার ৩ মাস পরই এক বাঙালির হাত ধরে 'ভারত আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন' পায়। নোবেল মঞ্চে ভারতের জয়জয়কার ধ্বনিত হয়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চন্দ্রযান-২
২২ জুলাই দুপুর ২টো ৪৩ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে চাঁদের উদ্দেশে রওনা দেয় চন্দ্রযান-২। ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানকে উড়ে যায় রকেট বাহুবলী। নাসার চেয়ে অনেক কম খরচে এই অভিযান প্রশংসা কুড়ায় সারা বিশ্বের। চন্দ্রযান-২ অভিযানে ইসরোর খরচ হয়েছিল প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা। যেখানে এই ধরনের মিশনে নাসা প্রায় ৪,৬০০ কোটি টাকা খরচ করে। খরচের খতিয়ানে নাসাকে দশ গোল দেয় ইসরো। সম্পূ্র্ণ ভারতে বানানো চন্দ্রযান-২-এর ওজন ৩.৮ টন।


ঠিক ছিল চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফ্ট ল্যান্ডিং করবে ল্যান্ডার বিক্রম। ৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের কথা ছিল বিক্রমের। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গিয়ে ছন্দপতন ঘটে। বিক্রমের সঙ্গে সংযোগ হারায় ইসরোর কন্ট্রোল রুম। তারপর প্রধানমন্ত্রী মোদীকে জড়িয়ে ইসরো কর্তা কে. শিবনের কান্নায় ভেঙে পড়ার ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মাধ্যমে। তবে চন্দ্রপৃষ্ঠে 'বিক্রম' বিক্রম দেখাতে না পারলেও, ইসরোর এই অভিযান তামাম বিশ্বের বাহবা কুড়ায়।


অর্থনীতিতে নোবেল
ভাঁড়ারে যাতে লক্ষ্মীর আনাগোনা লেগে থাকে, সেই প্রার্থনায় সবে কোজাগরীর পুজো করে উঠেছে বাঙালি। দুর্গাপুজো কেটেছে। সামনে দীপাবলি। পুজো পুজো মুড চারদিকে। ঠিক তখনই সুইডেনের স্টকহোম থেকে উড়ে এল আনন্দবার্তা। ২০১৯-এ অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন এক বাঙালি, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্ত্রী এস্থার ডুফলো ও আরেক অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমারের সঙ্গে যুগ্মভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার জিতে নেন এমআইটি-র অধ্যাপক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেন পেলেন অভিজিৎ বাবু।


আরও পড়ুন, ফিরে দেখা ২০১৯: শক্তি বাড়লেও বাংলায় বিজেপির 'মুখ'-এর খোঁজ, তৃণমূলের লড়াই 'অস্তিত্বরক্ষা'র


ফের একবার বিশ্বের দরবারে বাঙালি তথা ভারতবাসীর মাথা উঁচু হয়। ছেলের সাফল্যে গর্বিত মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় হিন্দুস্থান পার্কের বাড়িতে বসে বলেন,  'আমার ছেলে নয়, দেশের ছেলে অভিজিৎ।' বলেন,  অর্থনীতির খুব জটিল বিষয় খুব সুন্দর ও সহজভাবে বুঝিয়ে দিতে পারেন অভিজিৎ। জানান, অভিজিৎবাবুর একটাই কথা গরিবি কমাতে গেলে, তাঁদের উন্নতিসাধন করতে গেলে, তাঁদেরকেই তাঁদের কথা বলতে দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ব দ্রারিদ্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্স নিয়ে পরীক্ষামূলক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন অভিজিৎ বাবু। সেই পরীক্ষামূলক গবেষণার স্বীকৃতিতেই ২০১৯-এ এল নোবেল। যদিও নোবেলজয়ী গবেষকের কথায়, "নোবেল পাব ভাবিনি। একেবারে অপ্রত্যাশিত।"