ওয়েব ডেস্ক: কান ঘেঁষে বেরিয়ে ‌যাচ্ছিল গুলি। ফিরে আসাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের খুঁটিনাটি এই প্রথম প্রকাশ্যে এল। আর তা প্রকাশ করলেন ‌এই অভি‌যানে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, সেই মেজর মাইক ট্যাঙ্গো। তাঁর কথায়, "পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে ফিরে আসাই ছিল কঠিন। শত্রুপক্ষের বুলেট কান ঘেঁষে বেরিয়ে ‌যাচ্ছিল।" সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের অভিজ্ঞতা নিয়ে 'India’s Most Fearless: True Stories of Modern Military Heroes' নামে বই লিখেছেন মেজর। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ওই বইতে সেদিনের ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন মাইক ট্যাঙ্গো। দুটি ইউনিট থেকে জওয়ানদের বাছাই করা হয়েছিল। উরি হামলায় ‌যাঁরা সহকর্মীদের হারিয়েছিলেন, তাঁরাই ছিলেন। ট্যাঙ্গো বলেন, ''এটা একটা রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল। তাঁরা অনেকেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রতিটি কোণা জানতেন। পাশাপাশি উরি হামলার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যও ছিল।'


  'র' ও আইবি-র গোয়েন্দাদের সঙ্গে আলোচনার পর চূড়ান্ত পরিকল্পনা সরকারকে জানানো হয়েছিল। এই অপারেশনের জন্য নিজে হাতে ১৯ জন জওয়ানকে বেছেছিলেন ট্যাঙ্গো। তবে সেরা অফিসারদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দোটানায় ছিলেন। হামলার পর হয়তো জীবিত ফিরে আসা সম্ভব নয়, তাই সেরা জওয়ানদের হারাতে হত। মেজর ট্যাঙ্গোর কথায়,"নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ফিরে আসাই কঠিন। শত্রুপক্ষ সুবিধাজনক জায়গায় ছিল। পাক সেনার পোস্ট থেকে প্রতিরোধ আসত। দুজন পাক নাগরিক ও দুজন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দা ভারতীয় সেনাকে সহ‌যোগিতা করেছিল।"



জওয়ানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সামনে ‌যাই আসবে, উড়িয়ে দিতে হবে। সেনার কাছে ছিল অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র- M4A1 5.56-mm কার্বাইন, ইজরায়েলি টেভর TAR-21 অ্যাসল্ট রাইফেল, ইনস্টালাজা C90 ডিজপোজেবল গ্রেনেড লঞ্চার ও স্নাইপার রাইফেল। পাশাপাশি রাতে দেখার জন্য অত্যাধুনিক ‌যন্ত্রও ছিল। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিদের দুটি শিবির টার্গেট করা হয়েছিল। দুটোর মধ্যে দূরত্ব ছিল ৫০০ মিটারের। ওই শিবিরে প্রায়ই আইএসআই-এর লোকজন আসত। মাত্র একঘণ্টার মধ্যেই গোটা অপারেশন সারা হয়েছিল। ৩৮ থেকে ৪০ জন জঙ্গি ও দুজন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছিল।


মেজর বলেন,''সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে ফিরে আসার জন্য সহজ রাস্তায় ‌যাইনি। তাতে বিপদে পড়তাম। বরং ঘুরপথেই ফিরে আসার কৌশল নিয়েছিলাম।'' তবে ঘুরপথ হলেও জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করেছিল পাক সেনা। মেজরের কথায়, "কানের পাশ দিয়ে বুলেট বেরিয়ে ‌যাচ্ছিল। আমি আর এক ফুট লম্বা হলেই বেঁচে ফিরতাম না।" রাতভর অপারেশন চালিয়ে সাড়ে চারটে নাগাদ ফিরে আসে ভারতীয় সেনা। 


আরও পড়ুন, ড্রোন হামলা ঠেকাতে বিশেষভাবে শক্তিশালী করা হচ্ছে এনএসজি-সিআইএসএফকে