নিজস্ব প্রতিবেদন : মাথার উপর নেই কোনও আচ্ছাদন। পাশ দিয়ে তিরতির করে বয়ে চলেছে যমুনার সরু জলের স্রোত। ভরসা বলতে উড়ালপুলের ছায়া। তার তলাতেই গামছা পেতে মাটিতে শুয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন শয়ে শয়ে শ্রমিক। স্থানীয় লঙ্গরের দৌলতে মিলছিল খাবার। কিন্তু প্রতিদিন দু বেলা দু মুঠো জুটছিল না অনেকেরই। এমন অবস্থায় তাঁদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করল দিল্লি সরকার। বৃহস্পতিবার নিজেই সেকথা জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল। তিনি আরও জানালেন, কোনও শ্রমিকের খাদ্যাভাব হলেই দিল্লি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাঁদের ব্যবস্থা করা হবে। গরিবদের খবর তুলে ধরার জন্য তিনি সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান।



COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

যেখানে দুবেলা খাবারেরই নিশ্চয়তা নেই সেখানে স্বাস্থ্যবিধি যে মেনে চলা হচ্ছিল না তা বলাই বাহুল্য। এতদিন এক স্থানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে একসঙ্গে বাস করছেন অসংখ্য শ্রমিক। লকডাউনের পর পর প্রথমে ২ দিন তাঁদের খাবারও জোটেনি বলে জানালেন এমনই এক শ্রমিক। পানীয় জল বলতে ছিল যমুনার অপরিস্কার জল। 


এর আগেও শ্রমিকদের খাওয়াদাওয়ার জন্য শেল্টারের আয়োজনও করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। সেখানে প্রতিদিন ১,০০০ জনের মতো রান্না হত। কিন্তু গত ১১ এপ্রিল সেখানে খাবারের বন্টন নিয়ে বিবাদের পর শ্রমিকদেরই একাংশ সেই শেল্টারে আগুন লাগিয়ে দেন বলে জানা গিয়েছে। তারপর থেকেই নিয়মিত রান্নাও বন্ধ হয়ে যায়।


সাধারণত পরিযায়ী শ্রমিকরা কোনও স্থানীয় শ্রমিক সর্দারের দলের সঙ্গে কোনও শ্রমিক সরবরাহ সংস্থার হয়ে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যান। কাজের জায়গাতেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁবু বা নির্মীয়মান বিল্ডিংয়ে তাঁদের একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে তাঁদের দুই বেলা খাবারেরও দায়িত্ব থাকে শ্রমিক সরবরাহকারী সংস্থার উপর। প্রতিদিন কাজের পরিবর্তে শ্রম ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী তাঁদের মজুরি নির্ধারণ করেন শ্রমিক সর্দার বা সরবরাহকারী সংস্থা। মজুরির মোট টাকা দেয় নির্মাণসংস্থা।


হঠাত্ লকডাউনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে সমস্ত নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি সংক্রান্ত কাজ। ফলে সেখানে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে রান্না-খাওয়ার ব্যবস্থাও। অন্যদিকে নির্মাণ সংস্থার থেকে টাকা পাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে শ্রমিকদের মজুরিও। 


হঠাত্ লকডাউন ঘোষণার ফলে পরিযায়ী শ্রমিকরা যে বড় সমস্যায় পড়েছেন তা বলাই বাহুল্য। যাঁরা পেরেছেন পায়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু বেশি দূরে বাড়ি যাঁদের তাঁরা অনেকেই যেতে পারেননি।