নিজস্ব প্রতিবেদন: লোকসভা নির্বাচনে হাতে-হাত মিলিয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে বিজেপি ও এআইএডিএমকে। তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার দলের সঙ্গে জোটের ঘোষণাও করে দিয়েছে মোদী-অমিত ব্রিগেড।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


আর সেই সমঝোতা যে কতটা গভীরে পৌঁছেছে, তার প্রমাণ এল শুক্রবার। যখন এআইএডিএমকের বিধায়ক কেটি রাজেন্দ্র বালাজি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন। মোদীকে তিনি একেবারে ভারতের 'বাবা' বলে উল্লেখ করলেন।


তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার দলের ওই বিধায়কের এই মন্তব্যে হইচই পড়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। আলোচনা শুরু হয়েছে দেশের রাজনৈতিক মহলে। তবে এখনও কেউ এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।


আরও পড়ুন: জঙ্গি হামলা হলে আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বদল হতো, এখন নীতি বদল করেছে সরকার


তবে মোদীর প্রশংসা করতে গিয়ে এআইএডিএমকের ওই বিধায়ক টেনে এনেছেন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জয়ললিতার নাম। দলের সঙ্গেও জুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীকে।


কেটি রাজেন্দ্র বালাজির কথায়, ''আম্মা (জয়ললিতা) সব সময় নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে। ফলে সিদ্ধান্তগুলি সব সময় আলাদা হয়। কিন্তু এখন আম্মার অবর্তমানে মোদীই আমাদের ড্যাডি। তিনিই আমাদের ড্যাডি, ভারতের ড্যাডি।''



প্রসঙ্গত, রাজনীতিতে প্রবেশের শুরু থেকে নরেন্দ্র মোদীকে একেক সময় একেক জন রাজনৈতিক নেতা একেকটা নাম দিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁকে বিরোধীরা কটাক্ষ করে নানা নাম দেয়। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল প্রশংসাসূচক ওই মন্তব্য।


কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে কেন এমন মন্তব্য করলেন এআইএডিএমকে-র ওই বিধায়ক? কারণ, দক্ষিণ ভারতে বিজেপির শক্তঘাঁটি নেই বললেই চলে। শুধু কর্নাটকেই তাদের আধিপত্য।


তামিলনাড়ুতে বিজেপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রতিবার লোকসভা নির্বাচনের সময় ওই রাজ্যের কোনও একটি দলের সঙ্গে জোট করে লড়াই করে গেরুয়া শিবির।


আরও পড়ুন: ‘দেশের ১৩০ কোটি মানুষই আমার প্রমাণ, পাকিস্তানকে তোল্লাই দেওয়া বন্ধ করুন’


২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি জোট করেছিল ডিএমকে-র সঙ্গে। কিন্তু নির্বাচনে সেভাবে তারা কোনও দাগ কাটতে পারেনি। তাই এবার হাত বদলে জয়ললিতার দলের সঙ্গে সমঝোতা করে নিয়েছেন মোদী-অমিত শাহরা।


তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক অঙ্ক অনুযায়ী, বিজেপিরই বেশি ভরসা করতে হবে রাজেন্দ্র বালাজিদের উপর। তাদেরই প্রশংসায় ভরিয়ে দেওয়া উচিত ওই দলের নেতাদের। আদতে হচ্ছে তার উল্টো।


আরও পড়ুন: ‘কঠোর ব্যবস্থা নিন’, কাশ্মীরিদের ওপরে হামলা মোকাবিলায় আদিত্যনাথ সরকারকে বললেন মোদী


দক্ষিণের রাজনীতি সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল তাঁদের বক্তব্য, তামিলনাড়ুতে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর রাজনৈতিক পাল্লা পুরো উল্টো যায়। একবার ডিএমকে শক্তিশালী হলে পরেরবার এআইএডিএমকের শক্তি বাড়ে।


২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ও ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে পাল্লাভারী ছিল এআইএডিএমকে-র। লোকসভায় জয়ললিতার দল ছিল তৃতীয় সর্বাধিক আসন জয়ী দল। তাদের দখলে ছিল ৩৪টি আসন। আর বিধানসভায় বিপুল ভোটে জিতে এআইএডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা মুখ্যমন্ত্রী হন।


আরও পড়ুন: কর্নাটকের মতো ‘মজবুর’ সরকার নয়, ‘মজবুত’ সরকার চায় দেশবাসী: নরেন্দ্র মোদী


সেই অঙ্কে এবার ডিএমকের দিকেই পাল্লাভারী হওয়ার কথা। তা আটকাতে মরিয়া এআইএডিএমকে। কিন্তু আটকানোর শক্তি কোথায়। কারণ, দলের নেত্রী জয়ললিতা প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর ক্যারিশমা এখন আর কাজে আসবে না। সেই কারণেই মোদীর ভরসায় ভোট বৈতরণী পার করতে চাইছে এআইএডিএমকে। তাই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।