নিজস্ব প্রতিবেদন: জীবনে কতগুলো পরীক্ষা দিয়েছেন? সংখ্যাটা নিশ্চই দুই অঙ্কেই সীমাবদ্ধ...তবে, এন এম পুষ্পা মাত্র ১০ বছরে ৬৫৭টি পরীক্ষায় বসেছেন। তবে বসেছেন না বলে, লিখেছেন বলাই ভাল। কারণ, এই একটি পরীক্ষাও পুষ্পা নিজের জন্য দেননি। আসলে পুষ্পার কলম ছুঁয়ে ভাষা পেয়েছে শত শত দৃষ্টিহীনের স্বপ্ন। বিগত এক দশক ধরে অন্যের স্বপ্ন সফল করতে লিপিকার হয়েছেন এন এম পুষ্পা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

টাকার অভাবে এক সময় শিক্ষা জীবন থমকে গিয়েছিল কিশোরী পুষ্পার। ভাগ্যিস, সে সময় কিছু ভালো মানুষ ছিলেন, যারা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মেয়েটির দিকে। আর তাই ২০০৭ সাল থেকে সমাজের পিছিয়ে থাকাদের স্বপ্ন সফল করতে পরীক্ষার খাতায় কলম ধরেছেন সেদিনের সেই কিশোরী, আজকে বছর ত্রিশের ইঞ্জিনিয়ার এন এম পুষ্পা।


আরও পড়ুন- সিগন্যাল ব্লু! অভিনব দিশা দেখালেন মুম্বইয়ের দুই বোন


কিন্তু এই কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
এক কথায় অসাধারণ। পুষ্পা বলছেন, "আমি যা লিখি তার উপর নির্ভর করে ওদের ভবিষ্যত। তাই সব সময় সজাগ হয়ে কলম ধরি। পরীক্ষার হলে অনেক সময় পরীক্ষার্থীরা অস্থির হয়ে পড়েন, কিন্তু আমি মাথা ঠান্ডা রাখি"। তবে, সমাজের পিছিয়ে পড়াদের তো অনেকভাবেই সাহায্য করা যায়। সেসব প্রচলিত পথ ছেড়ে, হঠাত্ কেন এমন পথ বেছে নেওয়া? পুষ্পা জানাচ্ছেন, অন্যের হয়ে লিখতে গেলে ভীষণ ধৈর্যের প্রয়োজন। আর এই কাজটা করে চরম আনন্দ পান তিনি। সেরিব্রাল পালসি থেকে ডাউন সিন্ড্রোম বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের সাহায্য করা অভিজ্ঞ লিপিকার পুষ্পা বলছেন, "এমনও হয় যখন একটা প্রশ্ন ৩০-৪০ বার পড়ে শোনাতে হয় পরীক্ষার্থীদের। কারণ, তাঁরা বহু ক্ষেত্রে প্রশ্নটা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না"।


আর পুষ্পার থেকে যারা সাহায্য পেয়েছেন, তাঁরা কী বলছেন?


এক বহুজাতিকের কর্মী গণপতি সি এ আজন্ম আংশিক অন্ধত্বের শিকার। তিনি জানাচ্ছেন, "লিপিকার খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। তাই আমার মতো অনেকের জন্য পুষ্পা উদ্ধারকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তাঁর সাহায্যেই আমি স্নাতকোত্তরের গণ্ডি পেরিয়েছি, আমি কৃতজ্ঞ"। এরপরই গণপতি জানাচ্ছেন, লিপিকার ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য একটা অ্যাপ চালু হওয়া খুব প্রয়োজন। গণপতির মতোই পুষ্পার কলমে ভাষা পেয়েছে মহেন্দ্রের বড় হওয়ার স্বপ্নও। শুধু মহেন্দ্র ও গণপতিই নয়, এমন শত শত অসহায় প্রতিভা প্রকাশ পায় বাস্তবের গণপতির কলমের ছোঁয়ায়।