নিজস্ব প্রতিবেদন: আজ স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৬তম জন্মজয়ন্তি। ১৯৮৪ সালে ভারত সরকার এই দিনটিকে ‘জাতীয় যুব দিবস’ বলে ঘোষণা করেন। ১৯৮৫ সাল থেকে প্রতি বছর নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশে ‘জাতীয় যুব দিবস’ পালিত হয় স্বামী বিবেকানন্দের স্মরণে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

নরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে তাঁর স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে ওঠার গল্প কম-বেশি আমরা প্রায় সকলেই জানি। বাঙালি জাতীকে, হিন্দু ধর্মকে তিনিই প্রথম বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় তাঁর সেই বক্তৃতার কথা তো প্রায় সকলেই জানি। তিনি বুঝেছিলেন, আকাশে, পাতালে বা কোনও ধর্মীয় ইমারতে নয়, ঈশ্বর রয়েছেন মানুষের মধ্যেই। আর এই তত্ত্বটিকে ‘শিবজ্ঞানে জীবসেবা’ বলেই ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি।


জাতপাতে ভেদাভেদ কোনও দিনই মানতেন না স্বামীজী। তিনি বলতেন, বিশ্বাস করতেন, আমরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান। তাই কোনও মানুষের মধ্যে কোনও জাতপাতের ভেদাভেদ থাকতে পারে না।


১৮৮৭ সালে বারাণসীর একটি ঘটনা তাঁকে খুব প্রভাবিত করেছিল। বারাণসীর রাস্তায় বাঁদরের তাড়া খেয়ে পালাচ্ছিলেন স্বামীজী। এক পথচারির কথায় থমকে তিনি ঘুরে দাঁড়াতেই পিছু হটেছিল বাঁদর দল। এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে স্বামীজী বলেছিলেন, যে কোনও সমস্যার সমাধানে সেই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে তার মোকাবিলা করা উচিত। সমস্যা থেকে পালিয়ে গিয়ে তার সমাধান করা সম্ভব নয়।


পুঁথিগত বিদ্যায় মোটেই আস্থা ছিল না স্বামী বিবেকানন্দের। বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ট্রান্স পরীক্ষায় তিনি পেয়েছিলেন ৪৭ শতাংশ নম্বর। এফএ পরীক্ষায় ৪৬ শতাংশ এবং বিএ পরীক্ষায় ৫৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেন তিনি। অথচ, এ কথা আমরা সকলেই জানি যে, তিনি কতটা মেধাবী ছিলেন। তাঁর মেধা ও স্মৃতিশক্তির উদাহরণ দিতে গেলে মেরঠের সেই লাইব্রেরি ঘটনার উল্লেখ করতে হয়। লাইব্রেরি থেকে নিয়মিত বই নিতেন স্বামীজী আর একদিনের মধ্যেই বইগুলি ফেরতও দিয়ে দিতেন তিনি। ঘটনাটি দেখে লাইব্রেরিয়ানের সন্দেহ হয়। যাচাই করার জন্য তিনি স্বামীজীকে তাঁর নেওয়া একটি বই থেকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। উত্তরে স্বামীজী ওই বইটির কোন পাতায় কী লেখা রয়েছে, প্রায় সবই বলে দেন। স্বামীজীর এই আশ্চর্য ক্ষমতায় বাকরুদ্ধ হয়ে যান সেই লাইব্রেরিয়ান।


ধর্ম নিয়ে সন্ত্রাসে আজ পৃথিবী সন্ত্রস্ত। মৌলবাদীদের আস্ফালনে মানুষ সর্বত্র বিপন্ন। এই পরিস্থিতিতে স্বামী বিবেকানন্দের দর্শন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।