নয়া দিল্লি: দিল্লির চলন্ত বাসে গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে তৈরি 'ইন্ডিয়াস ডটার' তথ্যচিত্রটির সম্প্রচারণের উপর এখনও নিষেধাজ্ঞা বহাল। এরই মধ্যে এই তথ্যচিত্রে মহিলাদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য অপরাধী পক্ষের দুই আইনজীবীর কাছে জবাবদিহি চেয়ে পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এই মামলার শুনানির সময় শীর্ষ আদালত জানিয়েছে বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষ। এই দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে এর মধ্যেই মামলা ঠুকেছেন মহিলা আইনজীবী সমিতি।


১৬ ডিসেম্বর, ২০১২, দিল্লির সেই অভিশপ্ত রাতে চলন্ত বাসে ছয় দুষ্কৃতীর হাতে গণধর্ষিত হয়েছিল ২৩ বছরের তরুণী 'নির্ভয়া'। শুধু ধর্ষণ নয় তার উপর চালনো হয়েছিল অকথ্য যৌন অত্যাচার। মৃত্যুর সঙ্গে অসম যুদ্ধ চালিয়ে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয় নির্ভয়া। তাঁর ধর্ষণ ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সারা দেশে তীব্র বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়। সেই প্রতিবাদ বিক্ষোভের জেরে যৌন নির্যাতন সংক্রান্ত আইনেও পরিবর্তন আসে।


এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি 'ইন্ডিয়াস ডটার' নামে তথ্যচিত্রটি তৈরি করেন লেসলি উডউইন। এই তথ্যচিত্রে তিহার জেলের মধ্যে নির্ভয়ার অন্যতম ধর্ষক খুনি মুকেশ সিংয়ের সাক্ষাৎকার ঘিরে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এ দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনও।


এই ডকুমেন্টারিতেই রয়েছে অপরাধী পক্ষের দুই আইনজীবী এপি সিং ও এমএল শর্মার সাক্ষাৎকারও।


দুই আইনজীবীই তাঁদের বয়ানে এই সাক্ষাৎকারে 'নীতি পুলিসের' ঢঙে মহিলাদের প্রতি একের পর এক অবমাননা কর মন্তব্য করে গেছেন।


বিবিসি-এর তথ্যচিত্রে নির্ভয়াকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করার জন্য অপরাধী পক্ষের দুই আইনজীবীকে শো কজ নোটিশ ধরিয়েছে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাবদিহি করার কথা।


ইন্ডিয়াস ডটার-এ এপি সিং মন্তব্য করেছেন ''আমার মেয়ে বা বোন যদি বিয়ের আগেই কোনও সম্পর্কে জড়িয়ে নিজের সম্মান নষ্ট করত, তাহলে আমি তাকে পরিবারের সবার সামনে ফার্ম হাউসে নিয়ে গিয়ে গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্যান্ত জ্বালিয়ে খুন করতাম।''


এর আগেও অবশ্য সিং মন্তব্য করেছিলেন ধর্ষণের জন্য ছেলেদের থেকে মেয়েরা অনেক বেশি দায়ি।


বিবিসি-এর তথ্যচিত্রে নির্ভয়াকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করার জন্য অপরাধী পক্ষের দুই আইনজীবীকে শো কজ নোটিশ ধরিয়েছে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাবদিহি করার কথা।


সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইউ টিউবের সৌজন্যে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ দেখে ফেলেছেন এই নিষেধাজ্ঞাটি।


আর তার ফলেই প্রকাশ্যে এসেছে এই দুই আইনজীবীর বিকৃত লিঙ্গ বৈষম্যমূলক মন্তব্য।


দেশ জুড়ে বহু সমালোচনায় বিদ্ধ হলেও এপি সিং অবশ্য নিজের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ। কিছুদিন আগেই তিনি মেল টুডেতে এপি সিং বলেছেন ''ধর্ষণ আটকাতে গেলে এদেশে আগে নিষিদ্ধ করা উচিত ভ্যালেন্টাইন্ড ডে পালন, নিষিদ্ধ করা উচিৎ 'কিস অফ লভ'-এর মত প্রচার। এ সব কিছুই পশ্চিমি সভ্যতার অন্ধ অনুকরণ। ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গেও মোটেও এসব খাপ খায় না। ভারতীয় যুবসমাজের মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতির আসলি মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে ভাইফোঁটা, রাখি বন্ধন, বাবা-মার পুজো সারা দেশ জুড়ে সাড়ম্বরে আরও বেশি করে পালন করা উচিৎ।''