নিজস্ব প্রতিবেদন : "সারা দেশ আমাদের সঙ্গে জেগেছে। সব গ্রামের সব মানুষরা জেগেছিল। আজকের এই ফাঁসির পর যারাই এধরনের ঘৃণ্য কাজ করার কথা ভাববে, তাদের মনে ভয় হবে। তারা চুপচাপ বসে থাকতে পারবে না।"শুক্রবার কাকভোরে মেয়ের গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্তদের ফাঁসির পর বললেন নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ সিং। একইসঙ্গে যে ফাঁকফোকরগুলি থাকার জন্য বিচাপক্রিয়ায় এত সময় লাগল, তা নিয়ে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন। দীর্ঘ ৭ বছর ৩ মাসের আইনি লড়াইয়ের পর এদিন ভোর সাড়ে ৫টায় দিল্লির তিহাড় জেলে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয় ৪ দোষী পবন গুপ্তা, অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা ও মুকেশ সিংকে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০১২-র ১৬ ডিসেম্বরের অভিশপ্ত রাত। দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হন প্যারামেডিক্যালের ছাত্রী নির্ভয়া। এক নাবালক সহ ৬ জন মিলে নারকীয় অত্যাচার চালায় নির্ভয়ার উপর। অত্যাচারের ভয়াবহতায় শিউরে ওঠে সারা দেশ। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব হয় গোটা দোষ। প্রতিবাদে রাজধানী সহ অন্যান্য শহরে রাস্তায় নামে সাধারণ মানুষ। ২০১২-র ডিসেম্বর থেকে ২০২০-র মার্চ মাস, অপরাধের ৭ বছর ৩ মাস পর ফাঁসি হল গণধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ৪ জনের। অভিযুক্ত বাসচালক রাম সিংহ জেলের ভিতর আগেই আত্মঘাতী হয়েছে। অভিযুক্ত নাবালক ৩ বছর সংশোধনাগারে থাকার পর মুক্তি পেয়েছে। 


দোষীদের বাঁচার আইনি লড়াইয়ের শেষ রাস্তাটুকু বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবারই চূড়ান্ত হয় যে শুক্রবার কাকভোরে ফাঁসি দেওয়া হবে ৪ জনকে। তবে মধ্যরাতেও একপ্রস্থ আইনি লড়াই চলে। প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ৪ দোষী। রাত আড়াইটেয় আদালত বসে। চলে শুনানি। কিন্তু দীর্ঘ শুনানির পর দোষীদের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেয় বিচারপতি আর ভানুমতী, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এএস বোপান্নার বেঞ্চ।


আরও পড়ুন, 'মেয়ের ছবি জড়িয়ে ধরে ওকে বললাম, দেরিতে হলেও বিচার পেলি মা'


এদিন ভোরে দিল্লির তিহাড় জেলে ৪ দোষীর ফাঁসির পর, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের জয়ে স্বস্তি ধরা পড়ে নির্ভয়ার মায়ের চোখেমুখেও। আশাদেবী বলেন, "আজ আমি মেয়ের ছবি জড়িয়ে ধরে ওকে একটাই কথা বলি। অবশেষে তুই বিচার পেলি।" আরও বলেন, "আমাদের মেয়ে আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। কোনওদিন আর ফিরেও আসবে না। ও চলে যাওয়ার পরই আমাদের এই লড়াই শুরু। এই লড়াইটা ওর জন্য ছিল। তবে ভবিষ্যতেও আমাদের অন্য মেয়েদের জন্য এই লড়াই চলতে থাকবে।"