সাত বছরের কঠিন লড়াই! জীবনে আর একটাই ইচ্ছে আমার, বললেন নির্ভয়ার মা
সময় লেগেছে ঠিকই। তবে লড়াই বিফলে যায়নি।
নিজস্ব প্রতিনিধি : ১৬ ডিসেম্বর ২০১২। তাঁর জীবনটাই যেন বদলে গিয়েছে এই দিনটার পর থেকে। মেয়ের উপর নৃশংস অত্যাচারের বর্ণনা শুনে শিউরে উঠতেন তিনি। ঘুম নেই, খাওয়া নেই, মনে শান্তি নেই। মেয়েকে তিল তিল করে বড় করার স্মৃতি মনে পড়ত তাঁর। মনে পড়ত অনেক পুরনো কথা। মা-মেয়ের মুহুর্তের কথা। সব যেন এক লহমায় কেউ ছিনিয়ে নিয়েছিল তাঁর থেকে। পাশবিক অত্যাচার বললেও কম বলা হবে। ছয়জন মিলে বাসে গণধর্ষণ করেছিল নির্ভয়ার। তাতে মন ভরেনি তাঁদের। নির্ভয়ার উপর সেই রাতে অকথ্য অত্যাচার করেছিল সেই ছজন। তার পর থেকে তাঁদের শাস্তির জন্য লড়ছেন নির্ভয়ার মা। লড়াই এতদিনে দিশা পেল যেন!
নির্ভয়ার এক দোষী রাম সিং আগেই জেলে আত্মহত্যা করেছে। চারজনকে ২২ জানুয়ারি ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। নির্ভয়ার মা এখন যেন অধীর আগ্রহে ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটা বাজার অপেক্ষা করছেন। তবে চারজনের ফাঁসির খবর তাঁকে শান্তি দিয়েছে। তাঁর মেয়ে ন্যায় বিচার পেল। নির্ভয়ার মা জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ের আত্মা হয়তো এতদিনে শান্তি পেল। সাত বছর ধরে কঠিন লড়াই করেছেন তিনি। বাধা এসেছে একের পর এক। হাল ছাড়েননি তিনি। বরং চোয়াল আরও শক্ত হয়েছে। সময় লেগেছে ঠিকই। তবে লড়াই বিফলে যায়নি। আর লড়াই শেষে তাই তিনি বললেন, ''জীবনে আর আমার একটাই মাত্র ইচ্ছে।''
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা সাইরাস মিস্ত্রির, স্থগিত টাটার শীর্ষ পদে ফেরার প্রক্রিয়া
২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় তিহাড় জেলে ওই চার দোষী অক্ষয় ঠাকুর, মুকেশ সিংহ, বিনয় কুমার এবং পবন গুপ্তর ফাঁসি তিনি নিজের চোখে দেখতে চান। নির্ভয়ার মা বলেছেন, ''আমি ওই চারজনের প্রাণ ত্যাগ করার মুহূর্তে সাক্ষী থাকতে চাই। এটাই আমার জীবনে এখন শেষ ইচ্ছে। আর কিছু চাওয়ার নেই। আমার মতো একজন সাধারণ গৃহবধূর পক্ষে এত বড় লড়াই করা সহজ ছিল না। সাত বছর ধরে একদিনও আমি শান্তিতে ঘুমোইনি। ওরা ফাঁসিতে না ঝোলা পর্যন্ত আমার লড়াই শেষ হবে না। তবে এবার অন্তিম সময় আসন্ন। আর ওদের বাঁচার কোনও রাস্তা নেই।''