নিজস্ব প্রতিবেদন: অনেককাল আগে ছোটবেলায় যেসব ছেলেমেয়ে টো টো করে সারদিন রোদে রোদে ঘুরে বেড়াত তাদের বাবা-মা তাদের ভয় দেখাত এই বলে যে, দ্যাখ বাইরে খবরদার যাসনি, চারিদিকে ভূত-টুত ঘুরে বেড়াচ্ছে। বাচ্চারা বলত, কী ভাবে ভূত চিনব? তাঁরা বলতেন, দেখবি যাদের ছায়া পড়ে না তারা নির্ঘাত্‍ ভূত! ব্যস! ওতেই কাজ হত। কেউ আর নির্জন দুপুরে বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়াত না। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কথা হল, সেই রকম একটি দিনই কি ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বরে (Odisha, Bhubaneswar) ফিরে এল? যেদিন আকাশে মাথার উপর সূর্য থাকল অথচ পায়ের নীচে থাকল না কোনও ছায়া! হ্যাঁ, ব্যাপার প্রায় সেরকমই আর কী! 


আরও পড়ুন: মানবতাই ধর্ম, মৃত্যু পথযাত্রী মুসলিম করোনা রোগীকে কলমা পড়ে শোনালেন হিন্দু চিকিত্সক


সূর্য উঠেছে, ফুটে বেরিয়েছে কাটফাটা রোদ, অথচ রাস্তাঘাটে মাটিতে ছায়া পড়ল না কারও। সবাই তা হলে ভূত নাকি! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এক বিরল (rare celestial event) ঘটনা, যা সাধারণত বছরে দু'বার ঘটে। সৌভাগ্যবশত ভুবনেশ্বরের বাসিন্দারা শুক্রবার এই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন।


কর্কটক্রান্তি (Tropic of Cancer) এবং মকরক্রান্তি রেখার (Tropic of Capricorn) মাঝে অবস্থিত পৃথিবীর কোনও স্থানে বছরে এরকম দু'টি ছায়বিহীন দিন, যাকে ভূগোলের পরিভাষায় 'জিরো শ্যাডো ডে' (Zero Shadow Day) বলে, তেমন দিন আসে। শুক্রবার যেমন বেলা ১১টা ৪৩ মিনিটে ভুবনেশ্বরে তেমন ঘটল। মাথার উপর সূর্য। অথচ কোনও ছায়া পড়ছে না রাস্তায়। প্রসঙ্গত এর পরের যে দিনটিতে এখানে এরকম ঘটবে সেই দিনটি হল ২২ জুলাই। দুপুর ১১টা ৫৩ মিনিটে এটা ঘটবে। 


সূর্য পৃথিবী পৃষ্ঠের সঙ্গে ৯০ ডিগ্রি কোণ করে অবস্থান করলে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। তখন কোনও ব্যক্তির বা বস্তুর ছায়া কয়েক মিনিটের জন্য পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে যায়।


ভারতের কর্কটক্রান্তি রেখার দক্ষিণে অবস্থিত স্থানে সূর্যের দক্ষিণায়ন ও উত্তরায়ণের সময় বছরে দু'বার এমন ছায়াবিহীন দিনের সাক্ষী থাকা যায়। উত্তরায়ণ এবং দক্ষিণায়নের সময় এক দিন কিছুক্ষণের জন্য সূর্য ঠিক পৃথিবী পৃষ্ঠের সঙ্গে ৯০ ডিগ্রি কোণ (90- degree angle) করে অবস্থান করে। তাই উল্লম্বভাবে অবস্থিত কোনও কিছুরই ছায়া পড়ে না সেই সময়ে। উত্তরায়ণ (২২ ডিসেম্বর থেকে ২১ জুন) এবং দক্ষিণায়ন (২১ জুন থেকে ২২ ডিসেম্বর)-এর সময় এক দিন করে এই ঘটনার সাক্ষী থাকা যায়।


আরও পড়ুন: বিষ্ণুকে স্মরণ করে পালন করুন এই একাদশী, সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে জীবন