বদলার জন্য আরও মরিয়া পাকিস্তান, কী করতে পারে তারা?
ওয়েব ডেস্ক: শত্রুঘাঁটিতে ঢুকে শত্রুনিকেশ করেছে ভারত। তাতে নাক কাটা গেছে পাকিস্তানের। প্রধানমন্ত্রী থেকে সেনাপ্রধান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী থেকে জঙ্গিনেতা, ভারতকে বদলার হুমকি দিচ্ছে সবাই। সার্জিক্যাল অ্যাটাকের জ্বালা জুড়োতে কী করতে পারে পাকিস্তান?
ফুঁসছেন নওয়াজ। চোখ রাঙাচ্ছেন সেনা প্রধান। একই সুরে ভারতকে নাস্তানাবুদ করার হুমকি দিচ্ছে ছাব্বিশ এগারো হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদ। সার্জিক্যাল অপারেশনের ধাক্কা পাকিস্তান যে হজম করতে পারছে না, রাষ্ট্রনায়ক থেকে জঙ্গিনেতার লাভা উদগিরণে তা স্পষ্ট। নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে আটটা জঙ্গিশিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। ফলাও করে তা ঘোষণা করছে ভারত সরকার। পাকিস্তানের ক্ষতে এটা যেন আরও বেশি নুনের ছিটে দিচ্ছে। তাই বদলার জন্য আরও মরিয়া পাকিস্তান। কী করতে পারে তারা?
সম্ভাবনা ১- আরও বেশি সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন
একেবারে পাশাপাশি অবস্থিত পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ। কাশ্মীর নিয়ে তাদের মধ্যে নিত্য টানাপোড়েন বিশ্ব মানচিত্রে অন্যতম বিপজ্জনক দ্বৈরথ হিসেবে চিহ্নিত। বহু কাঠখড় পোড়ানোর পর ২০০৩ সালে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি সই হয়েছিল দুদেশের মধ্যে। ঠিক হয়েছিল, কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখার দুপার থেকে কোনও পক্ষই ক্রস বর্ডার ফায়ারিং করবে না। বারবার সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে পাকিস্তান। ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পরেও তাদের সীমান্ত সন্ত্রাস অব্যাহত। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও ক্রস বর্ডার এবং স্পেকুলেটিভ ফায়ারিং জারি রেখেছে পাক সেনা। সীমান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের ওপর চাপ বজায় রাখতে আরও বেশি করে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে পারে তারা।
সম্ভাবনা ২- সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি অস্বীকার
নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে হামলার কথা খুল্লমখুল্লা জানিয়েছে ভারত। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এটাকেই হাতিয়ার করতে পারে পাকিস্তান। পাকদূতরা বলতেই পারেন, ভারত LOC নিয়ে যা দাবি করছে, তাতে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি তাদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়।
সম্ভাবনা ৩- বাড়তে পারে জঙ্গি অনুপ্রবেশ
এত কাণ্ডের পরেও জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা থেমে নেই। বদলা নিতে আগামী দিনগুলোয় সেই অনুপ্রবেশ আরও বাড়তে পারে।
সম্ভাবনা ৪- সন্ত্রাস ভায়া বাংলাদেশ আফগানিস্তান
উরি কাণ্ড আর সার্জিক্যাল অপারেশনের পর পাকিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিকমহলের চাপ রয়েছে। তাই ঘুরপথে ভারতে সন্ত্রাস রফতানি করতে পারে তারা। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানের জঙ্গিদের কাজে লাগাবে পাকিস্তান।
সম্ভাবনা ৫- ২৬/১১-র আদলে হামলা
ছাব্বিশ এগারো মুম্বই হামলার নৃশংসতা এদেশের ধমনী এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছিল। পাকিস্তানের নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে সেই ছাব্বিশ এগারোর মূল চক্রী যেভাবে হুমকি দিচ্ছে, তাতে আরও বড় কোনও নাশকতাও চালানো হতে পারে। এমন কোনও জঙ্গি নাশকতা যা আজমল কসাভের বীভত্সতাকে ফিরিয়ে আনবে।
সম্ভাবনা ৬- চিনকে আরও বেশি পাশে টানা
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান টানাপোড়েনের মধ্যে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে অদৃশ্য এক অক্ষ। ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। এই পরিস্থিতিতে সুপার পাওয়ার চিনকে আরও বেশি করে পাশে চায় পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যে দুই পাকদূত বেজিংয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে রয়েছেন।
সম্ভাবনা ৭- কাশীরকে আরও অশান্ত করে তোলা
কাশ্মীর তাদের পাখির চোখ। তাই একথা বলার অপেক্ষা রাখে না গত কয়েক মাস ধরে সীমান্তের ওপার থেকে যেভাবে উপত্যকাকে অস্থির রাখার চেষ্টা হয়েছে, ভবিষ্যতে তার তীব্রতা আরও বাড়াবে পাকিস্তান। আরও বেশি উসকে দেওয়া হবে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাপন্থীদের।