নিজস্ব প্রতিবেদন: অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকছেন পাকিস্তানের প্রতিনিধি। সে দেশের আইন ও তথ্য মন্ত্রী ব্যারিস্টার সইদ আলি জাফরকে প্রতিনিধি হিসাবে ভারতে পাঠাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী, এমনটাই জানিয়েছে ইসলামাবাদ। ভারতের এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জীবনাবসানের খবর পেয়ে প্রতিনিধি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিবেশি দেশ নেপালও। প্রয়াত নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবারই দিল্লি এসে পৌঁছবেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গওয়ালি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

১৯ ফেব্রুয়ারি'১৯৯৯। বাসে চড়ে পঞ্জাবের আত্তারি-ওয়াঘা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে একটি বাস প্রবেশ করল পাক ভূখণ্ডে। বাসটির গন্তব্য লাহোর। বাসে সওয়ার ভারতের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং সাংবাদিক ও গুণীজনদের ২০ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। বাস থেকে নেমে কাশ্মীরিয়ত, জামুরিয়ত আর ইনসারিয়তের কথা বলা বাজপেয়ী বললেন, "আমরা ভূগোল বদলাতে পারব না, কিন্তু চেষ্টা করলে ইতিহাসটা বদলানো যেতে পারে"। পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশটির মানুষের মন সেই মুহূর্তেই জয় করে নিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের এই ব্রাহ্মণ সন্তান। পাক মুলুকে ব্যক্তি অটল বিহারী বাজপেয়ী কতটা জনপ্রিয় ছিলেন, তা বোঝা যায় প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের একটি বিবৃতি থেকেই। শরিফ বলেছেন, "বাজপেয়ীজি পাকিস্তান থেকে ভোটে দাঁড়ালেও নিশ্চিতভাবেই জয়ী হতেন"। আরও পড়ুন- লুকিয়ে বাজপেয়ীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন জ্যোতি বসু!


দিল্লি-লাহোর বাস যোগাযোগ চালু করা যদি কূটনীতিক বাজপেয়ীর এক দূরদর্শী পদক্ষেপ হয়, তাহলে আরেকটি সাফল্য পোখরান। পোখরানে পরীক্ষামূলকভাবে পরমাণু বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর পর সংসদে সেদিনের প্রধানমন্ত্রী যা বলেছিলেন তা কার্যত ঐতিহাসিক ও অমোঘ। একই সরকারের এমন দুই 'ভিন্নধর্মী' কাজে যখন দেশের আইনসভা বিতর্কে জমজমাট, তখন বাজপেয়ী বলেন, বাস চালানো এবং পোখরান একই মুদ্রার দুই পিঠ। এক পিঠে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে কঠোর করার চেষ্টা, আর অন্যপিঠে বন্ধুত্বের উষ্ণতা। আরও পড়ুন- বাজপেয়ী যখন ফোন করেছিলেন শ্মশানে ছিলেন মোদী


কূটনৈতিক মহলের মতে, এমনই ছিলেন বাজপেয়ী। আর তাই যে দেশে নির্ভেজাল ভারত বিরোধিতা না করলে জনপ্রিয়তা পায় না কোনও রাজনৈতিক দল, সেই দেশের সরকারও বাধ্য হয় ভারতের এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। আরও পড়ুন- বাজপেয়ীকে সেদিন জড়িয়ে ধরেছিলেন মোদী


উল্লেখ্য, দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৬ অগস্ট, বৃহস্পতিবার দিল্লির এইমস-এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি-র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অটল বিহারী বাজপেয়ী। প্রবাদ প্রতিম এই নেতার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। কেন্দ্রের তরফে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার অর্ধ দিবস ছুটিও ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। শুক্রবার রাতেই ৬ নম্বর কৃষ্ণাণমার্গের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বাজপেয়ীর মরদেহ। রাত থেকেই সেই বাড়ির দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ করে দিতে। শুক্রবার দলীয় নেতাকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য দেহ শায়িত থাকবে বিজেপির বর্তমান সদর দফতরে। এরপর শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ যমুনার তীরে বিজয় ঘাটে অটল বিহারী বাজপেয়ীর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হবে। আরও পড়ুন- ‘অটলজি সক্রিয় থাকলে, আডবাণী, যোশীদের এভাবে একঘরে করা যেত না’