জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অশান্ত মণিপুর। কারফিউ জারি করা হয়েছে রাজ্যের ৩ জেলায়। সোমবার পড়ুয়ারা বিভিন্ন সরকারি অফিসে হামলা চালায় শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা রাজভবন ও থাউবালের জেলা প্রশাসনের অফিসে(ডিসি) হামলা চালায়। এ ছাড়া ডিসি অফিসে টানানো ভারতের জাতীয় পতাকা নামিয়ে সাত রঙের নতুন একটি পতাকা টানিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই এবার কারফিউ অমান্য করে রাস্তায় নেমে আসছেন সাধারণ মানুষজন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন-বৃহস্পতিবার করছেন না মেডিক্যাল কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক, মমতা চাইছেন...


ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব এবং থৌবল জেলায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে সর্বাত্মক কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যের শান্তি পুনরুদ্ধারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের এক দিন পরই মণিপুরের এই ৩ জেলায় কারফিউ জারি করা হল। মঙ্গলবার দুপুর ৩টা থেকে আগামী পাঁচ দিনের জন্য (১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টা পর্যন্ত) সমগ্র রাজ্যে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অশান্তির আবহে সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছিল বলে নির্দেশিকায় জানিয়েছে সরকার।


মণিপুর সরকারের ডিজিপি এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবিতে কারফিউ উপেক্ষা করে গতকাল মহিলা ও শিক্ষার্থী-সহ আন্দোলনকারীরা ইম্ফলের রাজভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয় বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।


অভিযোগ উঠেছে, ড্রোনের সাহায্যে দেশি বোমা ও গ্রেনেড ফেলে হামলা চালানো হচ্ছে। তবে এরকম দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে কোনও কোনও মহল। তবে গত কয়েক দিনে দফায় দফায় গুলিবিনিময়, বোমা বিস্ফোরণ, সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টাসহ একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিস ও যৌথ বাহিনী। সাম্প্রতিক এই সহিংস ঘটনাগুলোতে অন্তত ৮ জন প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ১২ জনেরও বেশি মানুষ।


গত সোমবার খোয়াইরামবন্দ ওমেন মার্কেটে কয়েক শ শিক্ষার্থী বিটি রোড ধরে রাজভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কংগ্রেস ভবনের কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে পিছু হটে তারা। স্থানীয় সময় রবিবার রাতেও বিপুলসংখ্যক মহিলা ইম্ফলের রাস্তায় নামেন। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন তাঁরা।


রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর দাবিতে রাজধানী ইম্ফলের বিভিন্ন রাস্তায় জড়ো হয় পড়ুয়ারা। তাদের দাবি নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে সরিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য রাজ্যের হাতে বেশি ক্ষমতা দিতে হবে। একইসঙ্গে নিরাপত্তা অভিযানের দায়িত্ব স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হাতে দিতে হবে।


মণিপুরের ছাত্ররা যে নতুন পতাকা ডিসি অফিসে টাঙ্গিয়েছে সেটা সাত রঙের আয়তকার একটি পতাকা। মেইতি জাতিগোষ্ঠীর সাতটি বংশের প্রতিনিধিত্বের কথা তুলে ধরতে মণিপুরে অনেকেই এই পতাকা ব্যবহার করেন।  থাউবালের ডিসি এ সুভাষ সিং বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি নতুন পতাকা টানিয়ে দিয়েছে। তবে সেটি ডিসি অফিসের প্রধান ভবনে নয়, বরং মূল ফটকে।


উল্লেখ্য, গত বছর থেকেই মণিপুরের কুকি ও মেইতেইদের মধ্য়ে সংঘর্ষ চলছে। প্রাণ গেছে কয়েক শ মানুষের। আপাত শান্তি ফিরলেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি, গোলাগুলির খবর প্রায়ই আসছে। সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় কুকি জঙ্গিদের দায়ী করছে মেইতিরা। অন্যদিকে কুকিদের দাবি, মেইতিদের দিক থেকেই প্রথম গুলি চলেছে।



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)