নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'মন কি বাত'-এর শেষপর্বে আজ উঠে এল ঋষি অরবিন্দ প্রসঙ্গ। তাঁর 'ভোকাল ফর লোকাল'এর পক্ষে বলতে গিয়ে তিনি টেনে আনলেন অরবিন্দ ঘোষের কথা। উনিশ শতকের কবি মনমোহন বসুর লেখা একটা কবিতাও বাংলায় পড়ে শোনান তিনি। বলেন, জীবনের সাধারণ থেকে সাধারণতম জিনিসের জন্য বিদেশি দ্রব্যের উপর নির্ভর করার প্রবল বিরোধিতার কণ্ঠ ছিলেন বাংলার সেরা মেধারা। ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেস তৈরি হওয়ার পর 'দিনের দিন সবে দীন' কবিতার এই অংশটি পাঠ করেন নমো। 'ছুঁই সুতো পর্যন্ত আসে তুঙ্গ হতে/দীয়াশলাই কাটি, তাও আসে পোতে/ প্রদীপটি জ্বালিতে, খেতে, শুতে, যেতে/কিছুতেই লোক নয় স্বাধীন।' ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, পরাধীনতার সময় সূচ, সুতো, দেশলাই কাঠি সবই আসত বিদেশ থেকে। কোনও কিছুতেই স্বাধীনতা ছিল না। এরপরই ভোকাল ফর লোকালের সপক্ষে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, বিদেশি দ্রব্য বর্জন মানে বিদেশের যা কিছু ভাল, তাকে বর্জন করা নয়। কিন্তু দেশের মাটিতে যা তৈরি সম্ভব, তাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। ভারতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলার ডাক বাংলার মনীষীরা দিয়েছিলেন, তা আজ 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে আরও একবার মনে করালেন মোদী।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও বলেন, আগামী ৫ ডিসেম্বর অরবিন্দ ঘোষের প্রয়াণদিবস। অরবিন্দের আদর্শে দেশের যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা বলেন মোদী। অরবিন্দের স্বদেশি শিক্ষা সংক্রান্ত বইয়ের প্রসঙ্গ টেনে সুকৌশলে তাকে 'ভোকাল ফর লোকাল'-এর পক্ষে ব্যবহার করেন। তবে, ঋষি অরবিন্দর কথাই কেন টেনে আনলেন মোদী? ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এটা প্রথম কিছু নয়। এর আগেও স্বাধীনতা দিবসে বক্তব্য় রাখার সময়ে অরবিন্দ প্রসঙ্গের উল্লেখ করেন তিনি। একদিকে বঙ্গ-রাজনীতিতে ক্রমশ 'বহিরাগত' তকমা পেতে পেতে এভাবেই রাজ্যবাসীকে বার্তা দিতে চাইলেন মোদী। তিনি ও তাঁর দল যে বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা পড়ে আছেন, তা বোঝাতেই বারবার একের পর এক বাংলার মনীষীদের উদ্ধৃত করে ভোট বৈরতণী পারের চেষ্টা।


অন্য একটা মতও অবশ্য আছে। ওয়াকিবহল মহলের আরেকাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নিজের উদ্যোগে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের জন্মদিন ২৩ জানুয়ারিকে 'জাতীয় ছুটি' হিসাবে ঘোষণার অনুরোধ জানিয়েছেন। নেতাজির ১২৫ তম জন্মজয়ন্তীর আগেই প্রধানমন্ত্রী এই কাজটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে করুন, এমন অনুরোধ সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর কাছে রাখেন মমতা। ঠিক তার পরপরই অরবিন্দ ঘোষকে বক্তব্যে নিয়ে আসা রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন- নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলেছে কৃষি আইন, কৃষক-বিক্ষোভেও সওয়াল মোদীর