নিজস্ব প্রতিবেদন: বীরভূমের কীর্ণাহার থেকে রাইসিনা হিলস। খুব কম রাস্তা নয়। ঘটনাবহুল সেই পথচলা শেষ হল। সোমবার ৮৪ বছর বয়সে চলে গেলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দেখে নিন একনজরে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রায় ৫ দশক
 
১৯৬৯ সালে মেদিনীপুর বাই ইলেকশনে প্রচারের জোরে প্রণব মুখোপাধ্যায় একা হাতে জিতিয়ে দিয়েছিলেন ভি কে কৃষ্ণ মেননকে। তারপরই ইন্দিরা গান্ধীর নজরে আসেন তিনি। কার্যত ইন্দিরা গান্ধী হাত ধরেই  জাতীয় কংগ্রেসে প্রবেশ তাঁর।


১৯৬৯ থেকে ২০০২ টানা রাজ্যসভার সদস্য বাংলার প্রণব মুখোপাধ্যায়। ইন্দিরা ঘনিষ্ঠ প্রণব মুখোপাধ্যায় ১৯৭৩ সালে ইন্দিরা ক্যাবিনেটের কেন্দ্রীয় ডেপুটি শিল্প উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন।


আরও পড়ুন-মঙ্গলবার থেকে দেশজুড়ে শুরু আনলক ৪, সেপ্টেম্বরে ৩ দিন সম্পূর্ণ লকডাউন রাজ্যে


১৯৭৫-৭৭ যখন দেশে এমারজেন্সি তখনও ইন্দিরা ক্যাবিনেটে সক্রিয় ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ১৯৭৭ সালে দেশে ক্ষমতা বদলের পর "জনতা সরকার" শাহ কমিশন নিযুক্ত করে সেখানেও নাম জড়িয়েছিল তাঁর। 


১৯৭৯ সালে রাজ্য়সভায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ডেপুটি নেতা হন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ১৯৮০ সালে জাতীয় কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রধান নেতা। 


১৯৮২ থেকে ৮৪, একাধিক ক্য়াবিনেট পদের পরে অর্থমন্ত্রী হন প্রণব মুকোপাধ্যায়। তাঁর আমলেই ভারতের প্রথম IMF লোনের শেষ কিস্তি চুকিয়েছিল ভারত। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসেবে মনমোহনের নিযুক্তিপত্রে সই করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।


 ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তিনি রাজীব গান্ধীর থেকে অনেক অভিজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইন্দিরা পুত্র। রাজীব আমলে ক্যাবিনেট থেকে বাদ পড়েন তিনি, তাঁকে পাঠানো হয় পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সামলাতে। 


১৯৮৬ সালে নিজের দল প্রতিষ্ঠা করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। নাম দেন রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস। তিন বছর পরেই ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধীর মধ্যস্থতায় ফের জুড়ে যায় দুই কংগ্রেস। ঘরওয়াপসি হয় তাঁর। পরে প্রণব মুখোপাধ্যাকে তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তাঁর উত্তর ছিল, "৭, আরসিআর কখনওই আমার গন্তব্য ছিল না।" ৭ আরসিআর প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের ঠিকানা।


রাজীব গান্ধী মৃত্যুর পর ১৯৯১ সালে ফের বদল আসে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনে। নরসীমা রাওর আমলে ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসাবে ইন্ডিয়ান প্ল্যানিং কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। নরসীমার সময়েই ১৯৫৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি।


সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় ১৯৯৮ থেকে ১৯৯৯ সারা ভারত জাতীয় কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। 


২০০০ সালে ফের পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তারপর টানা ১০ বছর বহাল ছিলেন এই পদে।


আরও পড়ুন-আনলক ৪-এ মেট্রো চালুতে সবুজ সঙ্কেত, আগামিকাল জরুরি বৈঠকে বসছে বোর্ড 


জঙ্গীপুর লোকসভা থেকে জিতে ২০০৪ সালে লোকসভার নেতা হন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ২০০৯ সালে ফের সেই কেন্দ্র থেকে জেতেন তিনি।  ২০০৪ সালেই লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছিল প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন প্রণব মুখোপাধ্যায় কিন্তু সোনিয়া গান্ধীর কংগ্রেস থেকে প্রধানমন্ত্রী হন মনমোহন।


মনমোহন জমানায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতর সামলেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রতিরক্ষা, ফের অর্থ এবং বিদেশ মন্ত্রী ছিলেন তিনি। 


২০১২ সালে সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে রাষ্ট্রপতি ২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি হন প্রণব মুকোপাধ্যায়। ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মেয়াদ শেষ হয় তাঁর নতুন রাষ্ট্রপতি হন রাম নাথ কোবিন্দ।


সম্মাননা:


দেশ:
২০০৮ সালে পদ্ম বিভূষণ
২০১৯ সালে ভারত রত্ন 


বিদেশ:


২০১৩ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা
২০১৬ সালে ন্যাশনাল অর্ডার অব দ্য আইভরি কোস্টের গ্র্যান্ড ক্রস , আইভরি কোস্ট
২০১৭ সালে অর্ডার অব মাকারিওস ৩ এর গ্র্যান্ড কলার, সাইপ্রাস


অন্যান্য প্রাপ্তি:


Euromoney ম্যাগাজিনের সার্ভে অনুযায়ী ১৯৮৪ সালে সারা বিশ্বের সেরা অর্থ মন্ত্রী


২০১০ সালে ইমার্জিং মার্কেটস পত্রিকা অনুযায়ী  ২০১০ সালের ফাইন্যান্স মিনিস্টার অব এশিয়া


দ্য ব্যাঙ্কার অনুযায়ী ২০১০ সালের ফাইন্যান্স মিনিস্টার অব ইয়ার