সংবাদমাধ্যমে কি `দলিত` থাকবে?
সরকারি নথিতে `দলিত`-এর বদলে সাংবিধানিক শব্দ `তফসিল জাতি` ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'দলিত'-কে কি 'দলিত' বলা যাবে? ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ভবিষ্যতে এই শব্দটি ব্যবহার করতে পারবে কি না এবার সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চলেছে প্রেস কাউন্সি অব ইন্ডিয়া (পিসিআই)। জুনের প্রথম সপ্তাহে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে সংবাদ মাধ্যমে 'দলিত' শব্দের ব্যবহার রোধ করার বিষয়টি পিসিআই-কে বিবেচনা করে দেখতে বলেছে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। একই সঙ্গে সব রকম সরকারি নথিপত্র থেকে 'দলিত' শব্দটি বাদ দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৫ মার্চ কেন্দ্রীয় সমাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের তরফে অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশিকা জারি করে 'দলিত' শব্দটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। যেকোনও সরকারি নথিতে 'দলিত'-এর বদলে সাংবিধানিক শব্দ 'তফসিল জাতি' ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
তবে সরকার এমন নির্দেশিকা জারি করলেও, প্রেস কাউন্সি অব ইন্ডিয়া-র কি এমন ক্ষমতা রয়েছে? অর্থাত্, পিসিআই কি দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলিকে একটি নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলতে পারে, উঠছে প্রশ্ন। তবে এক সরকারি আধিকারিকের মতে, পিসিআই এই ক্ষমতার অধিকারী। নাম জানাতে অনিচ্ছুক ওই আধিকারিক বলেন, "জার্নালিস্টিক কনডাক্ট রুল ১৯৯৬ অনুযায়ী, জাতপাত ও ধর্মের নামে কারও পরিচয় প্রকাশ করার বিষয়টি ইতিমধ্যে উল্লিখিত রয়েছে"।
কিন্তু, 'দলিত' শব্দটিকে কি এমন নির্দেশিকার মাধ্যমে বাদ দেওয়া সত্যই সম্ভব? প্রশ্নের উত্তরে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিবেক কুমার বলেন, এমন উদ্যোগ কেবল সরকারি নথিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কথাবার্তায় তা প্রভাব ফলবে না। এই অধ্যপক আরও বলেন, "দলিতরা নিজেরাই নিজেদের দলিত বলে থাকেন। বরং হরিজন-এর মতো নামই তাঁদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাই তাঁরা দলিত নামেই গর্ব বোধ করেন"।