নিজস্ব প্রতিবেদন: বামপন্থী সমাজকর্মীদের গ্রেফতারির পর প্রথমবার মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বললেন, পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিস। গ্রেফতারি থেকে স্বস্তি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন অভিযুক্ত সমাজকর্মীরা। ওই মামলায় শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, প্রেসার কুকারে সেফটি ভালভ না থাকলে তা ফেটে যাবে। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ''প্রেসার কুকার সংকোচন করার কোনও চেষ্টাই করা হয়নি''।   


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রাজনাথ সিং বলেন,''সরকার ফেলার ষড়যন্ত্রে নিজেদের আদর্শ ব্যবহার করে হিংসাত্মক পথ নিয়েছিলেন ওই সমাজকর্মীরা। গণতন্ত্রের বিপদ বিচ্ছিনতাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা সরকারের কর্তব্য''।


বামপন্থী সমাজকর্মীদের গ্রেফতারির পর বিরুদ্ধ মতের উপরে সরকারি কষাঘাতের অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। রাজনাথের বক্তব্য, গণতন্ত্রে বিরুদ্ধে মতের ঠাঁই রয়েছে। তবে তার মানে দেশকে টুকরো করা নয়। এনডিএ সরকার কখনও বিরুদ্ধ মতকে দমনের চেষ্টা করেনি বলেও দাবি করেন রাজনাথ সিং। তাঁর কথায়, ''এব্যাপারে এনডিএ-র ধারণা খুব স্বচ্ছ। দেশকে ভাঙার জন্য যাঁরা আইন হাতে তুলে নেবে, তাঁদের ছাড়ব না''।


বিচ্ছিন্নতাবাদী ও হিংসাত্মক আদর্শকে শহরের বাসিন্দাদের নকশালরা বিভ্রান্ত করছেন বলেও দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর  কথায়,''গোয়েন্দারা নিশ্চিত করেছেন, শহুরে এলাকায় নিজেদের পৈশাসিক কৌশল কাজে লাগাচ্ছে নকশালরা। যাঁরা গ্রেফতার হয়েছে, তাঁরা এই দলেরই অংশ''। আগে একই ধরনের অভিযোগের তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও মনে করিয়ে দেন রাজনাথ। 


ভীমা-কোরেগাঁও হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গ তুলে শুক্রবারই সাংবাদিক বৈঠকে মহারাষ্ট্র পুলিসের এডিজি পরমবীর সিং বলেন, ''২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি ঘৃণামূলক ভাষণ দেওয়া হয়েছিল। ৮ জানুয়ারি ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ দায়ের হয় মামলা। শুরু হয় তদন্ত। সব অভিযুক্তই কবীর কালা মঞ্চের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন''। তিনি আরও বলেন, ''বর্তমান সরকারকে ফেলে দেওয়া ও  আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটানোই ছিল তাদের লক্ষ্য। সরকার ফেলতে সমাজকর্মীদের নিয়ে দেশজুড়ে একটা মঞ্চ তৈরির চেষ্টা করছে মাওবাদীরা। ভামী-কোরেগাঁওয়ের পর হিংসা ছড়াতে ক্যাডারদের ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মাওবাদ)''।


সমাজকর্মীদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রসঙ্গে সিং বলেন, ''অভিযুক্তদের উপস্থিতিতেই সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করেছে পুলিস। করা হয়েছে ভিডিওগ্রাফি''। সমাজকর্মী ও মাওবাদীদের মধ্যে কয়েক হাজার চিঠিপত্র বিনিময় হয়েছে বলেও জানিয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিস। এডিজি-র কথায়, ''কমরেড প্রকাশকে চিঠি লিখেছিলেন সুধা ভরদ্বাজ। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারের ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন তিনি। সুধা দাবি করেছিলেন, শত্রুদের বিরুদ্ধে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। প্রকাশের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতাও চেয়েছিলেন সুধা'। তাঁর সংযোজন, জুনে ধৃত রোনা উইলসনের পাসওয়ার্ডযুক্ত যন্ত্র থেকে হাজারের বেশি নথি উদ্ধার করা হয়েছে। রাজীব গান্ধীর মতো মোদী রাজ শেষ করার জন্য এক মাওবাদী নেতা সঙ্গে ইমেল চালাচালিও হয়েছিল রোনার। গ্রেনেড লঞ্চার কেনার জন্য চাওয়া হয়েছিল অর্থ।    


চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার বামপন্থী সমাজকর্মী ভারভারা রাও, ভার্নান গোঞ্জালভেসস অরুণা ফেরিয়াস সুধা ভরদ্বাজ ও গৌতম নভলেখাকে গ্রেফতার করে পুলিস। গতবছর ৩১ ডিসেম্বর 'এলগার পরিষদ' সম্মেলনের সঙ্গে জড়িতদের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়।


আরও পড়ুন- একজন ঋণখেলাপকারীকেও ধার দেয়নি এনডিএ সরকার, মনে করালেন মোদী