সাত রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে মায়ানমারে, জানাল অসম পুলিস
বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশের কারণে ২০১২ সাল থেকে অসমের শিলচরের কাছার কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিল ৭ রোহিঙ্গা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সাতজন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে ফেরত পাঠানো হল।বৃহস্পতিবার জানাল অসম পুলিস। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে ফোনে রাজ্য পুলিসের অতিরিক্ত ডিরেকটর জেনারেল ভাস্কর জে মহন্ত জানিয়েছেন, মায়ানমারের সাত নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মণিপুরে মায়ানমারের মোরে সীমান্তে সাত জন রোহিঙ্গাকে কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিস।
বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশের কারণে ২০১২ সাল থেকে অসমের শিলচরের কাছার কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিল ৭ রোহিঙ্গা। বুধবার তাদের বাসে চাপানো হয়। এরপর সীমান্তে মায়ানমার বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয় রোহিঙ্গাদের। ভাস্কর জে মহন্তের কথায়, ''এটা রুটিন প্রক্রিয়া। বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠায় পুলিস''। মহম্মদ জামাল, মহবুল খান, জামাল হুসেন, মহম্মদ ইউনূস, সাবির আহমেদ, রহিমউদ্দিন ও মহম্মদ সালাম নামে সাত রোহিঙ্গাকে মায়ানমার সেনার হাতে তুলে দিয়েছে ভারত।
রোহিঙ্গাদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রশান্ত ভূষণ। তবে তাঁর আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ। প্রশান্ত ভূষণের বক্তব্য ছিল, মায়ানমারে ১০,০০০ মানুষের গণহত্যা করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর সম্পত্তি। ভারত ও বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গারা। তাঁরা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী নন, বরং শরণার্থী। তিনি আরও বলেন,''ওই সাত রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতিনিধিকে আদালত নির্দেশ দিক আদালত। বিষয়টি সাতটি জীবনের। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক আদালত''। পাল্টা বিচারপতিরা বলেন,''আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করার প্রয়োজন নেই আপনার। নিজেদের দায়িত্ব আমরা জানি''। এরপরই আদালত ভূষণের আবেদনটি খারিজ করে দেয়। মায়ানমার সরকার যেহেতু তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে, সেহেতু এব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না বলে স্পষ্ট জানায় আদালত। তিন বিচারপতির বেঞ্চের পর্যালোচনা, ওই সাতজন বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশ করে বলে রায় দিয়েছে আদালত। মায়ানমার তাঁদের নাগরিক হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি। ওদের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত।
ভারত সরকারের রোহিঙ্গা বিতারণের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। তারা বিবৃতিতে জানিয়েছে,'নিজেদের দেশে হিংসার শিকার হয়েছে রোহিঙ্গারা। তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ভারত সরকারের আন্তর্জাতিক আইনি দায়িত্ব'। মহম্মদ জামাল, মহবুল খান, জামাল হুসেন, মহম্মদ ইউনূস, সাবির আহমেদ, রহিমউদ্দিন ও মহম্মদ সালাম নামে সাত রোহিঙ্গাকে দেশে ফেরানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্কবার্তা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। তারা আশঙ্কাপ্রকাশ করেছে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগ রয়েছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলির। ভারতের বিরুদ্ধে তাদের ব্যবহার করতে পারে তারা।
আরও পড়ুন- পেট্রোল-ডিজেলে লিটারে আরও ২.৫০ টাকা শুল্ক কমাল মহারাষ্ট্র-গুজরাট