গান্ধী, তিলকদের কণ্ঠরোধকারী দেশদ্রোহিতা আইন এখনও প্রয়োজন? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর এই আইন এখনও প্রয়োজন?` জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
নিজস্ব প্রতিবেদন: দেশ স্বাধীন হওয়ার ৭৫ বছর পর ব্রিটিশ আমলের 'ঔপনিবেশিক' দেশদ্রোহিতা আইনের কি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে? বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট (Superme Court)। আদালতের অভিমত,'এই আইনের ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে যা কোনও দায় ছাড়াই অপব্যবহার করা যায়। ইতিহাসে পিছিয়ে গেলে দেখা যাবে ন্যূনতম অভিযুক্তই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। দোষী প্রমাণের হার অনেক কম।'
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের উপরে দেশদ্রোহিতা আইন প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে বারেবারে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সরকার বিরোধী মতপ্রকাশ দেশদ্রোহিতা হতে পারে না। দেশদ্রোহ আইন বাক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করছে। এই অভিযোগে দেশদ্রোহিতা আইনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছেন প্রাক্তন সেনা অফিসার এসজি ভোমবাটকেরে (SG Vombatkere)। আদালত জানিয়েছে, দেশদ্রোহিতা আইন চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা হয়েছে। সবগুলিকে এক করে শোনা হবে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা ও বিচারপতি এএস বোপান্না এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের বেঞ্চে ওঠে প্রাক্তন সেনা কর্তার মামলাটি।
প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা বলেন,'আমরা কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রকে দোষারোপ করছি না। কিন্তু দেখুন এখনও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬এ ধারার অপব্যবহার হয়ে চলেছে। কত দুর্ভাগ্যজনক মানুষ এর ভুক্তভোগী। অথচ দায় কেউ নিচ্ছে না। আমাদের আশঙ্কার কারণ এটাই। আইনের অপব্যবহার এবং দায় নেওয়ার কেউ নেই।' প্রধান বিচারপতি জানতে চান, 'মহাত্মা গান্ধী, বাল গঙ্গাধর তিলকদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কণ্ঠরোধ করতে দেশদ্রোহিতা আইনের ব্যবহার করত ব্রিটিশরা। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর এই আইন এখনও প্রয়োজন?'
আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল বেনুগোপাল জানান, আইন বাতিলের দরকার। সুস্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া হোক যাতে এটির উদ্দেশ্য সাধিত হয়। প্রধান বিচারপতি তখন বলেন,'কোনও এক পক্ষের বক্তব্য আর পক্ষ না শুনলে সে এই আইন ব্যবহার করতে পারে। এটা ব্যক্তি স্বাধীনতার উপরে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে।' সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তখন বলেন,'আমরা উত্তর দেব। তা আদালতের বোঝা অনেকটা কমিয়ে দেবে।'
আবেদনকারী প্রাক্তন সেনা অফিসার যুক্তি দেন,'এই আইন অসাংবিধানিক। এটা দ্ব্যর্থহীনভাবে বাতিল করা উচিত।' প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আবেদনকারী দেশের জন্য কার্যত জীবন আত্মত্যাগ করেছেন। সুতরাং এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা হতে পারে না।'
আরও পড়ুন- টিকায় বঞ্চিত বাংলা, মোদীকে চিঠি মমতার; উত্তর না পেলেও লিখে যাব, আক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রীর