ওয়েব ডেস্ক: 'গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার', ঐতিহাসিক রায়ে জানাল সুপ্রিম কোর্টের। ভারতের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপরতি জেএস খেহরের নেতৃত্বাধীন ৯ বিচারপতির ডিভিশন আজ ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিল, গোপনীয়তার অধিকার নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আদালতের রায় অনুযায়ী, 'প্রকাশ্যে আনা যাবে না প্যান কার্ড, আধার কার্ডের তথ্য'। আর এই রায়ের পরই বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, 'তাহলে কি এবার থেকে আর বাধ্যতামূলক হচ্ছে না আধার'? উল্লেখ্য, আধার বাধ্যতামূলক কিনা, এই বিষয়ে পৃথক রায় দেবে ৫ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।     


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের এই সিদ্ধান্তের পর তৃণমূল সাংসদ তথা প্রখ্যাত আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "গোপনীয়তার অধিকার নাগরিকের মৌলিক অধিকার। রাজ্য সরকারে (পশ্চিমবঙ্গ) বারেবারেই এই অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য লড়েছে"। ২৪ ঘণ্টাকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এও জানান, "ফোন ট্যাপিং। আপনি কার সঙ্গে কথা বলছেন, না বলছেন, সেটা কেউ জানতে পারে না। আপনার শরীরে কী রোগ আছে না আছে, সেটা আপনি বাদ দিয়ে কেউ জানতে পারবে না। এটা তো আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। ব্যক্তিগত তথ্যে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারোর নেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে দীর্ঘ লড়াই করে এসেছেন, এখনও করেছেন"।   



'গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার' সুপ্রিম রায় শুনে বিশিষ্ট আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "মানুষের নাগরিক অধিকারে কখনই কোনও সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না। নাগরিকের অধিকারকেই সুনিশ্চিত করল ভারতের শীর্ষ আদালত।" এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অশোক কুমার গাঙ্গুলির মত, " আর্টিকেল ২১ অনুযায়ী নাগরিক গোপনীয়তার অধিকার পায়। এটা একটা সাংবিধানিক অধিকার। সুপ্রিম কোর্ট সেই অধিকারকে সুনিশ্চিত করেছে। তবে মাথায় রাখতে হবে কোনও মৌলিক অধিকারই কিন্তু চূড়ান্ত নয়। সংবিধানে উল্লেখিত কোনও অধিকারই চূড়ান্ত নয়।"  



উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবিধানে জীবনের অধিকারের মধ্যেই রয়েছে নাগরিকের গোপনীয়তার বিষয়টি। একজন নাগরিকের ব্যক্তি জীবনের অধিকারের মধ্যেই গোপনীয়তার অধিকারটি সুনিশ্চিত রয়েছে। তবে একজন নাগরিক যেমন তার ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর গোপনীয়তা বজায় রাখতে পারেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে তাকে অনেক তথ্য নানান কারণেই প্রকাশও করতে হয়। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী নাগরিকের কোনও অধিকারই চূড়ান্ত নয়, একটি 'সুনির্দিষ্ট পরিধি' পর্যন্তই নাগরিকের মৌলিক অধিকারের ব্যপ্তি রয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে 'আধার বাধ্যতামূলক' কতটা গ্রহণযোগ্য এবং কার্যকারী? তবে এই উত্তরের জন্য এখনও পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ৫ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের রায় দান পর্যন্ত।