নিজস্ব প্রতিবেদন: চিত্র-সাংবাদিকের মৃত্যুতে নিজের মত জানালেন তসলিমা। সঙ্গে কটাক্ষ গোঁড়া হিন্দুদের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আফগানিস্তানের সংঘর্ষের পরিস্থিতি 'কভার' করতে গিয়ে সম্প্রতি প্রাণ হারিয়েছেন প্রখ্যাত চিত্র-সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি (Danish Siddiqui)। তাঁর মৃত্যুতে সারা বিশ্বের গণমাধ্যম উদ্বেলিত। মত প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব। এবার এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন তসলিমা নাসরিনও (Taslima Nasrin)


বিরাট বিশাল এক ফাঁকা জমি। সেখানে পর-পর কোভিড-মৃতের দেহ পড়ে। দাউ দাউ করে জ্বলছে চিতা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ (Covid Second Wave) চলাকালীন Birds Eye View-তে এই ছবি তুলে আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতিলাভ করেছিলেন দানিশ। শুক্রবার কান্দাহারে তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছে সেই ছবি। যা নিয়ে নানা মহলে নানা রকম চর্চা হয়েছে। এবার সেই ছবি ও দানিশের মৃত্যুর প্রসঙ্গে লিখলেন তসলিমাও। কটাক্ষের সুরে তসলিমা লিখেছেন, হিন্দুদের সৎকারের ছবি তোলার জন্যই হয়তো দানিশের এই পরিণতি। এটাকেই হয়তো বলে 'কার্মা'।


আরও পড়ুন: অর্থনীতির ছাত্র থেকে ভারতের পুলিৎজার জয়ী চিত্রসাংবাদিক! এক নজরে Danish-জীবনী


'কার্মা' মানে, তসলিমা বলতে চেয়েছেন-- 'কর্ম'। অর্থাৎ, কাজ। দানিশের কাজ ছবি তোলা। তাই করেছেন তিনি। কিন্তু বিদ্রুপের ইঙ্গিতে তসলিমার বক্তব্য-- এই কাজ, অর্থাত্‍, ছবি তোলার জন্যই কি দানিশের এই পরিণতি? তিনি কি এই মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে তাঁর কৃতকর্মেরই ফল পেয়ে গেলেন? 
 
কেন উঠছে এই প্রশ্ন? 


আসলে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে দানিশের ক্যামেরাবন্দি হিন্দু দেহ সৎকারের ছবি দেখে নাক সিঁটকেছিল অনেক মহলই। তাদের একাংশের দাবি ছিল, এই ছবি নাকি হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত এনেছে! ছবি তুলে এক শ্রেণির মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেই কি এই 'কার্মা' লাভ দানিশের? এমনই কটাক্ষ তসলিমার। সোশ্যালের ওই রচনায় তসলিমা দানিশের তোলা সেই ছবির তাৎপর্য বোঝাতে চেয়েছেন। সঙ্গে ঠুকেছেন গোঁড়া হিন্দুদের। 


কী লিখলেন তসলিমা?


নিজের তোলা প্রশ্ন ও তার উল্টোদিকের উত্তর দুটো বয়ান নিজেই লিখেছেন তসলিমা। এই ভাবে: 


--'হোয়াট ইজ কার্মা কার্মা? 
--'কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভের সময় দিল্লিতে যে অসংখ্য চিতা জ্বলছিল, ও সেই চিতার, আর শ্মশানের ছবি তুলে বিদেশে বিক্রি করেছে।'


--'ছবি তোলা তো ওঁর পেশা।'
-- 'হিন্দুদের ক্রিমেশানের আর ফিউনারেলের ছবি তুলেছে। এর কর্মফল হাতেনাতে পেয়ে গেছে। মরেছে। ... হিন্দুদের অসম্মান করা হয়েছে।'  
--'অসম্মান কেন হবে? বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন দানিশ। রয়টার্সে যখন চাকরি করছেন, কোথায় কী হচ্ছে তা দেখানো তাঁর দায়িত্ব। আর আপনারাই-বা কেন মনে করছেন, চিতার ছবি তুললে হিন্দুদের অসম্মান করা হয়?'


প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে দানিশের ক্যামেরায় বারবার উঠে এসেছে করোনা, লকডাউন, দিল্লির অক্সিজেন সঙ্কটের ছবি। দেশের বিভিন্ন স্থানে তোলা সেই ফোটোগ্রাফগুলির মাধ্যমে দেশবাসীকে যেন তিনি দেখাতে চাইছিলেন দেশের প্রকৃত কোভিড-পরিস্থিতির আসল ছবি। সম্প্রতি আফগানিস্তান কভারেজে ব্যস্ত ছিলেন দানিশ। আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গার সংঘর্ষের ছবি তুলে তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে আনছিলেন। কিন্তু এই কাজের মধ্যেই কান্দাহারের স্পিন বোলডাক এলাকায় সংঘর্ষের সময়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে খবর।


দানিশ নিজের কর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তীব্র সংবেদনের সঙ্গে। সেই 'কর্ম-যোগ'ই কি তাঁর জীবনে মৃত্যু-যোগ ঘটাল? দিয়ে গেল কর্ম-ফল? গোঁড়া হিন্দুদের কটাক্ষের পাশাপাশি এই মর্মেই নিরুচ্চার কিন্তু বাঙ্ময় এক সংকেতই কি নিজের পোস্টে রাখলেন না বিতর্কিত ও প্রতিবাদী লেখিকা? 


(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)


আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা থেকে গণচিতা- কান্দাহরে নিহত চিত্রসাংবাদিক দানিশের তোলা নানা ছবি দেখুন