ওয়েব ডেস্ক : সার্জিকাল স্ট্রাইকে লুকনো অস্ত্র সামনে আনল ভারত। ঘাতক। মানুষ মারতেই যাঁদের ট্রেনিং। সিংহের মতো শান্ত। চিতার মতো ক্ষিপ্র। বাঘের মতো নিষ্ঠুর। কার্গিল যুদ্ধের শেষ পর্যায়। টাইগার হিলে দখলের লড়াই। মুজাহিদিনদের চরম শিক্ষা দিতে এগিয়ে দেওয়া হয় হেড হান্টার নাগা ব্যাটেলিয়নকে। গুলি করে নয়, মাথা কেটে মারা হয় জঙ্গিদের। এবার নিয়ন্ত্রণ রেখায় নতুন অস্ত্র সামনে আনল ভারত।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- ভিডিও প্রকাশ করে পাক মিডিয়ার দাবি খুন করা হয়েছে ৮ ভারতীয় সেনাকে!


কর্ণাটকের বেলগাঁওতে তৈরি করা হয় ভারতীয় ঘাতকদের। প্রতিদিন ইনসাস রাইফেল ও কুড়ি কেজি ওজন নিয়ে ২০ থেকে ৬০ কিলোমিটার ছুটতে হয়। ক্লোজ কমব্যাট, রক ক্লাইম্বিং, হেলিবোর্ন অ্যাসল্টে প্রশিক্ষিত করা হয় ঘাতকদের।


ভারতের এই বাহিনী দক্ষতায় মার্কিন নেভি সিল ও ইজরায়েলি কমান্ডোর সমতুল। প্রশিক্ষণের পর ঘাতকের হাতে তুলে দেওয়া হয় অত্যাধুনিক হাতিয়ার। প্রতি ঘাতকের কাছে থাকে কমপক্ষে একটি ইনসাস অথবা AK সিরিজের রাইফেল।


ক্ষেত্রবিশেষে INI Tabor রাইফেল, TaR21 রাইফেল, SVD ড্রাগন রাইফেল, MSG স্নাইপার অথবা হেকলার অ্যান্ড কক ব্যবহার করে ঘাতক।


ক্লোজ কমব্যাটের জন্য একজন ঘাতককে পিস্তল, ছুরি ও আনুষঙ্গিক হাতিয়ারও দেওয়া হয়। প্রত্যেক ঘাতকের কাছে থাকে দড়ি, গ্রেনেড, রকেট লঞ্চার, মাইন নিরোধক পোশাক ও জুতো, নাইট ভিশন গগলস। ট্রেনিং শেষে তৈরি করা হয় ঘাতক ইউনিট। জঙ্গিদমন, সার্জিকাল স্ট্রাইক থেকে শুরু করে যে কোনও কঠিন মিশনে এরাই এখন  ভরসা।


আরও পড়ুন- কাশ্মীরে ফের জঙ্গি হামলা, পাকিস্তানি যোগ দেখছে ভারত


এক একটি ইউনিটে থাকেন ২০ জন ঘাতক। প্রতি ইউনিটে থাকেন একজন কমান্ডিং অফিসার। প্রতি ইউনিটে ২ নন কমান্ডিং অফিসার থাকেন। এলাকা মার্কিংয়ের জন্য থাকেন একজন মার্কসম্যান। শত্রুকে চিহ্নিত করতে থাকেন দুজন স্পটার। বেসক্যাম্পে যোগাযোগ রাখেন রেডিও অপারেটর। আহতকে দ্রুত চিকিত্‍সার জন্য থাকেন মেডিক্যাল অফিসার। ইউনিটের বাকিদের কাজ প্রাণঘাতী আঘাত করা। ভারতের এমন ঘাতক বাহিনীর সংখ্যা সাতহাজার। বুধবার তারই মধ্যে দুটি ইউনিটকে কাজে লাগানো হয় নিয়ন্ত্রণরেখায়। এক্ষেত্রে সেনার গোয়েন্দা বিভাগ নয়, ঘাতকদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে ভারতের গুপ্তচরবাহিনী RAW। বার্তা বিনিময়ের জন্য ছদ্মনামে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপও তৈরি করা হয়।


আঘাত


ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে ১টা ২৫ মিনিটে ভিমবেড় ও লিপা সেক্টরের ৪টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা হয়। হামলার আগেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারী গোলাবৃষ্টি করে পাক সেনাকে ব্যস্ত রাখে ভারতীয় সেনা। এই ফাঁকেই ছয় থেকে আটটি দলে ভাগ হয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে মিলিয়ে যান ভারতীয় কমান্ডোরা। নিয়ন্ত্রণরেখার তিন কিলোমিটার ভিতরে জঙ্গিঘাঁটিতে গুলিবৃষ্টি শুরু করে সামরিক হেলিকপ্টার। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোনোর পর ঘাতকদের কাছে সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ ছিল পাকিস্তানের পুঁতে রাখা মাইন। সেগুলি সাবধানে নিষ্ক্রিয় করে এগোয় ঘাতকবাহিনী। পাকিস্তানিদের পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন ব্যবহার করে পাকিস্তানেরই বাঙ্কার ধ্বংস করা হয়। জঙ্গি ক্যাম্পে সামরিক হেলিকপ্টার যখন হামলা চালাচ্ছে তখনই কার্যত মাটি ফুঁড়ে হাজির হয় ঘাতকরা উপর ও নীচে জোড়া আক্রমণে দিশাহারা জঙ্গিরা কোনও প্রতিরোধ গড়ে তোলার আগেই মারা পড়ে।


আরও পড়ুন- পাকিস্তানে 'সার্জিক্যাল স্ট্রাইক' নিয়ে কী বললেন শাহরুখ?


ভীমবেড় ও লিপায় রেশ কাটার আগেই রাত তিনটে নাগাদ হটস্প্রিং ও কেল সেক্টরে তিনটি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা হয়। সাড়ে চার ঘণ্টায় শেষ হয় অপারেশন। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ন্ত্রণরেখায় সার্জিকাল স্ট্রাইক পাকিস্তানের পাশাপাশি, জঙ্গিদের প্রতিও কঠোর বার্তা। খুনে জঙ্গিদের মারতে ঘাতক তৈরি করে ফেলেছে ভারত।