নিজস্ব প্রতিবেদন – খবরটা পাওয়া মাত্র  নিউজরুম স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। জি নিউজের চিফ এডিটর সুধীর চৌধুরীর পোস্ট পাঠান এক সহকর্মী। প্রায় একইসঙ্গে জি ২৪ ঘণ্টার এডিটোরিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ডেপুটি এডিটর মৌপিয়া নন্দী জানালেন, রোহিত সারদানা নেই। করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। ২৪ এপ্রিল নিজেই টুইট করে জানিয়েছিলেন সেখবর। সপ্তাহখানেক ধরে ছিলেন ICU তে। হঠাৎই অবস্থার অবনতি হয়। শুক্রবার হার্ট অ্যাটাক আর সবশেষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রোহিত আমাদের প্রাক্তন সহকর্মী। জি নিউজের ‘তাল ঠোক কে’ শো-কে জনপ্রিয় করেছিলেন রোহিত। ২০১৭ সালে জি নিউজ ছেড়ে যুক্ত হন  ‘আজ তক’ -এ। শুরু হয় নতুন শো ‘দঙ্গল’। মনে আছে, রোহিত যেদিন ‘আজ তক’-এ যান, সেই সময়েই শুরু হয়েছে সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘পদ্মাবত’ বিতর্ক। পরিচালক মাত্র দুজন সাংবাদিককে ছবিটি দেখতে আমন্ত্রণ জানান। গোটা দেশ অপেক্ষা করে আছে কখন তাঁরা এসে জানবেন, কী আছে ছবিতে? সেই সময়ে টানটান উত্তেজনায় রোহিত সারদানা আর অঞ্জনা ওম কাশ্যপের মধ্যে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে জোর টক্কর, প্রায় ‘দঙ্গল’ আর কি! এরকম অজস্র শোয়ের প্রসঙ্গ তুলে আনা যায়, যার কারণে রোহিতের একটা নিজস্ব ফ্যান বেস তৈরি হয়েছিল।


আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নাগরিকদের কণ্ঠরোধ অনুচিত, জানাল সুপ্রিম কোর্ট


প্রাণচঞ্চল, কথা বলতে ভালোবাসা উজ্জ্বল সাংবাদিক, প্রাক্তন সহকর্মী নেই। গোটা দেশ শোকে মূহ্যমান। একের পর এক রাজনীতিবিদ, তারকাদের টুইট। কিন্তু অন্তঃসলিলার মত ধিকি ধিকি জ্বলছে এক বৃহত্তর প্রশ্ন। ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের মধ্যেই পড়েন সাংবাদিকেরা। রোজ খবরের জন্য পড়ে থাকেন রাস্তায়-ঘাটে, হাসপাতালে-শ্মশানে, বিমানবন্দরে........কোথায় নয়?  সেই সাংবাদিকদের টিকাকরণের জন্য কী ব্যবস্থা?  রাত পোহালেই রাজ্যে ভোটগণনা, তার আগে গণনাকেন্দ্রের ডিউটিতে থাকা সাংবাদিক-চিত্রসাংবাদিকদের বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা। আজ পরীক্ষা, আজই রেজাল্ট। কিন্তু জীবন বাজি রেখে যাঁরা রাস্তায় ঘাটে নেমে খবর তুলে আনেন, তাঁদের সুরক্ষার দাবি উঠতে শুরু করেছে। এ দাবি গোটা দেশে আছড়ে পড়া খুব জরুরি।


দিল্লি এইমসে কর্মরত এক চিকিৎসক বলছিলেন, সাংবাদিকদের নিজেদেরও টিকা নেওয়াতে গাফিলতি দেখেছেন তিনি। টিকা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই নাকি অপেক্ষা করে আছেন ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার জন্য। তিনি বলছিলেন, ‘সাংবাদিকদের কাছে এত তথ্য য়ে তাঁরা নিজেরাই প্রায় চিকিৎসকের মত ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাঁদের আসলে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভাবা দরকার।’


রোহিত সারদানার মৃত্যু এমন অনেক প্রশ্নকেই উস্কে দিয়ে গেল। করোনা কভারেজে গোটা দেশে সাংবাদিক মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ১৫০ ছুঁইছুঁই। সাংবাদিকরা কি সত্যিই ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারের মর্যাদা পান? তাঁদের টিকাকরণের ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নটা উঠিয়ে দিল রোহিতের অকস্মাৎ চলে যাওয়া।